আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
234 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আমি একটি হারাম রিলেশনে আছি। হারাম থেকে বাঁচতে বিয়ে করার জন্য পরিবারকে জানাই। কিন্তু ফ্যামিলি স্ট্যাটাসের কথা বলে ওরা রাজি হয় না। কারন আমার ফ্যামিলি আলহামদুলিল্লাহ যথেষ্ট সচ্ছল, শিক্ষিত, শহরে নিজের বাড়ি আছে, ফ্ল্যাট আছে। আর তারা গ্রামে থাকে, পড়াশোনায় আমার সমান হলেও পড়া শেষ না করেই বড় ছেলে বিধায় সৌদি চলে যেতে হয়েছে। বাবা মাও তেমন শিক্ষিত না। গ্রামে একটা টিনের বাড়ি শুধু। সে এখন সৌদি থাকে বিধায় আস্তে আস্তে বাড়ি হবে, স্বচ্ছলতা আসবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু এটা খুবই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। বলা বাহুল্য, টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি স্ট্রাগল করতে রাজি।
আমার ফ্যামিলি রাজি না হওয়ায় আমি ওর সাথে যোগাযোগ অফ করে দেই। যোগাযোগ হয় নি দীর্ঘ ৫ মাস। কোনো রকম যোগাযোগ করিনি এই পাঁচ মাসে। ভেবেছি ফ্যামিলিকে হ্যাপি করি। আস্তে আস্তে ভুলে গিয়ে মানিয়ে নিতে পারবো। এইদিকে আমার গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ প্রায়। আর কয়েকমাস তাই বাসা থেকে বিয়ে দেখছে। কিন্তু আমি কোনো ভাবেই অন্যকাউকে বিয়ে করবো এটা নিজের মনকে মানাতে পারছি না। কোনো রকম যোগাযোগ ছাড়াও আমি ওকে ভুলতে পারছি না, অন্য কারো সাথে জীবন কাটানোর কথা ভাবতে পারছি না। এইদিকে আমার বাবা মা খুব এক রোখা। ওরা কোনো ভাবেই মানবে না।কয়েকদিন আগে সে দেশে আসে, কোনো রকম যোগাযোগ অথবা কোনো থার্ডপার্টির মাধ্যমে না জেনেই হঠাৎ কি বুঝে যেনো ওর বাংলাদেশের নাম্বারে কল দি। ওয়াল্লাহি, আমি কারো থেকে ওর খবর পেয়ে কল দি নাই। আমি জানি না কেনো দিয়েছি। হঠাৎ করে মনে হলো কল দেই, তাও বাংলাদেশী নাম্বারে যেখানে আমি জানি সে সৌদি। কল ঢুকার কোনো চান্স ছিলো না। কল ঢুকেছে দেখে সাথে সাথে কেটে দি। এরপর সে কল ব্যাক করে, দ্যান আবার কথা হয়। আমি চাচ্ছি না এইভাবে একটা নন মাহরামের সাথে কথা বলতে। কিন্তু যিনা থেকে বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে আর অন্য কাউকে বিয়ে করার কথা আমি ভাবতে পারছি না। সে আবার চলে যাবে এই মাসের শেষের দিকে ইনশাআল্লাহ। আমি চাচ্ছিলাম আমি যদি বাসায় না জানিয়ে বিয়েটা করে রাখি। পরে সুযোগ সুবিধা মতো বাসায় জানাই কিংবা যখন অন্য কাউকে বিয়ের জন্য বাসায় ঘোরতর জোর করবে তখন জানাবো। আমি যদি আমার ফ্যামিলি ব্যতীত বিয়ে করে নেই তাহলে কি বিয়ে জায়েজ হবে? আমার ডিসিশনটা ইসলামের দৃষ্টিতে কতোটুকু যৌক্তিক?
বলে রাখা ভালো, আমার বাবা মা ফ্যামিলি ধার্মিক হলেও পুরোপুরি প্র‍্যাক্টিসিং না, মেয়ের বিয়ের জন্য মেয়ে মতামত, পছন্দ, অপছন্দ এসবের তুলনায় ওরা ফ্যামিলি স্ট্যাটাস, যোগ্যতা এসব বেশি গুরুত্ব দেয়। আমি খুব চিন্তিত কি করবো?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য কোর্ট মেরেজ করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না।মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।উনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন।হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলেটি মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।জানুন-https://www.ifatwa.info/994, কুফু সম্পর্কে জানতে https://www.ifatwa.info/780
চার মাযহাবের অবস্থান দলীল সহ বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1525

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি/আপনারা মাতাপিতাকে বিয়ের জরুরত সম্পর্কে অবগত করুন।তাদেরকে আপনার বিয়ের প্রয়োজনিয়তা নিয়ে অবগত করুন।যদি নিজে আপনি আপনার মা বাবাকে বলতে না পারেন,তাহলে পরিচিতজন বা বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে অবগত করান।

মা বাবাকে বিয়ের জরুরত ও প্রয়োজনিয়তা সম্পর্কে অবগত করার পরও যদি মা বাবা বিয়ের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন,তাহলে আপনি বিয়ে করতে পারবেন।তবে এক্ষেত্রে দ্বীনদারিত্বকে প্রদাণ্য দেয়াই দুনিয়া ও আখেরাতে কামিয়াবি অর্জনের উত্তম মাধ্যম হবে।
হাদীসে বিয়ের জন্য দ্বীনদ্বার মহিলাকে খুজতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।যেমন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী।
কিন্তু তুমি দ্বীনদারীত্বকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/18

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আমরা কখনো মাতাপিতার অগোচরে বিয়ের পরামর্শ দেবো না। বরং সর্বদাই বলে থাকি যে, মাতাপিতাকে সাথে নিয়েই বিয়ে করুন। যেভাবে মাতাপিতার অগোচরে বিয়ে করা সন্তানের জন্য উচিৎ নয়, ঠিকতেমনি সন্তানের পছন্দ অপছন্দের প্রতি খেয়াল রাখা অত্যান্ত জরুরী। সাবালক মেয়ের সন্তুষ্টি ব্যতিত বিয়েও বৈধ হবে না। 

আপনি যদি মাতাপিতার অগোচরে বিয়ে করেন, তাহলে বিয়ে শুদ্ধ হবে। তবে আপনার সন্তুষ্টি নেই অনুমোদন নেই, এমন কোথাও আপনাকে বিয়ে দিলে সেই বিয়ে গ্রহণযোগ্য হবে না।

আপনি মাতাপিতার অগোচরে কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না। বরং যেভাবেই হোক, মাতাপিতাকে সাথে নিয়েই সিদ্ধান্ত নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...