আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম,
জীবন ধারণ এবং সাংসারিক খরচ বহন করতে করতে এখন প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার মত সুদী ঋণ হয়ে গেছে। এখন স্বল্প বেতনের একজন চাকুরীজীবীর পক্ষে সাংসারিক খরচ চালিয়ে এই সুদের ঋণ দেওয়া সম্ভব না।

চুক্তি অনুযায়ী ঋণের টাকা ১ বছর অতিবাহিত হলে প্রতি ১ লাখ টাকায় ৩০ হাজার টাকা সুদ দিতে হয় এখন স্বল্প বেতনের একজন চাকুরীজীবীর দ্বারা এককালীন এই টাকা পরিশোধ করা সম্ভব না আর এককালীন পরিশোধ না করতে পারলে পর্যায়ক্রমে এই সুদের ঋণ বাড়তেই থাকবে। এতো টাকা কারো কাছে কর্জে হাসানা ও পাচ্ছি না তাই উপায়ন্তর না দেখে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এই টাকা পরিশোধ করতে চাচ্ছি। আমার জানামতে ব্যাংক লোন ও  সুদ আবার সুদ ভিত্তিক ঋণ ও হয়ে গেছে। কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নিলে উপরে বর্ণিত সুদ থেকে কম সুদ দিতে হবে এবং কিস্তি আকারে অল্প অল্প করে পরিশোধ করতে পারবে। জানার বিষয় হচ্ছেঃ-

১-এমতাবস্থায় কি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এই ঋণের টাকা পরিশোধ করা যাবে??

২-ব্যাংক লোন নেওয়া ও যেহেতু সুদ আবার ঋণ ও সুদের এমতাবস্থায় শরিয়ত মোতাবেক আসলে আমার কি করণীয় আশাকরি উত্তম পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 
فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَاِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۱۵﴾ 

কিন্তু কেউ অবাধ্য বা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায় হলে আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সুরা নাহাল ১১৫)

 فَمَنِ اضۡطُرَّ فِیۡ مَخۡمَصَۃٍ غَیۡرَ مُتَجَانِفٍ لِّاِثۡمٍ ۙ فَاِنَّ اللّٰہَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۳﴾ 

অতঃপর কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সুরা মায়েদা ০৩)

https://www.ifatwa.info/1085 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
সুদের আদান-প্রদাণ হারাম।তবে অবস্থাবেধে হুকুমে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।মানুষের প্রয়োজন তিন প্রকারের হতে পারে।যথা- 

জরুরত (এমন প্রয়োজন যা না হলে নয়) : এমন এক ধরনের প্রয়োজন, যা ছাড়া জীবন হুমকির মুখে পড়ে যায়। যেমন, মরুভূমিতে ক্ষুধার্ত একজন মানুষ, যার কাছে কোনো খাবার নেই। (এই পরিস্থিতিতে মানুষটি জীবন বাঁচানোর তাগিদে হারাম বস্তুও ভক্ষণ করতে পারবে)। 

হাজত (এমন প্রয়োজন যা না হলে অত্যাধিক কষ্ট হবে) : কষ্ট বা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে যা করা হয়ে থাকে। (এখানে কষ্ট বা যন্ত্রণা বলতে জীবনের জন্যে হুমকিস্বরূপ বোঝাচ্ছে না) যেমন- একজন সাওম পালনকারী ব্যক্তি অসুস্থতার কারণে খাওয়া-দাওয়া করতে পারে। ফরজ সাওম হলেও এ ক্ষেত্রে তা ঐ ব্যক্তির জন্যে ভাঙার অনুমোদন রয়েছে।বা মেয়ের বিয়েতে টাকার প্রয়োজন। 

তাহসিন (পছন্দনীয় ও সুশোভিতকরণ) : এ ধরনের প্রয়োজনীয়তাগুলো মানুষের পোশাক-আশাক ও আচার-আচরণের পরিশুদ্ধতা ও পরিপূর্ণতার জন্যে এবং জীবনের মান উন্নয়নের জন্যে দরকারি। যেমন, একজন মানুষের শারীরিক অবস্থা ঠিক রাখার জন্যে মাছ, মাংস ও ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন। (এই তিন প্রকার একজন দ্বীনী বোনের গবেষনা থেকে কপিকৃত)  

হুকুমঃ

প্রথম অবস্থায় সুদ গ্রহণ জায়েয।এবং তৃতীয় অবস্থায় সুদ গ্রহণ জায়েয হবে না। আর দ্বিতীয় অবস্থার ব্যাখ্যা এরূপ যে,অভাব অনটনের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ের যে,খানাপিনা এবং চিকিৎসা ইত্যাদি মত মৌলিক প্রয়োজনাদিকে পূর্ণ করা সুদ ব্যতীত প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সুদ গ্রহণ করা বৈধ হবে।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল-৪/৫২) 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার যদি খুব অভাব হয়।
অভাব অনটনের পরিস্থিতি যদি এমন পর্যায়ে পৌছে যে,খানাপিনা এবং চিকিৎসা ইত্যাদি মৌলিক প্রয়োজনাদিকে পূর্ণ করা উক্ত লোন নেয়া ব্যতীত প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে আপনার  জন্য ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এই ঋণের টাকা পরিশোধ করা যাবে।
,
অভাব অনটন যদি এমন না হয়,সেক্ষেত্রে আপনার স্বামীর জন্য উক্ত লোন গ্রহণ করা বৈধ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...