যে গুনাহর জন্য পার্থিব জীবনে হদ বা শাস্তি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, যেমন,নিরপরাধ মানুষ হত্যা, ব্যভিচার, চুরি ইত্যাদি। কিংবা যে পাপের জন্য পরকালে জাহান্নাম বা আল্লাহর ক্রোধ কিংবা অভিসম্পাতের কারণ বলে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে, যেমন,সুদ খাওয়া, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া ইত্যাদি। এগুলো কবিরা গুনাহ।
আর যেসব পাপের ব্যাপারে শরীয়তে কোনো শাস্তি, আল্লাহর ক্রোধ বা অভিশাপের কথা বলা হয়নি; বরং শুধুই শরীয়তে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সেসব হলো সগিরা গুনাহ।
তবে সেসব গুনাহও কবিরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত হবে, যার অনিষ্ট ও পরিণতি কোনো কবিরা গুনাহর অনুরূপ কিংবা তার চেয়েও অধিক।
আবার যেসব ছোট গুনাহ নির্ভয়ে করা হয় কিংবা নিয়মিতভাবে করা হয়, সেগুলোও কবিরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত হবে।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«إِنْ تَجْتَنِبُوْا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ، وَنُدْخِلْكُمْ مُّدْخَلًا كَرِيْمًا»
‘‘তোমরা যদি সকল মহাপাপ থেকে বিরত থাকো যা হতে তোমাদেরকে (কঠিনভাবে) বারণ করা হয়েছে তাহলে আমি তোমাদের সকল ছোট পাপ ক্ষমা করে দেবো এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবো খুব সম্মানজনক স্থানে’’। (নিসা’ : ৩১)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
اِجْتَنِبُوْا السَّبْعَ الْـمُوْبِقَاتِ، قَالُوْا: يَا رَسُوْلَ اللهِ! وَمَا هُنَّ؟ قَالَ: الشِّرْكُ بِاللهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِيْ حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْـحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيْمِ، وَالتَّوَلِّيْ يَوْمَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ الْـمُحْصَنَاتِ الْـمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلَاتِ.
‘‘তোমরা বিধ্বংসী সাতটি গুনাহ্ থেকে বিরত থাকো। সাহাবারা বললেন: হে আলাহ্’র রাসূল! ওগুলো কি? তিনি বলেন: আলাহ্ তা‘আলার সাথে কাউকে অংশীদার করা, যাদু আদান-প্রদান, অবৈধভাবে কাউকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, ইয়াতীম-অনাথের সম্পদ ভক্ষণ, সম্মুখযুদ্ধ থেকে পলায়ন এবং সতী-সাধ্বী মু’মিন মহিলাদের ব্যাপারে কুৎসা রটানো’’। (বুখারী ২৭৬৬, ৬৮৫৭; মুসলিম ৮৯)
কবিরা গোনাহের কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা যায় না। কারণ কোনো হাদিসে তিন, কোনো হাদিসে সাত, কোনো হাদিসে ১০, কোনো হাদিসে ১৫, কোনো হাদিসে ৭০-এর উল্লেখ আছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) বলেছেন, ‘কবিরা গোনাহ প্রায় ৭০টি। অনুসন্ধানী আলেমগণ তালাশ করে ৭০টি অথবা এর চেয়ে বেশি কিছু পেয়েছেন। অনেকে ১৪১টি কবিরা গোনাহের কথা উল্লেখ করেছেন।
নিম্নে কুরআন ও হাদিস থেকে প্রাপ্ত ও চয়নকৃত কবিরা গোনাহগুলো উল্লেখ করা হলো :
(১) শিরক অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা বা তাঁর গুণাবলিতে কাউকে অংশীদার মনে করা। (সূরা লুকমান : আয়াত-১৩, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৮৮)।
(২) কুফর অর্থাৎ দ্বীনের আবশ্যকীয় সুস্পষ্ট বিষয়াবলি থেকে কোনো একটি অস্বীকার করা। কুফর ও শিরক অবস্থায় কারো মরণ হলে সে চির জাহান্নামি হবে। পরকালীন জীবনে মাফ বা শাস্তি হতে অব্যাহতি লাভের কোনো উপায় থাকবে না। (সূরা আনফাল : আয়াত-৫৫ : সূরা নিসা : আয়াত-৫৬, শারহুল মাকাসিদ : খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৫৬)।
