বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
4051 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,
প্রথম রা'কাতে যে সূরা তেলাওয়াত করা হয়েছে,পরের রা'কাতে উক্ত সূরার পূর্বের কোনো সূরা তেলাওয়াত করা মাকরুহ।তাই প্রথম রা'কাতে এমন সূরা পড়তে হবে যে,তার পরে আরেকটি সূরা পড়ার মত রয়েছে।যেমন প্রথম রা'কাতে সূরা মাউন পড়ার পর দ্বিতীয় রা'কাতে সূরা কুরাইশ পড়া মাকরুহ।কেননা তখন কুরআনের সূরা সমূহের তারতীব পাল্টে যাবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
2434
তবে যদি ভুলক্রমে এমনটি হয়ে যায়, তাহলে সমস্যা নেই।যেহেতু আপনি প্রথম রা'কাতে সূরা ইখলাছ পড়ে নিয়েছেন,তাই দ্বিতীয় রা'কাতেও আবার সূরা ইখলাছ পড়ে নিতে পারেন বা সূরা ফালাক্ব পড়ে নিতে পারেন।সূরা ফালাকে আয়াত সংখ্যা বেশী হলেও এক্ষেত্রে মাকরুহ হবে না।কেননা আপনি তো ইচ্ছা করে এমন পরিস্থিতে আসেননি।
কখনো ভুলে যদি কেউ সূরা নাস পড়ে ফেলে। তাহলে পরবর্তী সকল রাকাতে সূরা নাস পড়ার পরামর্শ ফুকাহায়ে কেরাম দেন।। পূর্বের অন্য কোন সূরা না পড়ার উপদেশ দেন।তারপরও কেউ ভুলে অন্য সূরা পড়লে কোন সমস্যা হবে না।মোটকথা ইচ্ছাকৃত হলে মাকুরুহ।তবে সাহু সেজদা আসবে না।সাহু সেজদা শুধুমাত্র ওয়াজিব তরক করলেই আসে।
প্রমাণ
আল্লামা হাসক্বাফী রাহ লিখেন,
وَيُكْرَهُ الْفَصْلُ بِسُورَةٍ قَصِيرَةٍ وَأَنْ يَقْرَأَ مَنْكُوسًا إلَّا إذَا خَتَمَ فَيَقْرَأُ مِنْ الْبَقَرَةِ. وَفِي الْقُنْيَةِ قَرَأَ فِي الْأُولَى الْكَافِرُونَ وَفِي الثَّانِيَةِ – أَلَمْ تَرَ – أَوْ – تَبَّتْ – ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ وَقِيلَ يَقْطَعُ وَيَبْدَأُ،
নামাযে দুই সূরার মধ্যবর্তী ছোট্ট সূরা দ্বারা পৃথকতা করা বা এক সূরা পড়ার পর পূর্বের সূরা পড়া মাকরুহ। তবে কেউ যদি কুরআনের একেবারে শেষ সূরা পড়ে নেয়,তাহলে সে আবার প্রথম থেকে সূরা বাকারা পড়ে নেবে।কুনয়া কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,যদি কেউ প্রথম রা'কাতে সূরা কাফিরুন তিলাওয়াত করে,এবং দ্বিতীয় রা'কাতে সূরা ফিল বা এক সূরা পর সূরা লাহাব তিলাওয়াত করে নেয়,তাহলে তার করণীয় কি?কেউ কেউ বলেন,পূর্ণ করে নেবে।আবার কেউ কেউ বলেন,নামাযকে ভেঙ্গে আবার নতুনভাবে শুরু করো নেবে।
ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন,
(قَوْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ) أَفَادَ أَنَّ التَّنْكِيسَ أَوْ الْفَصْلَ بِالْقَصِيرَةِ إنَّمَا يُكْرَهُ إذَا كَانَ عَنْ قَصْدٍ، فَلَوْ سَهْوًا فَلَا كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع القراءت مطلقا-2/269)
ধারাবাহিক তারতীবের খেলাফ বা ছোট্ট কোনো সূরা দ্বারা পৃথকতা সৃষ্টি করা,মাকরুহ যদি সেটা ইচ্ছাকৃত হয়।আর অনিচ্ছায় এমনটা হলে মাকরুহ হবে না।(শরহুল মুনয়া-২/২৬৯)
قَرَأَ فِي الْأُولَى – {قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ} [الناس: 1]- أَعَادَهَا فِي الثَّانِيَةِ إنْ لَمْ يَخْتِمْ نَهْرٌ لِأَنَّ التَّكْرَارَ أَهْوَنُ مِنْ الْقِرَاءَةِ مَنْكُوسًا بَزَّازِيَّةٌ، (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة-2/268)
প্রথম রা'কাতে যদি কেউ সূরা নাস পড়ে ফেলে,তাহলে সে দ্বিতীয় রা'কাতেও সে সূরা নাসকে পড়ে নেবে।কেননা উল্টো করে তিলাওয়াত করার চেয়ে কোনো এক সূরাকে বারংবার তিলাওয়াত করাই অধিকতর সহজ।(রদ্দুল মুহতার-২/২৬৮)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি প্রথম রা'কাতে কাফিরুন পড়েছেন। এবং ২য় রাকাতে কাউসার শুরু করে দিয়েছিলেন।
যেহেতু আপনি শুরু করেই দিয়েছিলেন,তাই আপনার উচিৎ ছিল,সূরা কাউছারকে শেষ করা।কিন্তু আপনি শেষ না করে সূরা নাসর পড়েছেন।যদিও এগুলো উচিৎ হয়নি,তবে আপনার নামায হয়ে গেছে।সাহু সিজদার কোনো প্রয়োজন এক্ষেত্রে নাই।বিনা প্রয়োজনে সাহু সিজদা দেওয়া অনুচিত।তবে নামাযে কোনো ঘাটতি হবে না।