আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম,

কোন স্বামী যদি বাবা-মা, খালা দের চাপে পরে কয়েক বছর (প্রায় ৫ বছর) স্ত্রীর কোন খবর না রাখে, ইমেইল বা ফোন এ যোগাযোগ হয়, কয়েকবার বাইরে দেখা হয়; এই সময়ে ছেলে ভরণপোষণ ও দেয়নি।

ঐ স্বামীর খালা-মা যদি মেয়ের পরিবার কে বলতে থাকে "ছাড়েন না কেন (তালাক দেন না কেন), আমাদের ছেলেকে আবার বিয়ে করাবো আর না দিলেও এত বছর যোগাযোগ নাই, তাই তালাক হয়ে গেছে" (আবার অন্য জায়গায় বিয়ে দিলে অনেক যৌতুক পাবে, কয়েক তলা বাড়ির মালিক হবে তাদের ছেলে এই তাদের ধারনা), সে অবস্থায় ঐ মেয়ে কাবিননামায় তালাক দেয়ার অধিকার এর উপর নিরভর করে কাজী অফিস এ যেয়ে তালাক এর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তালাক নোটিশ পাঠিয়ে দেয় (কাজী অফিস এ মেয়ের আঙ্গুল এর ছাপ নেয়া হয়, যদিও মুখে মেয়ে এখনও তালাক দেয়ার ব্যাপারে কিছু বলেনাই, মনে মনে চিন্তা করে রেখেছে, পরে বলবে যদি ৯০ দিনেও ছেলে/স্বামী নিতে না আসে, আবার কখনও মনে মনে চিন্তা করেছে না আসলেও বলবেনা, ছেলেও মুখে তালাক বলেনাই, তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে, ছেলে আসেও নাই (আসতে দেয়া হবেনা ধরে নেয়া যায়)। ৯০দিন এর বেশি হয়ে গিয়েছে, এতে কি তালাক হয়ে গিয়েছে?

সিটি কর্পোরেশন এ গিয়ে তালাক হয়ে যাওয়ার সনদ আনতে বলেছে, যদি এই সময়ে মীমাংসা না হয়, বা, ছেলে নিতে না আসে। কিন্তু ছেলে- মেয়ে যদি চায়, তারা কি আবার বিয়ে করে এক হতে পারবে তালাকের সনদ পাওয়ার পরেও? উল্লেখ্য, ছেলের পরিবার দেনমোহর ও সম্পূর্ণ দিতে দেয়নি ছেলেকে, মেয়ের কাছে তালাক চেয়েছে, তাতে নাকি দেনমহর মেয়ে আর পায়না, যেহেতু মেয়ের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

একটু বিস্তারিত জানাবেন। জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্ত্রীর কাবিননামা বিবাহের ইজাব কবুলের আগে লেখা হলে এ তালাক কার্যকর হবেনা।
আর যদি এই কাবিননামা বিবাহের ইজাব কবুলের পরে লেখা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে দেখতে হবে যে তালাক নোটিশ তথা তালাক নামায় কি লেখা আছে?

যদি সেখানে স্বামীকে তালাক দেয়ার কথা লেখা থাকে,সেক্ষেত্রেও তালাক হবেনা।

আর যদি নিজেকে নিজে তালাক বা নিজের নফসের উপর তালাক প্রদানের কথা লেখা থাকে,সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হবে। 

যদি ১/২ তালাকের কথা লেখা থাকে,বা তালাকের কোনো সংখ্যা লেখা না থাকে,সেক্ষেত্রে তারা পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিয়ে সংসার করতে পারবে।

আর যদি তালাকনামায় ৩ তালাকের কথা লেখা থাকে,তাহলে ৩ তালাকই কার্যকর হবে।
এক্ষেত্রে শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত তাদের পুনরায় বিবাহের কোনো সুযোগ নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...