(৩) তাকদির অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা। (সহিহ বুখারী: খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৮৮)।
(৪) বিনাবিচারে বা অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা। (সূরা নিসা : আয়াত-৯৩, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা -৩৮৮)।
(৫) যিনা বা ব্যভিচার করা। (সূরা আল ইসরা : আয়াত-৩৬, সহিহ বুখারী: খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৮৮)।
(৬) জাদু করা। (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত-১০২, সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৫৮)।
(৭) জেনে, বুঝে-শুনে, অকারণে ফরজ নামাজ ছেড়ে দেয়া। (সূরা মারয়াম : আয়াত-৫৯, সূরা মুদ্দাস্সির : আয়াত-৪২-৪৩, জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৫৪৬)।
(৮) ফরজ যাকাত আদায় না করা। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত-১৭, সূরা তাওবাহ : আয়াত-৩৪)।
(৯) বিনা ওজরে রমজান মাসের রোজা না রাখা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৮৫)।
(১০) ইসলামী শরিয়তে গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া রমজানে রোজা রাখার পর ভেঙে ফেলা। (জামে তিরমিজি : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-২৭২)।
(১১) হজ ফরজ হওয়ার পরও আদায় না করা। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত-৯৭, জামে তিরমিজি : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-২৮৮)।
(১২) আত্মহত্যা করা। (সূরা নিসা : আয়াত-২৯-৩০, সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৬০)।
(১৩) সন্তান হত্যা করা। গর্ভস্থ শিশুতে রূহ আসার পর তা বিনষ্ট করে দেয়া সন্তান হত্যার শামিল। (সূরা আনয়াম : আয়াত-১৫১, সূরা আল ইসরা : আয়াত-৩১)।
(১৪) পিতা-মাতার আবাধ্য হওয়া। জায়েজ ও ওয়াজিব বিষয়ে পিতা-মাতার আনুগত্য ফরজ। নাজায়েজ ও হারাম কাজে তাদের নির্দেশ পালন করা শরিয়তে বৈধ নয়। (সূরা আল ইসরা : আয়াত-২৩-২৪, জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৫৪)।
(১৫) মাহরাম ও নিকটাত্মীয়দের সাথে আত্মীয়তা ও সম্পর্ক ছেদন করা। (সূরা মুহাম্মাদ : আয়াত-২২, সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৮৫)।
(১৬) মিথ্যা কথা বলা। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত-৬১, সূরা গাফির/মুমিন আয়াত-২৮; জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৬১)।
(১৭) মিথ্যা শপথ করা। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত-৭৭, সহিহ বুখারী: খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৯৮৭)।
(১৮) মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। (সূরা আল হাজ্জ : আয়াত-২, সূরা আল ফুরকান : আয়াত-৭২, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৬২)।
(১৯) সমমৈথুন করা বা পুরুষের সাথে যৌনক্রিয়া সম্পন্ন করা। (সূরা হুদ : আয়াত-৮২-৮৩, সূরা আশ শোয়ারা : আয়াত-১৬৫-১৬৬, জামে তিরমিজি : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৫০, ৪০২)।
(২০) সুদ খাওয়া, সুদ গ্র্রহণ করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২৭৫, সূরা আলে ইমরান : আয়াত-১৩, সুনানু ইবনি মাজাহ, পৃষ্ঠা-১৬৪)।
(২১) সুদ প্রদান করা ।
(২২) সুদি কারবার করা।
(২৩) সুদি কারবার ও লেনদেনে সাক্ষ্য দেয়া। (জামে তিরমিজি : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৬, সুনানু ইবনি মাজাহ : পৃষ্ঠা-১৬৫)।
