بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ
মানব জীবনে বিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। ইসলামে বিয়েকে ঈমানের অর্ধেক বলা হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমেই ঈমানের পূর্ণতা পাওয়া যায়। বিয়ে মানব জীবনের অন্যতম চাহিদাও বটে। বিয়ে শুধু শারীরিক চাহিদা বা ঈমাণ পূর্ণ করে তাই নয়, পুরুষের ব্যক্তিত্বেরও বিকাশ ঘটায়। সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে। এজন্য সময়মতো বিয়ে করাকে গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। যারা বিয়ের উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে করে না, তাদেরকে শয়তানের দলভূক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
হজরত আবু জর রা. থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ সা. আক্কাফ রা. কে বললেন, হে আক্কাফ! তোমার স্ত্রী আছে? তিনি বললেন, না। রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, তোমার কি সম্পদ ও স্বচ্ছলতা আছে? তিনি বললেন, আছে। রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, তুমি এখন শয়তানের ভাইদের দলভূক্ত। যদি তুমি খ্রিস্টান হতে তবে তাদের রাহেব (ধর্ম গুরু) হতে। নিঃসন্দেহে বিয়ে করা আমাদের ধর্মের রীতি। তোমরা কি শয়তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাও? শয়তানের কাছে নারী হলো অস্ত্র।
সবাই নারী সংক্রান্ত ফেৎনায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যারা বিয়ে করেছে তারা নারীর ফেৎনা থেকে পবিত্র। নোংড়ামি থেকে মুক্ত। তারপর বলেন, আক্কাফ! তোমার ধ্বংস হোক। তুমি বিয়ে কর নতুবা তুমি পশ্চাৎপদ মানুষের মধ্যে থেকে যাবে। [মুসনাদে আহমদ, জমউল ফাওয়ায়েদ, ইমদাদুল ফাতওয়া : ২/২৫৯]। ইসলামে ব্যক্তির স্বাবলম্বী ও সক্ষমতার বিভিন্ন ধরণসাপেক্ষে বিয়েকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ওয়াজিব বিয়ে : যখন শারীরিক চাহিদা থাকে এবং এই পরিমাণ সামর্থ্য থাকে যে তার এবং স্ত্রীর প্রতিদিনের খরচ বহন করতে পারবে, তখন বিয়ে করা ওয়াজিব। এ অবস্থায় বিয়ে থেকে বিরত থাকলে গুনাহগার হবে।
ফরজ বিয়ে : যদি সামর্থ্য থাকার সাথে সাথে চাহিদা এতো বেশি থাকে যে, বিয়ে না করলে ব্যাভিচার বা হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন বিয়ে করা ফরজ। মানব জীবনে বিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। ইসলামে বিয়েকে ঈমানের অর্ধেক বলা হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমেই ঈমানের পূর্ণতা পাওয়া যায়। বিয়ে মানব জীবনের অন্যতম চাহিদাও বটে। বিয়ে শুধু শারীরিক চাহিদা বা ঈমাণ পূর্ণ করে তাই নয়, পুরুষের ব্যক্তিত্বেরও বিকাশ ঘটায়। সমাজে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে। এজন্য সময়মতো বিয়ে করাকে গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। যারা বিয়ের উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে করে না, তাদেরকে শয়তানের দলভূক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সবাই নারী সংক্রান্ত ফেৎনায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যারা বিয়ে করেছে তারা নারীর ফেৎনা থেকে পবিত্র। নোংড়ামি থেকে মুক্ত। তারপর বলেন, আক্কাফ! তোমার ধ্বংস হোক। তুমি বিয়ে কর নতুবা তুমি পশ্চাৎপদ মানুষের মধ্যে থেকে যাবে। [মুসনাদে আহমদ, জমউল ফাওয়ায়েদ, ইমদাদুল ফাতওয়া : ২/২৫৯]। ইসলামে ব্যক্তির স্বাবলম্বী ও সক্ষমতার বিভিন্ন ধরণসাপেক্ষে বিয়েকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
সুন্নত বিয়ে : যদি শারীরিক চাহিদা প্রবল না থাকে, কিন্তু স্ত্রীর অধিকার আদায়ের সামর্থ্য রাখে তখন বিয়ে করা সুন্নত। এ অবস্থায় খারাপ কাজের প্রতি ঝোঁকার আশঙ্কা না থাকলে বিয়ে না করলে কোনো অসুবিধা নেই।
নিষিদ্ধ বিয়ে : যদি কারো আশঙ্কা হয় সে স্ত্রীর অধিকার আদায় করতে পারবে না। চাই তা দৈহিক হোক বা আর্থিক। তার জন্য বিয়ে করা নিষিদ্ধ। সামর্থ্য না থাকলে।
রোজা রাখা : অনেকের বিয়ের ইচ্ছে আছে, সক্ষম পুরুষও কিন্তু স্ত্রীকে ভরণ পোষণ দেয়ার ক্ষমতা নেই। এ অবস্থায় বিয়ে না করে রোজা রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে হাদিসে। কারণ রোজা দৈহিক কাম উত্তেজনা দূর করে দেয়। এ সময় সক্ষমতা অর্জনের জন্য বেশি বেশি কাজ ও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে।
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী বোন!
