আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
169 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (27 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।

(১) আমি গত ৬/৭ মাস যাবত তালাকের ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত। সবসময় মনের ভিতর তালাক- তালাক চলতে থাকে। সারাদিন এই নিয়ে আমার চিন্তা ফিকির চলতে থাকে।  বিশেষ করে খাওয়ার সময়, ব্রাশ করার সময়,ওয়াসরুমে থাকা কালিন মনে হয় আমি জিব্বা নাড়িয়ে নিঃশব্দে তালাক শব্দ বলে ফেলছি।সন্দেহ হয় কিন্তু নিজের কানে শুনি না । মনে মনে বললেও আমার কাছে এতটায় রিয়েল মনে হয় যেন আমি জিব্বা নাড়িয়ে উচ্চারন করলাম। উচ্চারন যেন না হয়ে যায় সেজন্য যতটা সম্ভব মুখ বন্ধ করে রাখার চেষ্টা করি। এমনটা করতে গিয়ে আমার এই কয়দিন আমার জিব্বা ব্যাথা করছে।  স্ত্রীর সাথে স্বাভাবিক কথাবার্তা যখন বলছি তার ভিতরেও মনে তালাক শব্দ আসতে থাকে। ওয়াসওয়াসা এতটায় বেশি যে, গতকাল রাতে আমি নিস্সাসের বাতাসের মাধ্যমেও তালাক বলছি।  আমি যেটা দেখি সেটা নিয়েই আমার ওয়াসওয়াসা শুরু হয়ে যায়।
আমার ওসিডি বা এক প্রকার মানসিক রোগ আছে। যার দরুন আমার কোন বিষয়ে চিন্তা আসলে তা থেকে আমি সহজে বেরিয়ে আসতে পারি না। মানসিক ডাক্তার এর পেসক্রিপশন অনুযায়ী ১৫ দিন মত ঔষধ খেয়েছি। কোন উন্নতি না দেখে আর খাওয়া হয়নি। আল্লাহ ভাল জানেন।
এসব কারনে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?

এথেকে মুক্ত হবার উপায় কি?
(২) আমি গোছল করবো তাই আমার স্ত্রী পানি তুলে দিচ্ছিল।আমি তাকে বললাম যে, সরো আমি পানি তুলছি। একথা বলার পর মনে হচ্ছে আমি কি কেনায়া বাক্য বলে ফেললাম?
এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?

(৩) স্ত্রী ঘরের জানালা সারাদিন বন্ধ থাকবে কিনা আমার কাছে জিগ্গাসা করলো।
আমি বললাম যে, হ্যা জানালা খোলার দরকার নেই।
একথা বলার সাথে সাথে আমার মনের ভিতর কল্পনা হচ্ছে আমি মনে হয় আমার স্ত্রীকে দরকার নাই তাই বললাম।
এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ?

(৪) সাধারনভাবে স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলার সময় আমার তালাকের কথা খুব বেশি মনে আসে। ফোনে কথা বলার এক পর্যায় আমি আনমনা হয়ে কলম নিয়ে একটা কাগজে সম্ভবত আমার নাম লেখার উদ্দেশ্যে জাষ্ট একটা বিন্দু আকি। আকার পর আমার সন্দেহ হচ্ছে আমি কি তালাক লেখার উদ্দেশ্যে বিন্দু দিলাম? এমন সন্দেহ আমার মনে আসছে।
এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ???

(৫) মনে তালাকের কথা আসলেই আমি হাত দিয়ে মাথায় বাড়ি মারি। একদিন মনে তালাক আসার পর আমি তিনবার মাথায় বাড়ি মারি। মারার পর মনে হচ্ছে আমি তিনবার বাড়ি মারার মাধ্যমে তিন তালাক দিয়ে দিলাম।

এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ???