(২৪) অন্যায়ভাবে এতিমের মাল ভক্ষণ করা। (সূরা নিসা : আয়াত-১০, সূরা আল ইসরা : আয়াত-৩৪, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৮৮)।
(২৫) যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা। (সূরা আনফাল : আয়াত-১৬, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৮৮)।
(২৬) আল্লাহ তায়ালা বা রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর ওপর মিথ্যা আরোপ করা। (জামে তিরমিজি : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৫৫১)।
(২৭) কারো ওপর জুলুম বা অত্যাচার-অবিচার করা। (সূরা ইবরাহিম : আয়াত-৪২, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৩১)।
(২৮) কাউকে ধোঁকা দেয়া, ফাঁকি দেয়া, প্রতারণা করা। (সূরা ফাতির : আয়াত-৪৩, সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৮৫)।
(২৯) অহঙ্কার করা। নিজেকে বড় মনে করে অন্যকে হেয় জ্ঞান করা। (সূরা নাহল : আয়াত-২৩, সুনানু ইবনি মাজাহ, পৃষ্ঠা-৩০৮)।
(৩০) কোনো সতী-স্বাধ্বী নারীর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা। (সূরা নূর : আয়াত-৪, ২৩-২৪, সহিহ মুসলিম : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৩২)।
(৩১) নীতি বহির্ভূতভাবে গণিমতের সম্পদ ব্যবহার করা, অর্থাৎ গণিমতের সম্পদের খেয়ানত করা। (সূরা আনফাল : আয়াত-৫৮, সহিহ বুখারী : খন্ড-১ পৃষ্ঠা-৪৩২)।
(৩২) ছিনতাই করা। (মিশকাতুল মাসাবিহ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৭১)।
(৩৩) হিংসা করা। (সূরা নিসা : আয়াত-৫৪, সুনানু ইবনি মাজাহ : পৃষ্ঠা-৩১৩)।
(৩৪) বিদ্বেষ পোষণ করা। (মিশকাতুল মাসাবিহ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪২৭)।
(৩৫) পার্থিব স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে, দুনিয়া হাসিলের উদ্দেশ্যে দ্বীনি ইলম শিক্ষাগ্রহণ ও শিক্ষাদান করা। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত-১৮৭, সুনানুু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৬০)।
(৩৬) ইলম অনুযায়ী আমল না করা। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪১২)।
(৩৭) প্রয়োজনের সময় ইলম গোপন করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-৫৯)।
(৩৮) মিথ্যা হাদিস রচনা করা, জাল হাদিস জানার পরও তা বর্ণনা করা এবং শ্রোতাদের সতর্ক না করা। (জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৫৫১)।
(৩৯) অঙ্গীকার করে তা ভঙ্গ করা।
(৪০) আমানতের খেয়ানত করা।
(৪১) চুক্তি পালন না করা। (সূরা আল ইসরা : আয়াত-৩৪, সূরা আল মায়িদাহ : আয়াত-১, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১০, ১৫)।
(৪২) অত্যাচারী ও ফাসিক ব্যক্তিকে ভালো মনে করা এবং সৎ ব্যক্তিদের সাথে বিদ্বেষ ভাব রাখা। (মুসনাদে আহমাদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৪৫)।
(৪৩) ওলী-আল্লাহদেরকে কষ্ট দেয়া ও তাঁদের সাথে শত্রæতাভাব পোষণ করা। (সূরা আল আহজাব : আয়াত-৫৮, সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৯৬৩)।
(৪৪) কাউকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মোকদ্দমায় জড়ানো, ফাঁসানো। (সূরা ফুরকান : আয়াত-৭২, সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১০৬৫)।
(৪৫) মদ্যপান করা। (সূরা আল মায়িদাহ : আয়াত-৯১, সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৬৮)।
(৪৬) জুয়া খেলা। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৪০)।
(৪৭) হারাম বা নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে সম্পদ উপার্জন করা। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৪০)।