কোন নারী-পুরুষের জন্য সারাজীবন বিবাহ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া শরীয়ত সম্মত নয়। কেননা বিবাহ ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধান। বিবাহ করা সমস্ত নবীদের সুন্নাহ এমনকি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব রাসূল (সাঃ) নিজে একাধিক বিয়ে করেছেন এবং তার উম্মতকে বিবাহ করতে উৎসাহিত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন,তোমার পূর্বে আমরা অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছিলাম।’ (সূরা রা‘দ ১৩/৩৮)।
রাসূল ( ﷺ)-এর স্ত্রীদের নিকট আগত তিন ব্যক্তির এক ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করার স্বার্থে বিবাহ না করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِىْ فَلَيْسَ مِنِّىْ
‘আমি নারীদেরকে বিবাহ করি (সুতরাং বিবাহ করা আমার সুন্নাত)। অতএব যে আমার সুন্নাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (বুখারী হা/৫০৬৩; মসুলিম হা/১৪০১; মিশকাত হা/১৪৫)।
তাছাড়া বিবাহ না করে চিরকুমার ও নিঃসঙ্গ জীবন যাপনের অনুমতি ইসলামে নেই। সা‘আদ ইবনু আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ﷺ) উসমান ইবনু মাযঊনকে নিঃসঙ্গ জীবন যাপনের অনুমতি দেননি। তাকে অনুমতি দিলে আমরা নির্বীর্য হয়ে যেতাম।’ (বুখারী হা/৫০৭৩; মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮১)।
আয়েশা (রাঃ) বলেন,‘নিশ্চয়ই রাসূল (ﷺ) নিঃসঙ্গ জীবন যাপনকে নিষেধ করেছেন।’ (সহীহ বুখারী হা/৫০৭৩; নাসাঈ হা/৩২১৩; মিশকাত হা/৩০৮১)।
তাই কোন নারী-পুরুষ সার্বিক দিক থেকে সমর্থ হওয়া সত্ত্বেও রাসূল (ﷺ) এর সুন্নাতের প্রতি অনীহা ও অবহেলার কারণে বিয়ে পরিত্যাগ করে, তাহলে সে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ বা তরীকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গুনাহগার হবে। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪৫)।
কিন্তু কোন নারী-পুরুষের যদি বিবাহ করার ইচ্ছা থাকা এবং সাধ্য অনুযায়ী সর্বদিক থেকে প্রচেষ্টা করা সত্বেও কোন কারণে বিয়ে করতে ব্যর্থ হয় বা বিশেষ কোন ওজর বা শারীরিক সমস্যার কারণে বিবাহ করতে না পারে তাহলে এতে তাদের কোন গুনাহ হবেনা ইনশাআল্লাহ।কারন, বিয়ে করার ক্ষেত্রে তার পক্ষ থেকে চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। আর আল্লাহ অন্তরের খবর জানেন। সে চেষ্টা করেছে তার চেষ্টা করার পরেও সম্ভব হয়নি।