জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আপনার কাকা,ফুফু আপনার বাবার নিজ ভাই বোন।
তাই তারা ভাই বোন হওয়ার কারনে আপনার বাবা মারা গেলে সম্পত্তির অংশ পাবে।
তাদের কেহ যদি আপনার বাবার আগে মারা যায়,তাহলে আপনার বাবাও তাদের সম্পত্তির অংশ পাবে।
শরীয়তের বিধান হলো ব্যক্তি জীবিত এবং সুস্থ্য থাকা অবস্থায় তার মালিকানাধীন সম্পদ যাকে ইচ্ছে দান করতে পারে। যেখানে ইচ্ছে খরচ করতে পারে। এতে তার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
ব্যক্তি জীবিত থাকা অবস্থায় তার অর্জিত সম্পদের একক মালিকানা তার হাতেই থাকে। তাতে যাচ্ছেতাই হস্তক্ষেপের অধিকার তার রয়েছে। এতে কেউ হক দাবী করার অধিকার রাখে না। হ্যা, মৃত্যুর পরের কথা ভিন্ন। তখন শরয়ী নীতিমালা অনুপাতে সম্পদ বন্টন করতে হয়।
আরো জানুনঃ
★সুতরাং আপনারা বাবা বেঁচে থাকাকালীন যদি তার সমস্ত সম্পত্তি ভাগ করে দিয়ে যায়,তাহলে আপনার কাকা ফুফুদেরকে কিছু সম্পত্ত দিয়ে আপনাদের মাঝে অবশিষ্ট সম্পত্তি সমান করে ভাগ করে দিয়ে যেতে পারে,শরয়ী কোনো কারনবশতঃ কম বেশিও করে দিতে পারে।
,
তবে আপনার বাবা যদি এখন আপনার কাকা,ফুফুদের কিছু সম্পত্তি দেয়,তাহলে আপনার বাবা মারা যাওয়ার পর তারা পুনরায় শরয়ী নীতি হিসেবে আপনার বাবার সম্পত্তি পাবে।
এটা তাদের অধিকার।
হ্যাঁ যদি আপনার বাবা মারা যাওয়ার পর তারা সম্পত্তি আর নিতে না চায়,তাহা ভিন্ন কথা।
,
আর যদি আপনার বাবা মারা যাওয়ার আগে কোনো সম্পত্তি ভাগ না করে দেয়,বা এখন আপনার কাকা ফুফুদের কিছু দেয়,আপনারা বাবা মারা যাওয়ার পর মিরাছ বন্টনের সময় তারা যদি আবার সম্পত্তি নিতে চায়,সব ছুরতেই আপনার বাবা মারা যাওয়ার পর শরয়ী নীতিমালা অনুপাতে আপনারা বাবার সমস্ত সম্পত্তির ৩ ভাগের ২ ভাগ সম্পত্তি আপনাদের তিন বোনের মাঝে সমান ভাবে বন্টন করা হবে।
বাকি ১ ভাগ সম্পত্তি আপনার কাকা ফুফু মাঝে বন্টন করা হবে।
ঐ এক ভাগ সম্পত্তিকে ৫ ভাগ করে ফুফু পাবে এক ভাগ,কাকা রা ২+২ ভাগ করে পাবে।
★কারনে শরীয়তের নিয়ম হলো মৃতের ছেলে না থাকলে এবং কন্যা একজন থাকলে পুরো সম্পত্তির অর্ধেক পাবে, আর একাধিক কন্যা থাকলে দুই-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি পাবে।
আর মৃত ব্যাক্তির ভাই বোনেরা আছাবা হিসেবে অবশিষ্ট সম্পত্তি পাবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন :
يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلَادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ فَإِنْ كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ وَإِنْ كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ
অর্থ : আল্লাহ তোমাদের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে আদেশ দিচ্ছেন যে, এক ছেলের অংশ দুই মেয়ের অংশের সমান। কিন্তু যদি কেবল (দুই) বা দুই-এর অধিক মেয়েই থাকে তবে মৃত ব্যক্তি যা কিছু রেখে গেছে, তারা এর দুই-তৃতীয়াংশ পাবে। আর যদি শুধু একজন মেয়ে থাকে তবে সে অর্ধেক পাবে। (সূরা নিসা ৪ : ১১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن جابر رضي الله عنه، قال : جاءت امرأة سعد بن الربيع إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم بابنتيها من سعد، فقالت : يا رسول الله! هاتان ابنتا سعد بن الربيع قتل أبوهما معك في أحد شهيدا، وإن عمها أخذ مالهما. فلم يدع لهما مالا. ولا ينكحان إلا ولهما مال. قال : فقال : يقضي الله في ذلك، قال : فنزلت آية الميراث. فأرسل رسول الله صلى الله عليه وسلم إلى عمهما، فقال : أعط ابنتي سعد الثلثين وأمهما الثمن، وما بقي فهو لك.
অর্থ : জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাআদ ইবনে রবী রা. এর দুই মেয়েকে নিয়ে তার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হন এবং বলেন, আল্লাহর রাসূল! এ দু’জন সাআদ ইবনে রবীয়ের মেয়ে। তাদের পিতা আপনার সাথে উহুদ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেছেন। তাদের চাচা তাদের সকল সম্পদ নিয়ে গেছে। তাদেরকে কিছুই দেয়নি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তাআলা এব্যাপারে কোনো সমাধান অবতীর্ণ করবেন। অতপর মীরাসের আয়াত অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের চাচাকে ডেকে পাঠান এবং তাকে বলেন, সাআদের দুই মেয়েকে (সম্পদের) দুই-তৃতীয়াংশ, এবং তার স্ত্রীকে এক অষ্টমাংশ দিয়ে দাও। এরপর যা থাকবে তা তোমার।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৭৯৮; সুনানে আবু দাউদ ২৮৮৩; জামে তিরমিযী ২০৯২; মুসতাদরাকে হাকিম ৮০২৪; শরহু মাআনিল আছার ২/২৯৫; সুনানে ইবনে মাজা ২৭২০; মুসনাদে আবু ইয়ালা ২০৩৫; আসসুনানুল কুবরা, বাইহাকী ৬/২১৬; সুনানে দারাকুতনী ৪/৮
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেয়েদেরকে তাদের নির্ধারিত অংশ দিলেন আর ভাইকেও বঞ্চিত করলেন না। তাকেও আসাবা হিসাবে অবশিষ্ট সম্পত্তি দিলেন।