(৪৮) হারাম মাল নিজে খাওয়া ও অন্যকে খাওয়ানো। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৮৮, আল মুজামুস সগির লিত তিবরানী : খন্ড-১০, পৃষ্ঠা-২৯১)।
(৪৯) ডাকাতি করা। (সূরা মায়িদাহ : আয়াত-৩৩, সুনানু দারি কুতনি : খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-২১৪)।
(৫০) বিচারক জেনে বুঝে, প্রভাবিত হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত দেয়া, ভুল রায় দেয়া। (সূরা মায়িদাহ : আয়াত-৪৭-৪৮-৪৯, মুস্তাদরাকে হাকেম : খন্ড-৭, পৃষ্ঠা-২৫০)।
(৫১) অস্ত্রবলে লোকদের নিকট থেকে সম্পদে ভাগ বসানো, চাঁদাবাজি করা, অন্যায়ভাবে কর, ট্যাক্স আদায় করা। (মুস্তাদরাকে হাকেম : খন্ড-৭, পৃষ্ঠা-২৫০)।
(৫২) পুরুষের জন্য মহিলার রূপ ও আকার ধারণ করা ও মহিলাদের জন্য পুরুষের রূপ ধারণ করা। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২১২)।
(৫৩) দয়ূস হওয়া। অর্থাৎ নির্লজ্জ, ব্যক্তিত্বহীন, অশালীন আচরণ অবলম্বন করা। (সুনানু নাসাঈ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৫৮)।
(৫৪) প্রস্রাবের ফোটা হতে দেহ ও পরিধেয় বসন রক্ষা না করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৫)।
(৫৫) রিয়া করা। অর্থাৎ লোক প্রদর্শনীর নিমিত্তে নেক আমল করা। (সূরা নিসা : আয়াত ১৪২, সহিহ মুসলিম : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৪০)।
(৫৬) স্বর্ণ-রৌপ্যের বাসনে পানাহার করা।
(৫৭) পুরুষের জন্য স্বর্ণালঙ্কার ব্যবহার করা।
(৫৮) পুরুষের জন্য অকৃত্রিম ও খাঁটি রেশমের কাপড় ব্যবহার করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৬৮)।
(৫৯) কুরআনুল কারিম আংশিক বা পরিপূর্ণ মুখস্ত করে বিস্মৃত হওয়া, ভুলে যাওয়া। (সুনানে আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২১৭)।
(৬০) সতর (ইসলামী-শরিয়ত মোতাবেক আবরণযোগ্য স্থান) না ঢাকা। প্রকাশ থাকে যে, পুরুষের জন্য সতর হলো দেহের নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ। আর মহিলাদের জন্য সতর হলো হাতের কব্জি, পায়ের পাতা ও মুখমন্ডল ব্যতীত সম্পূর্ণ দেহ। তবে মহিলাদের মুখমন্ডল সতর হিসেবে নয়, বরং হিজাব হিসেবে গায়রে মাহরাম পুরুষের সামনে ঢেকে রাখতে হবে। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২০১; সুনানু ইবনি মাজাহ : পৃষ্ঠা-২৯)।
(৬১) কোনো মহিলার জন্য স্বামী বা মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর করা, ভ্রমণ করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৪৭)।
(৬২) বিনা ওজরে জুমার পরিবর্তে জোহর নামাজ আদায় করা। (সুনানু ইবনি মাজাহ)।
(৬৩) মহিলার জন্য বৈধ বিষয়ে স্বামীর অবাধ্যাচরণ করা। (সূরা নিসা : আয়াত-৩৭; সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৭৮২)।
(৬৪) বিনা ওজরে বা শরিয়তের গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া ছবি তোলা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৮০)।
(৬৫) এত পাতলা পোশাক পরিধান করা, যাতে শরীরের রঙ অনুধাবন করা যায়। অথবা এত টাইট বা আঁটসাঁট পোশাক পরা, যার মাধ্যমে দেহের অবস্থান বোঝা যায়। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২০৫)।
(৬৬) পুরুষের জন্য লুঙ্গি-পায়জামা ইত্যাদি পায়ের টাখনুর গিরার নিচে পর্যন্ত দাম্ভিকতাসহ ঝুলিয়ে পরা। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৭১; সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৮০)।
