بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
একজন মুসলিম বান্দার
যে কোন ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছেঃ ‘ইখলাস’,
অর্থাৎ সমস্ত আমল শুধুমাত্র আল্লাহকে রাজী-খুশি
করার জন্য সম্পাদন করা। দুনিয়াবি কোন লাভ বা লোভের কারণে,
লোকদের প্রশংসা পাওয়া বা নিজেকে ধার্মিক
হিসেবে প্রমাণ করার জন্য কোন আমল করলে সেটা শির্কে আসগার বা ছোট শির্ক। এমন কাজে শুধু
যে বান্দার আমল নষ্ট বা বাতিল হবে তাই নয়, বরং এই গুনাহর জন্য কঠিন শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে।
ক্বিয়ামতের দিন
সর্বপ্রথম যে তিন প্রকার মানুষকে দিয়ে জাহান্নামের আগুন উদ্ধোধন করা হবে তারা হচ্ছে,
একজন আলেম,
একজন শহীদ এবং একজন দানশীল ব্যক্তি। এই
তিনপ্রকার মানুষ অনেক নেক আমল করবে, কিন্তু তাদের অন্তরের ইচ্ছা ছিলো লোকদের কাছ থেকে সুনাম,
জনপ্রিয়তা কিংবা বাহবা পাওয়া। এ কারণে
আল্লাহ তাআ’লা তাদের আমল বাতিল করে তাদেরকে দিয়ে জাহান্নাম উদ্ধোধন করবেন।
আল্লাহ সুবহা’নাহু
তাআ’লা বলেন,
قُلۡ
إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡ يُوحَىٰٓ إِلَيَّ أَنَّمَآ إِلَٰهُكُمۡ
إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۖ فَمَن كَانَ يَرۡجُواْ لِقَآءَ رَبِّهِۦ فَلۡيَعۡمَلۡ عَمَلٗا
صَٰلِحٗا وَلَا يُشۡرِكۡ بِعِبَادَةِ رَبِّهِۦٓ أَحَدَۢا ١١٠
“(হে নবী!) আপনি
বলুন, “আমি
তোমাদেরই মত একজন মানুষ, আমার
নিকট ওয়াহী করা হয় যে, তোমাদের
ইলাহ কেবল এক ইলাহ। কাজেই যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাতের আশা করে,
সে যেন নেক আমল করে,
আর তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক
না করে।” সুরা কাহফঃ ১১০।
আল্লাহ তাআ’লা
সূরা কাহাফের মতো অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ একটি সূরার শেষে তাঁর বান্দাদেরকে স্মরণ করিয়ে
দিচ্ছেন, যদি
আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখো, যদি আমার কাছ থেকে পুরস্কার পেতে চাও,
তাহলে শুধুমাত্র নেক আমল করলেই হবে না,
বরং নেক আমলে সাথে সাথে আরও গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হচ্ছেঃ আমার সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না। আর এটাই হচ্ছে ‘ইখলাস’,
তাওহীদের সর্বোচ্চ স্তর।
আবু সাঈদ খুদরী
রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বের হয়ে
আমাদের নিকটে আসলেন। এমতাবস্থায় আমরা দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু
আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বললেন, আমি কি তোমাদেরকে দাজ্জালের চাইতেও অধিক ভয়ংকর কোন কিছুর
সংবাদ দিব? আমরা
বললাম, হ্যাঁ।
তিনি বললেন, “তা হচ্ছে গোপন শিরক।” মুসনাদে আহমাদঃ ১১২৭০; ইবনু মাজাহঃ ৪২০৪, হাদীসটি হাসান সহীহ, শায়খ আলবানী।
★
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে এভাবে নিজের কৃত নেক আমলের কথা অন্যের
সা শেয়ার করা মোটেও উচিত নয়। একজন মুসলিম বান্দা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোন কারণে
জানেন? সেটা হচ্ছে ইবাদত করে লোকদের
মাঝে সুনাম অর্জন করার লোভ থেকে। এমনকি অন্তরের এই সূক্ষ্ম রিয়া এতো মারাত্মক যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া
সাল্লাম এই রিয়াকে তাঁর উম্মতের জন্য দাজ্জালের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর বলে ভয় করেছেন। হতে পারে প্রথম অবস্থায় তার মাঝে রিয়া ছিল না। কিন্তু
শয়তানের ধোকায় পড়ে অন্তরে রিয়া চলে আসবেই আসবে এটাই স্বাভাবিক। বিধায় এমন কাজ থেকে
বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্ট করতে হবে।