আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,403 views
in পবিত্রতা (Purity) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম
এক ভাই জানতে চেয়েছে।

পায়ের গোড়ালির দিকে অল্প কেটে গিয়েছে। সাধারনত রক্ত বের হচ্ছে না কিন্তু ভতরে পুজ জাতীয় কিছু জমে আছে। আন্দাজ করা যায় যে বের হয়ে আসলেও পরিমান গড়িয়ে পরার সমান হবে না। কিন্তু ওজু করার সময় পানি দিলে পানির সাথে মিশে বের হয়ে আসে, তখন বোঝা যায় না গড়িয়ে পড়ার পরিমান বের হয়েছে কিনা। কাপড় দিয়ে পেচিয়ে রাখলেও কাপড় শুষে নেয় তরল, যা দেখে বোঝা যায় না কতটা বের হয়েছে। কিন্তু বাইরে থেকে দেখে আন্দাজ করা যায় যে স্বাভাবিক ভাবে বের হলে তা গড়িয়ে পড়ার পরিমান ছিল না।
ওজু কিভাবে করতে হবে শাইখ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/2142  নং ফাতাওয়ায় লিখেছি যে, চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ  "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " রয়েছে,
اختلف الفقهاء في نقض الوضوء، أو عدم نقضه بخروج شيء من النجاسات من سائر البدن غير السبيلين.
فقال المالكية والشافعية: إنه غير ناقض للوضوء، وإنما يلزم تطهير الموضع الذي أصابته النجاسة الخارجة من سائر البدن، ويبقى الوضوء إلا إذا انتقض بسبب آخر.
ونص الحنفية والحنابلة على أن النجاسات الخارجة من سائر البدن غير السبيلين - كالقيء والدم ونحوهما - ناقضة للوضوء، وذلك في الجملة على اختلاف بينهم في ذلك.
প্রস্রাব-পায়খানার স্থান ব্যতীত শরীরের অন্য কোথাও থেকে যদি নাজাসত বের হয়,তাহলে সেটা দ্বারা কি অজু ভঙ্গ হবে? এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।মালিকী এবং শাফেয়ী মাযহাব মতে এদ্বারা  অজু ভঙ্গ হবে না।তবে যে স্থানে নাজাসত বের হবে,সে স্থানকে ধৌত করতে হবে।হানাফি এবং শাফেয়ী মাযহাব মতে অজু ভঙ্গ হবে।যেমন রক্ত, বমি ইত্যাদি।তবে হানাফি ও হাম্বলী মাযহাবের অজু ভঙ্গ হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের স্ব স্ব ব্যখ্যা রয়েছে।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৪৩/৩৮৬)
الخارج من غير السبيلين إذا لم يكن نجسا لا يعتبر حدثا باتفاق الفقهاء. واختلفوا فيما إذا كان نجسا، فقال الحنفية: ما يخرج من غير السبيلين من النجاسة حدث ينقض الوضوء بشرط أن يكون سائلا جاوز إلى محل يطلب تطهيره ولو ندبا، كدم وقيح وصديد عن رأس جرح، وكقيء ملأ الفم من مرة أو علق أو طعام أو ماء، لا بلغم، وإن قاء دما أو قيحا نقض وإن لم يملأ الفم عند أبي حنيفة وأبي يوسف خلافا لمحمد، ويشترط عند الحنابلة أن يكون كثيرا إلا الغائط والبول فلا تشترط فيهما الكثرة عندهم.
والقول بأن النجس الخارج من غير السبيلين حدث هو قول كثير من الصحابة والتابعين.
প্রস্রাব পায়খানার রাস্তা ব্যতীত অন্যত্র থেকে বাহির হওয়া জিনিষ যদি নাজাসত না হয়,তাহলে সেটা দ্বারা অজু ভঙ্গ হবে না।এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের ঐক্যমত রয়েছে।আর যদি নাজাসত হয়,তাহলে হানাফি ব্যখ্যা অনুযায়ী তখনই সেটা দ্বারা অজু ভঙ্গ হবে, যখন সেটা নিজ স্থান থেকে বের হয়ে প্রবাহিত হবে।যেমন যখম থেকে রক্ত,পুঁজ ইত্যাদি নির্গত হওয়া।মূখভর্তি বমি।তবে মূখভর্তি কফ বের হলে অজু ভঙ্গ হবে না।আর যদি রক্ত বা পুঁজের বমি হয়,তাহলে অজু ভঙ্গ হবে যদিও তা মূখ না ভড়ে হোক না কেন।এটা ইমাম আবু হানিফা ও আবু ইউসুফ রাহ এর মাযহাব।তবে এ বিষয়ে ইমাম মুহাম্মদের ভিন্নমত রয়েছে।হাম্বলী মাযহাব মতে প্রস্রাব-পায়খানাতে কমবেশের কোনো ধর্তব্য নেই।তবে শরীরের ভিন্ন স্থান থেকে কোনো নাজাসত বের হলে তখনই অজু ভঙ্গ হবে যখন তা বেশী হবে।অন্যথায় অজু ভঙ্গ হবে না।প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা ব্যতীত অন্য কোথাও থেকে নাজাসত বের হলে অজু ভঙ্গ হবে, এটা অধিকাংশ সাহাবা তাবেঈনদের মত।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-১৭/১১৩)