(৬৭) কারো উপকার করে খোটা দেয়া। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২৬৪; সহিহ মুসলিম : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৭১)।
(৬৮) মানুষের গোপন বিষয় জানতে চেষ্টা করা, খুঁৎ অন্বেষণ করা। (সূরা আল হুজুরাত : আয়াত-১২; সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১০৪২)।
(৬৯) চোগলখুরি করা। (সূরা আল কালাম : আয়াত-১১, সূরা হুমাযাহ : আয়াত-০১)।
(৭০) কারো ওপর মিথ্যা আপবাদ আরোপ করা। (সূরা আল আহজাব : আয়াত-৫৮, সূরা শোরা : আয়াত-৪২, মুসনাদে আহমাদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৬২)।
(৭১) গিবত করা। (সূরা আল হুজুরাত : আয়াত-১২; সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩১৯)।
(৭২) গণকের কথায় বিশ্বাস করা ও তাকে সত্যায়ন করা। (সূরা আল ইসরা : আয়াত-৩৬, সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৮৯)।
(৭৩) বিপদ-আপদের সময় অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করা, ধৈর্যহারা হওয়া, বিলাপ করা, দুঃখ প্রকাশ করতে গিয়ে জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলা, বদদোয়া করা ইত্যাদি। (সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৭২, জামে তিরমিজি : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩২১)।
(৭৪) প্রতিবেশীর হক আদায় না করা, তাকে কষ্ট দেয়া, জ্বালাতন করা। (সূরা নিসা : আয়াত-৩৬, সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৮৯)।
(৭৫) মুসলমানকে কষ্ট দেয়া। (সূরা আল আহজাব : আয়াত-৫৮, সূরা আল হুজুরাত, আয়াত-১১, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৬৯)।
(৭৬) নিজের বংশ পরিচয় অথবা গোত্র পরিচয় পরিবর্তন করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১০০১)।
(৭৭) ওজনে বা মাপে কম দেয়া। (সূরা মুতাফফিফিন, আয়াত-১-৪, সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৬৯)।
(৭৮) আল্লাহর ব্যাপারে নির্ভীক ও ভয়হীন হওয়া। অর্থাৎ আল্লাহর শাস্তি, কর্মপ্রবাহ ও তদবির হতে ভয়শূন্য হওয়া। (সূরা আল আনয়াম : আয়াত-৪৪, জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৮১)।
(৭৯) বিনা ওজরে জামাতের নামাজ তরফ করা, জামাতের প্রতি অশ্রদ্ধা পোষণ করা। (সুনানু ইবনি মাজাহ : পৃষ্ঠা-৫৭)।
(৮০) উত্তরাধিকারীদের কাউকে বঞ্চিত করতে, অথবা কারো ক্ষতি সাধন করতে ওসিয়ত করা, পরামর্শ দেয়া। (সূরা নিসা : আয়াত-১২, জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৭৬)।
(৮১) বোনদেরকে পিতার সম্পদ থেকে উত্তরাধিকার হিসেবে যথাযথ প্রাপ্য অংশ না দেয়া। (আল কাবাইর : পৃষ্ঠা-২৬৮)।
(৮২) সাহবায়ে কেরাম (রা:) বা পূর্ববর্তী ওলামায়ে দ্বীনকে ভালো-মন্দ বলা বা গালমন্দ করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৯৬৩, সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৭০, জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৭০৬)।
(৮৩) দুর্বল, অসহায় ব্যক্তি ও জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিস্তার করতে বাড়াবাড়ি করা। (সূরা নিসা : আয়াত-৩৬, সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৫১)।
(৮৪) শরিয়তের বিধানের ওপর খেয়াল খুশিমতো মন্তব্য করা এবং তা বান্দাহর জন্য অকল্যাণকর ও অনুত্তম বিবেচনা করা। (সূরা জুখরুফ : আয়াত-৫৮, জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৬৩২, মাজমাউজ যাওয়ায়িদ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৮৬)।
(৮৫) সাধারণ পানি হতে বা সরকারি পানি হতে নিজের জমি সিঞ্চনের জন্য নিজের প্রাপ্য অংশ হতে বেশি পানি নেয়া। (সূরা আনফাল : আয়াত-২৭, সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-২২৩)।