(৬) আমার ওয়াইফকে আমি আমার অফিসে নিয়ে গেছিলাম। সেখানে সামান্য কিছু সময় থাকার পর আমি আমার ওয়াইফকে বললাম যে,
এখান থেকে যেতে হবে।
একথা বলার পর মনে হচ্ছে আমি যেন আমার ওয়াইফকে আমার বাসা থেকে চলে যাবার কথা বলছি। এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ???

(৭) আমার মেয়ের গায়ে হাত বুলাচ্ছিলাম। হাত বুলাতে বুলাতে তালাকের কথা মনে আসাতে মেয়ের গায়ে হাতের আংগুল দিয়ে মনে হচ্ছে "ত" লিখে ফেললাম। এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(৮) ফোনে আমার ওয়াইফের সাথে কথা বলছিলাম। তখন ফোনে আমার মেয়ের কথা শুনে তাকে আম্মু - আম্মু বলে ডাকছিলাম। কিন্তু ডাকার সময় মনে হচ্ছিল আমি যেন আমি আমার ওয়াইফকে আম্মু বলে ডাকছি। এতে কি বৈবাহিক জিবনে কনো সমস্যা হবে???

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-

(০১)
আপনি তালাক নিয়ে যতই চিন্তা করুন না কেন, কিংবা মনে মনে কথা বলুন না কেন, কিংবা মনে মনে যতই উল্লেখিত শর্ত আওড়ান না কেন, কিংবা নিয়ত ও সংকল্প করুন না কেন– যতক্ষণ পর্যন্ত মুখে উচ্চারণের বিষয়টি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত তালাক হবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ تَجَاوَزَ لأُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ وَحَدَّثَتْ بِهِ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ بِهِ

‘নিশ্চয় আল্লাহ্ তাআলা আমার উম্মতের ওয়াসওয়াসা, মনে মনে কথা বলা ক্ষমা করে দিয়েছেন; যতক্ষণ না সে কর্ম করে কিংবা কথা বলে।’ (সহিহ বুখারী ৬৬৬৪ সহিহ মুসলিম ১২৭)

★আপনি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রুগী, সেক্ষেত্রে সুস্থ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত স্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলেও তালাক হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

তবে এ কথা গুলো এড়িয়ে চলা আপনার জন্য খুবই জরুরী। 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এখান থেকে নিজেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আপনার জন্য কিছু পরামর্শঃ-

অহেতুক পেরেশানী করে নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। আপনি কিছুদিন বাহিরে থাকুন।
তাবলিগে গিয়ে ৪০ দিন সময় লাগান,চিল্লায় চলে যান, মনের তীব্র কনফিউশন থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিন। 
,
★আপনি তালাক সংক্রান্ত কোন মাসআলা পড়বেন না। কাউকে জিজ্ঞাসা করতেও যাবেন না। কারো সাথে এ সংক্রান্ত আলাপ ও আলোচনাও করবেন না।
তালাক সংক্রান্ত প্রশ্ন করবেননা। 

মনের মাঝে এ বিষয়ক কোন কিছু আসতে দিবেন না। আসলেই অন্য বিষয় নিয়ে মগ্ন হয়ে যাবেন, প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলবেন। ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

★সকাল ও সন্ধ্যায় পড়ুন-

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ

 (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার আশ্রয় প্রার্থনা করি তার অসম্ভষ্টি ও শাস্তি থেকে এবং তার বান্দার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে ও শয়তানের সংস্পর্শ থেকে।)

★ফজর ও মাগরিবের পর এবং ঘুমানোর আগে সূরা ফালাক ও নাস পড়ুন। 

(০২)
এতে তালাক পতিত হবেনা।

(০৩)
এতেও তালাক পতিত হবেনা।

(০৪)
এক্ষেত্রে তালাক পতিত হবেনা।

(০৫)
এতে তালাক পতিত হবেনা।

(০৬)
এতে তালাক পতিত হবেনা।

(০৭)
এতে তালাক পতিত হবেনা।

(০৮)
এতে আপনার বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...