জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পরিবারের জন্য খরচ করা,মা বাবার ভরনপোণের জন্য খরচ করা উত্তম কাজ।
মা বাবা নিজেদের ভরনপোষণের ক্ষেত্রে অসমর্থ হলে সন্তানদের জন্য তাদের ভরনপোষণের খরচ দেওয়া শুধু শরীয়তেই নয় এটা মানবতার দিক লক্ষ্য করেও জরুরি।
হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মানুষের সর্বোত্তম মুদ্রা সেটি, যা সে তার পরিবারের খরচে ব্যয় করে।’ (মুসলিম : হাদিস ৯৯৪)
অন্য একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার পরিবারে যে খরচ করে তা-ও সদকাস্বরূপ, অর্থাৎ এতেও সে সদকার সওয়াব পাবে।’ (বুখারি : হাদিস ৪০০৬)
মা-বাবা ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি।
★এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম। এখন কথা হলো, যদি তাঁরা উপার্জনের শক্তি রাখে, তাহলেও তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, তাঁদের উপার্জনের শক্তি থাকলেও যদি তাঁদের কাছে চলার মতো নগদ টাকাকড়ি না থাকে, তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে। তাদের সন্তানরা এ কথা বলতে পারবে না যে আপনি তো উপার্জনে সক্ষম, আপনি নিজে উপার্জন করে চলুন। তবে যদি তাঁরা ধনী হন, তথা তাঁদের মালিকানায় নগদ এমন সম্পত্তি থাকে, যা দ্বারা তাঁরা শান্তিতে কালাতিপাত করতে পারেন, তাহলে সন্তানদের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়।
★দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল, তারপর তোমার স্ত্রীর, তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের খরচ তোমার ওপর বর্তাবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)
সন্তান তার উপার্জনকৃত আয় থেকে নিজের, স্ত্রীর ও সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ না থাকলে যদিও মা-বাবাকে ভিন্নভাবে ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়, কিন্তু অভাবগ্রস্ত ও উপার্জনে অক্ষম মা-বাবাকে ছেলে নিজের দারিদ্র্য সত্ত্বেও নিজের সংসারের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে এবং কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণ চালিয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৪৬৫)
সমর্থ থাকা সত্ত্বেও সন্তানরা অভাবগ্রস্ত মা-বাবার খরচ না দিলে গুনাহগার হবে। এ ক্ষেত্রে সন্তানরা স্বেচ্ছায় না দিলে অভাবগ্রস্ত মাতা-পিতা ছেলে-মেয়ের সম্পদ থেকে প্রয়োজন পরিমাণ তাদের অনুমতি ছাড়াও নিতে পারবেন। তবে মা-বাবা বিত্তবান হলে অনুমতি ছাড়া ছেলে-মেয়ের সম্পদ থেকে নেওয়া বৈধ হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৫৬৪)
মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব উপরোক্ত দুই শর্তে সব ছেলে-মেয়ের ওপর ওয়াজিব। এ দায়িত্ব সব সাবালক সামর্থ্যবান ছেলে-মেয়ের ওপর সমভাবে বর্তাবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, তাই কোনো মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে ছেলেদের মতো সমভাবে তার ওপরও মা-বাবার খরচের দায়িত্ব বর্তাবে। কেননা মা-বাবার জীবিত অবস্থায় সন্তানের জন্য খরচ ও উপহারে মেয়েরাও তাদের ভাইদের মতো সমঅধিকারী, তাই মা-বাবার খরচ বহনে তারাও সামর্থ্যের শর্তে তাদের ভাইদের সমদায়িত্বশীল হবে। ছেলে-মেয়ে না থাকলে তারপর সিরিয়াল আসবে নাতি-নাতনিদের। অতএব, তাদের ওপর সমভাবে এ দায়িত্ব বর্তাবে। (ফাতহুল কাদির : ৪/৪১৭)
ইবন মুনযির রহ. বলেন,
أجمع أهل العلم على أن نفقة الوالدين الفقيرين اللذين لا كسب لهما ولا مال واجبة في مال الولد
ওলামায়ে কেরাম এব্যাপারে একমত যে, সন্তান যদি সামর্থ্যবান হয় এবং মা-বাবা যদি গরিব হয় তাহলে তাঁদের জন্য খরচ করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব। (আল মুগনি ১১/৩৭৫)
আর যদি আর পিতামাতা সচ্ছল হয় কিংবা সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান না হয় তাহলে মা-বাবার ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাওয়া। (তাবঈনুল হাকায়েক ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার ২/৬৭৮)
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু বলা হয়েছে যে আপনার বাবা মা টাকার অভাবে না খেয়ে আছে এমন না, তবে টাকা দিলে জায়গা জমি কিনা যাবে এমন একটা চিন্তা""
সুতরাং এহেন পরিস্থিতিতে আপনার জন্য তাদের টাকা পয়সা দেওয়া জরুরি নয়,আপনার ভাইদের জন্যেও শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে জরুরী নয়,ওয়াজিব নয়।
কারন তাদের ভরনপোষণ তারা নিজেরাই করতে পারছে ।
,
এক্ষেত্রে আপনার জন্য চাকুরী করা ঠিক হবেনা।
,
★আপনার উপর বাবা মাকে খরচ দেওয়া ওয়াজিব না হওয়া সত্ত্বেও আপনি যদি চাকুরী করতে চান,তাহলে স্বামীর সন্তুষ্টিচিত্তে অনুমতি সাপেক্ষে এবং
https://ifatwa.info/5112/?show=5112#q5112 লিংকে দেওয়া শর্ত সাপেক্ষে চাকুরী করতে পারেন।