(৮৬) কোনো মুসলমানের গোপন বিষয় তাকে লজ্জা দেয়ার জন্য প্রকাশ করে দেয়া। (সুনানু ইবনি মাজাহ : পৃষ্ঠা-১৮৩)।
(৮৭) দাড়ি মুÐানো বা এক মুষ্ঠি পরিমাণ হতে ছোট করে ছাঁটা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৭৫; ফাতহুল কাদির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৭৭)।
(৮৮) কোনো ব্যক্তির কবরে চেরাগ বা মোমবাতি জ্বালানো। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১০৫)।
(৮৯) দান করে দানগ্রহীতাকে খোটা দেয়া। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২৬৪)।
(৯০) ভূমি হতে উৎপন্ন ফসল বা দ্রব্যের ওশর বা নিসফুল ওশর (ওশরের অর্ধাংশ) আদায় না করা। (সূরা আল আনয়াম : আয়াত-২৬৪)।
(৯১) যে ব্যক্তির নিকট দৈনিক জীবিকার প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী আছে, তার জন্য অন্য কারো কাছে যাচনা করা, ভিক্ষা চাওয়া। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-২৩৬)।
(৯২) ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা ও ঈদুল আজহার পরবর্তী তিন দিন রোজা রাখা। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৬০; মুসনাদে আহমাদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৫১৩)
(৯৩) হজ অথবা ওমরার ইহরামের অবস্থায় স্থলভাগের কোনো প্রাণী হত্যা করা অথবা শিকার করা। (সূরা আল মায়িদাহ : আয়াত-৯৫)
(৯৪) ওয়াজিব হওয়া সত্তে¡ও কোরবানি না করা। (সুনানু বায়হাকি : খন্ড-৯, পৃষ্ঠা-২৬০)।
(৯৫) নেশাজাত দ্রব্য সেবন করা। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৬৩) আয যাওয়াযির : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩০৫) ।
(৯৬) আমালী অর্থাৎ কর্মভিত্তিক অথবা ইতিকাদী অর্থাৎ বিশ্বাসভিত্তিক বিদআতের আবিষ্কার করা অথবা আকিষ্কৃত বিদআতে জড়িত হওয়া। (রাদ্দুল মুহতার : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৫৬০)।
(৯৭) ঋণ হিসেবে গৃহীত কোনো বস্তু বা অর্থ নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর তা আদায় করতে ক্ষমতা থাকা সত্বে বিলম্ব করা বা অযথা টালবাহানা করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩২৩)।
(৯৮) স্বেচ্ছায় কোনো অন্ধ ব্যক্তিকে ভুল পথে তুলে দেয়া অথবা কোনো অজ্ঞ ব্যক্তিকে জেনেশুনে ভুল পথ দেখিয়ে দেয়া। (আয যাওয়াযির : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৬৮)।
(৯৯) সাধারণ জনগণের চলাচলের পথ দখল করে রাখা যাতে পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা বা বিঘœ সৃষ্টি হয়। (আয যাওয়াযির : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৬৮)।
(১০০) আমানত হিসেবে রাখা বস্তু মালিকের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা। (সূরা নিসা : আয়াত-৫৮, মুসনাদে আহমাদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৩৫)।
(১০১) বন্ধক হিসেবে রক্ষিত বস্তু ব্যবহার করা। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-২২৩)
(১০২) পথে পড়ে থাকা বস্তু ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের নিয়তে কুড়িয়ে নেয়া। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৮৮)।
(১০৩) প্রয়োজন ও সক্ষমতা থাকা সত্তে¡ও বিয়ে না করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৭৫৭-৭৫৮)।
(১০৪) আজনবি, অপরিচিত, গায়রে মাহরাম অর্থাৎ যাদের সাথে বিয়ে বৈধ এমন মহিলার সাথে নির্জনতায় বসা বা আলাপচারিতা করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৭৮৭)।