হানাফি মাযহাবের নির্ভরযোগ্য কিতাব ফাতাওয়ায়ে শামীতে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যখ্যা বর্ণিত রয়েছে।
في الدرالمختار-ج:١ـص:١٣٤
(وينقضه) خروج منه كل خارج (نجس) بالفتح ويكسر (منه) أي من المتوضئ الحي معتادا أو لا، من السبيلين أو لا (إلى ما يطهر) بالبناء للمفعول: أي يلحقه حكم التطهير. ثم المراد بالخروج من السبيلين مجرد الظهور وفي غيرهما عين السيلان ولو بالقوة، لما قالوا: لو مسح الدم كلما خرج ولو تركه لسال نقض وإلا لا، كما لو سال في باطن عين أو جرح أو ذكر ولم يخرج،
 জীবিত পবিত্রতম কোনো ব্যক্তির প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে অথবা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ দিয়ে কোনো নাজাসত বের হলে অজু ভঙ্গ হয়ে যাবে।চায় স্বাভাবিক কিছু বের হোক বা অস্বাভাবিক কিছু বের হোক।প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে যৎ সামান্য কিছু বের হলেই অজু চলে যাবে।আর অন্যান্য অঙ্গ থেকে শুধুমাত্র নাজাসত প্রবাহিত হলেই অজু ভঙ্গ হবে।চায় জোরে হোক বা আস্তে।কেননা ফুকাহায়ে কিরাম লিখেন,যদি কেউ রক্তকে বের হওয়া মাত্রই যখমের মুখ থেকে মুছে নেয়,যদি উক্ত ছেড়ে দেয়া হত,তবে প্রবাহিত হত,এমন প্রকারের যখমের রক্তের কারণে অজু ভেঙ্গে যাবে।নতুবা অজু ভঙ্গ হবে না।তবে যদি রক্ত যখমের ভিতর দৌড়াদৌড়ি করে ,অথবা চোখ কিংবা পুরুষাঙ্গের ভিতরে দৌড়াদৌড়ি করে,কিন্তু বাহিরে আসে না,তাহলে এমন রক্তের কারণে অজু ভঙ্গ হবে না।
و في حاشية ابن عابدين تحت قوله (ولم يخرج) 
وفي السراج عن الينابيع: الدم السائل على الجراحة إذا لم يتجاوز. قال بعضهم: هو طاهر حتى لو صلى رجل بجنبه وأصابه منه أكثر من قدر الدرهم جازت صلاته وبهذا أخذ الكرخي وهو الأظهر. وقال بعضهم: نجس، وهو قول محمد اهـ ومقتضاه أنه غير ناقض لأنه بقي طاهرا بعد الإصابة، وإن المعتبر خروجه إلى محل يلحقه حكم التطهير من بدن صاحبه فليتأمل
ইবনে আবেদীন রাহ, আরেকটু পরিস্কার করে লিখেন,যখমে প্রবাহিত রক্ত যখন সেটা তার স্বস্থানকে ত্যাগ করবে না,তখন অজু ভঙ্গ হবে না।কেউ কেউ এই রক্তকে পবিত্র রক্ত বলে থাকেন।এমনকি যদি এমন রক্ত যখমে থাকাবস্থায় উক্ত ব্যক্তির পাশে কেউ নামায পড়ে নেয়,এবং পাশের ব্যক্তির শরীর বা কাপড়ে এক দিরহাম থেকে বেশী উক্ত রক্ত লেগে যায়,তাহলেও উক্ত ব্যক্তির নামায হবে।এটাই ইমাম কারখী রাহ এর মত।এটাই বিশুদ্ধতম অভিমত।তবে কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম বলেন,এই রক্ত অপবিত্র।এটা ইমাম মুহাম্মদের মত।

উপরের অালোচনার সারমর্ম হল,উক্ত রক্ত বের হলে অজু ভঙ্গ হবে না।কেননা পাশের লোকের শরীরে ঐ রক্ত লেপ্টে যাওয়ার পরও পবিত্র থাকে।রক্ত বের হওয়ার পর স্বস্থান ত্যাগ করে অন্যত্র গড়িয়ে গেলে অজু ভঙ্গ হবে। বিস্তারিত জানুন-২১৪২

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই বোন!
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী অজু ভঙ্গ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
  আমার নখ ফেটে গেছে,,,সেখানে পুজ জমে থাকে যখন ব্যান্ডস দিয়ে রাখি এবং তারপর যখন ব্যান্ডেজ তুলি তখন ২ ফোটার মতো পুজ দেখা যায় সেখানে,,,,,,তো আমার কী ওযু হবে?
by (597,330 points)
ব্যন্ডিজের উপর আপনি মাসেহ করতে পারবেন। তবে ব্যন্ডিজ খুলে ফেললে আপনি তখন উক্ত পুজের ক্ষত স্থানকে ধৌত করে নিবেন। তারপর অজু করবেন। অজু হবে। নতুবা অজু হবে না। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...