আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
187 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ

১. গতকাল আমি আমার স্যারের পড়া করতে  পারিনি। স্যার কে বলেছিলাম পরের দিন নতুন পড়ার সাথে পুরানো পড়াও রেডি করে দেব। কিন্তু তাও টাইম পাইনি। তাই রেডি করতে পারিনি। শুধু নতুন করাটাই রেডি করেছি। আমি যেইটুকু সময় পেয়েছিলাম তখন যদি ওই পুরনো পড়া করতে যেতাম তাহলে নতুন পড়া করার সুযোগ থাকতো না। তাই আমি পুরনো পড়া না পড়ে শুধু নতুন পড়াটাই পড়লাম। এখন এতে কি ওয়াদা ভাঙ্গ করা হলো?? অন্য  স্যারের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে,, আমি কালকে বলেছিলাম পরের দিন সব পড়া রেডি করে দেব কিন্তু পারিনি। এটা কি ওয়াদা ভঙ্গ করা হয়??

২.একইভাবে আমি আম্মুকে বলেছিলাম আমি একটু পরে গোসলে যাব কিন্তু যাইনি। এইটা কি ওয়াদা ভঙ্গ করা হয়??
৩.আমি একবার আম্মুকে বলেছিলাম  দরজা বন্ধ করে আর ঘুমাবো না। কিন্তু পরবর্তীতে আমি ঘরের দরজা বন্ধ করেছিলাম। এইটাকে ওয়াদা ভঙ্গ করা হয়??  আম্মু খুব রাগারাগি করছিল একবার তখন আমি বলেছিলাম  আমি মাগরিবের নফল নামাজ আর পড়বো নানে।  কিন্তু আমি এখন পড়ি। আম্মু তা জানে। এইটা কি ওয়াদা ভঙ্গ করা হয়??মানে ছোটখাটো বিষয় কিওয়াদার অন্তর্ভুক্ত??
৪.ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের রাহে বেলায়েত বইয়ের নামাজের পরের বেশ কিছু জিকির দেওয়া আছে। সেখানে প্রথমে বিশটা মত সহীহ ও হাসান হাদিসে বর্ণিত জিকির দেওয়া আছে। এরপর কিছু যয়িফ ও দুর্বল হাদিসে বর্ণিত জিকির দেওয়া আছে। এখন আমি কি সহিহ ও হাসান হাদিসে বর্ণিত জিকিরগুলোর পাশাপাশি জয়িফ ও দুর্বল হাদিসে বর্ণিত জিকির গুলো করব?? দুর্বল ও জয় হাদিসের উপর আমল করা কি ঠিক??
৫.আজকে আমার প্রাইভেট স্যারের কাছে পরীক্ষা স্যার যখন বলেছে সময় শেষ আর লিখনা তখন আমি একটু লিখেছি ওই ২-৩ মিনিট মত এটা কি গুনা হবে মানে পরীক্ষার হলে যখনই লিখতে মানা করবে তখন কি লিখা যাবে গোপনে না ছাড়াও দেখছে যে আমি লিখছি
৬.আমার অনেক পরিচিত পাড়া-প্রতিবেশী,,, আত্মীয় স্বজন আছে যারা হয়তো সঠিক মত সুন্নাহ মেনে চলে না। যেমনঃ নামাজের নিয়ত করে আরবিতে।  নামাজে পাতা ঢাকে না,,  ওজুতে ঘাড়  মাসেহ করে। এখন আমি কি তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে বেড়াবো এইগুলো করতে হয় না? মানে তারা আমার সামনে কখনো এমন করেনি। কিন্তু আমি জানি যে তারা যেহেতু আগেকার মানুষ তাই তাদের পক্ষে এইসব  জানার কথা নয়। এখন আমি জানি আমার আশেপাশে যত প্রতিবেশী আছে,,, তারা কেউই নামাজে নিয়ত ছাড়া শুরু করে না মানে নামাজে হয়তো আরবিতে নিয়ত করে,,, আবার ফরজ গোসল করে না,,ইত্যাদি ইত্যাদি।  এরকম বিষয়গুলো তারা জানেনা।। এখন আমি কি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলবো?? সৎকাজের আদেশ দেওয়া তো আমার দায়িত্ব?? এখন আমার কি করনীয়?? মানে যখন আমার সামনে এগুলো করবে তখন তো আমি বলতেই পারছি। কিন্তু আমার সামনে করছে না। কিন্তু  আমি স্বভাবতই জানি যে তাদের পক্ষে এগুলো জানা সম্ভব নয় কারণ আগেকার মানুষ।
৭.কেউ যদি মাসিকের পর ফরজ গোসল গোসল না করে শুধু গোসল করে ভালো করে। শরীরের সব নাপাকি দূর করে,,, পবিত্রতা অর্জন করে তাহলে কি হবে??
৮.এইভাবে আপনাদের ওয়েবসাইটে একসাথে অনেকগুলো প্রশ্ন করা যাবে? এতে কি কোনো গুনাহ হবে? এতে কি আপনাদের সাথে জুলুম করা হয়?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ওয়াদাকে পূর্ণ করার বিধান কি? ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এবং ওয়াদাকে ভঙ্গ করা  হারাম না মাকরুহ?