(১০৫) কাউকে অশোভন ও কদর্য উপাধিতে আহবান করে ডাকা। (সূরা আল হুজুরাত : আয়াত-১১)।
(১০৬) কোনো মুসলমানকে বিদ্রুপ করা, অথবা তার ইজ্জতহানি ঘটানো। (সূরা আল হুজুরাত : আয়াত-১১)।
(১০৭) কারো বাগদানের পর বিয়ের পয়গাম দেয়া। (জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৭৪)।
(১০৮) ক্রয়-বিক্রয়কালে একজনে দাম করার সময় অন্যজনের দাম করা। (জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৭৪)।
(১০৯) রক্ত সম্পর্কের বৈবাহিক সম্পর্কের এবং দুগ্ধপান সম্পর্কের কোনো মুহাররামা মহিলাকে বিয়ে করা। (সূরা নিসা : আয়াত-২৩)।
(১১০) তিন তালাক দেয়ার পর হাল্লালা অথবা হিলা পদ্ধতি অবলম্বন ছাড়া পূর্ব স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৭৯১)।
(১১১) বিবাহকালে মোহর নির্ধারণের সময় মোহর আদায় করার নিয়ত না রাখা। (আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪০)।
(১১২) ইসরাফ, অর্থাৎ অপব্যয় করা, অপচয় করা। (সূরা আরাফ : আয়াত-৩১)।
(১১৩) কারো মৌখিক বা মৌন সম্মতি ছাড়া তার কোনো বস্তু বা সম্পদ ব্যবহার করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৮৮)।
(১১৪) একাধিক স্ত্রী থাকা অবস্থায় তাদের মাঝে সমতা রক্ষা না করা। (জামে তিরমিজি : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৪৫)।
(১১৫) দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন না করা। (মুসনাদে আহমাদ : খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-২৮৮)।
(১১৬) শরঈ ওজর অর্থাৎ শরিয়ত সমর্থিত কোনো ওজর ছাড়া কোনো মুসলমানের সাথে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৮৫; সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৩১)।
(১১৭) বেপর্দা অবস্থায় মহিলার ঘর থেকে বের হওয়া। (সুনানু নাসাঈ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮২)।
(১১৮) শরিয়ত সমর্থিত প্রয়োজন ছাড়া স্বামীর নিকট তালাক প্রার্থণা করা। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩২১)।
(১১৯) তালাক ইত্যাদির ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার ব্যাপারে মহিলাদের ভুল তথ্য বা বিবৃতি প্রদান করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২২৮)।
(১২০) ইদ্দত পালনকারী মহিলা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়া। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২২৮)।
(১২১) ইদ্দত পালনকারী মহিলার ইদ্দতের মধ্যে সাজগোজ করা থেকে বিরত না থাকা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২৩৪)।
(১২২) অধীনস্থ ও পোষ্যদের জন্য সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও প্রয়োজনীয় জীবনযাত্রার ব্যয় না করা। (সহিহ বুখারী : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৯০, ১৯২)।
(১২৩) গোনাহ ও হারাম কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করা। (সূরা আল মায়িদাহ : আয়াত-২; আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৩৩)।
(১২৪) যোগ্য ব্যক্তিকে যথাযথ পদ থেকে অপসারণ করে অযোগ্য ব্যক্তিকে তদস্থলে নিয়োগ করা। (আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৩৩)।
(১২৫) কোনো মুসলমানকে ‘আল্লাহর দুশমন’ ‘কাফির’ বা এ জাতীয় কোনো শব্দে গালি দেয়া। (আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৭৩)।
(১২৬) শরিয়তের নির্ধারিত দন্ডবিধিতে কারো জন্য সুপারিশ করা। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৫০)।
(১২৭) ছেলে সন্তানকে বালেগ হওয়ার পরও খাতনা না করানো। (মিশকাতুল মাসাবিহ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৪)।
(১২৮) শরিয়তের বিধি মোতাবেক জিহাদ ফরজ হওয়ার পরও জিহাদে গমন না করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৯০, সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৪১; সুনানু ইবনি মাজাহ : খন্ড-১, পৃষ্ঠা-১৯৮)।
(১২৯) আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার অর্থাৎ উত্তম কাজে আদেশ এবং মন্দ কাজে সমর্থ থাকা সত্তে¡ও নিষেধ না করা। (সূরা তাওবাহ : আয়াত-৭১; জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৮৬)।
(১৩০) মুসলমানের সালামের উত্তর না দেয়া। (জামে তিরমিজি : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৫৫৬)।
(১৩১) মহামারী আক্রান্ত এলাকা থেকে পলায়ন করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত ২৪৩; সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৮৫৩)।
(১৩২) মুসলমানদের ব্যক্তিগত বা সামষ্টিক কোনো গোপন বিষয় প্রকাশ করে দেয়া। (সহিহ বুখারী : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৫৬৭, আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৪৯)।
(১৩৩) মান্নত পূর্ণ না করা। (আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৫৭)।
(১৩৪) ঘুষ গ্রহণ করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-১৮৮; আত্তারগিব : খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-১২৫; আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৬৪)।
(১৩৫) ঘুষ দেয়া। তবে বৈধ প্রাপ্য অধিকার আদায় করার জন্য অথবা অন্যের অহেতুক ক্ষতি হতে আত্মরক্ষার জন্য ঘুষ প্রদান ছাড়া বিকল্প পথ না থাকলে অনন্যোপায় ব্যক্তির জন্য ঘুষ দেয়া (বিশেষ পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে) বৈধ। কিন্তু ঘুষ গ্রহণ করা কোনো অবস্থাতেই বৈধ নয় বরং হারাম। (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৪৮; আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৬৩)।
(১৩৬) মানুষকে খুশি করতে আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক কাজ করা (সুনানু আবি দাউদ : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-১৫০; আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৬১)।
(১৩৭) কারো জন্য কোনো ব্যাপারে সুপারিশ করে তার নিকট থেকে উপহার উপঢৌকন গ্রহণ করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২৮৩)।
(১৩৮) শরঈ ওজর ব্যতীত সাক্ষ্য গোপন করা। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত-২৮৩, আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৭৫)।
(১৩৯) ফাসিক, ফাজির ও দুষ্ট ব্যক্তির গর্হিত কাজের সময় তাদের নিকট গমন করা ও তাদের বৈঠকে উপবেশন করা (সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৩০; আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৭৫)।
(১৪০) কারো নিকট অন্যায় ও মিথ্যাভাবে তার কিছু দাবি করা। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৩০; আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩২৫)।
(১৪১) সগিরা গোনাহ বারবার করা। সগিরা গোনাহ বারবার করলে তা সগিরা থাকে না বরং কবিরা হয়ে যায়। আর আল্লাহর দরবারে খালেসভাবে তাওবাহ করলে কবিরা গোনাহও আল্লাহ পাক স্বীয় করুণাভরে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ মুসলিম : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৩০; আয যাওয়াযির : খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৯৯)।
(সংগৃহীত)
আরো জানুনঃ-