সে সম্পর্কে ইমাম নববী রাহ বলেন,
উলামায়ে কেরাম এ কথার উপর একমত যে,যদি কোনো মানুষ কারো সাথে এমন কোনো বিষয়ের ওয়াদা করে যা নিষিদ্ধ নয়,তাহলে তার জন্য উচিৎ হল সেই ওয়াদাকে পূর্ণ করা। ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এ সম্পর্কে অবশ্যই মতপার্থক্য রয়েছে।ইমাম শা'ফেয়ী ও ইমাম আবু হানিফা এবং জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা মুস্তাহাব।যদি সে ওয়াদাকে ভঙ্গ করে ফেলে তাহলে যেন সে উত্তমতাকে পরিত্যাগ করল,এবং শক্ত মাকরুহে তানযিহি সম্ভলিত কাজে লিপ্ত হল।কিন্তু সে আবার গোনাহগার হবে না। অন্যদিকে এক দল উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব। ইমাম আবু বকর ইবনুল আরাবি মালিকি রাহ বলেন,যারা উক্ত মাযহাবের প্রবক্তা তাদের মধ্যে এটা উমর ইবনে আব্দুল আযিয রাহ শীর্ষে রয়েছেন।তিনি আরো বলেন,মালিকি মাযহাবের উলামাগণ তৃতীয় আরেকটি মাযহাবকে বর্ণনা করেছেন। সেটা হল যে,যদি কেউ কাউকে বলে, তুমি বিয়ে করবে বলে ওয়াদা করো তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে।অথবা তুমি ওয়াদা করো আমাকে গালি দেবে না তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে ইত্যাদি বাক্য। তাহলে এমতাবস্থায় ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব হবে।আর যদি স্বাভাবিক ওয়াদা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না।যারা ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব বলেন না তারা বলেন, যে ওয়াদা হলো হেবার সমার্থক। আর জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে হেবা কবজা ব্যতীত পরিপূর্ণ হয় না।তবে ইমাম মালিক রাহ এর মতে ওয়াদা কবজার পূর্বেও ওয়াজিব হয়ে যায়।(আল-আযকার-৩১৭)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/663

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ওয়াদা করার পর ঈমানদারের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য হল, ওয়াদাকে পূর্ণ করা।বিশেষ কোনো জরুরত ব্যতিত ওয়াদাকে ভঙ্গ না করা।
(১) যদি বিশেষ কোনো কারণে পড়া রেডি করতে না পারেন, তাহলে এখানে ওয়াদা ভঙ্গের গোনাগ হবে না।

(২)
যদি বিশেষ কোনো কারণে তৎক্ষণাৎ গোসল করতে না পারেন, তাহলে এখানে ওয়াদা ভঙ্গের গোনাগ হবে না।

(৩)
এখানেও ওয়াদা ভঙ্গের গোনাগ হবে না। ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে পারবেন।

(৪) সহিহ ও হাসান হাদিসে বর্ণিত জিকিরগুলোর পাশাপাশি জয়িফ ও দুর্বল হাদিসে বর্ণিত জিকির গুলো করতে পারবেন।

(৫)২-৩ মিনিট এর মত লিখার কারণে আপনার কোনো গোনাহ হবে না।

(৬) বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলার হেকমতপূর্ণ হবে না।বরং যখনই কাউকে সুযোগসুবিধা মত পাবেন, তাকেই দাওয়াত দিবেন।

(৭)কেউ যদি মাসিকের পর ফরজ গোসল না করে শুধু গোসল করে ভালো করে। শরীরের সব নাপাকি দূর করে,তাহলে এদ্বারা পবিত্রতা অর্জন হবে না।

(৮) একসাথে অনেকগুলো প্রশ্ন না করে বরং একই বিষয় সম্ভলিত সর্বোচ্ছ পাঁচটি প্রশ্ন করাই উত্তম হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...