জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ব্যবসার ক্ষেত্রে এক পক্ষের মাল,অপর পক্ষের শ্রম দেওয়াকে মুদারাবা বলা হয়।
এটি জায়েজ আছে।
,
মুদারাবার ক্ষেত্রে শরীয়তের উসুল হলো যাহা লাভ হবে,তাহা শতকরা হারে উভয়ের মাঝে বন্টন করার চুক্তি করতে হবে।
কোনো নির্দিষ্ট টাকার চুক্তি করা যাবেনা,লোকসান হলে আগে লাভের টাকা থেকে সেটা পূরন করা হবে,অতঃপর মূলধন থেকে পূরন করা হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
بَاب الشَّرِكَةِ وَالْمُضَارَبَةِ
حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اشْتَرَكْتُ أَنَا وَسَعْدٌ، وَعَمَّارٌ، يَوْمَ بَدْرٍ فِيمَا نُصِيبُ فَلَمْ أَجِئْ أَنَا وَلاَ عَمَّارٌ بِشَىْءٍ وَجَاءَ سَعْدٌ بِرَجُلَيْنِ .
শারীকাত (অংশিদারী) ও মুদারাবা ব্যবসা
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ) , আম্মার (রাঃ) ও আমি গানীমাতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবো)। আম্মার ও আমি কিছুই আনতে পারিনি। অবশ্য সাদ (রাঃ) দু’জন যুদ্ধবন্দী নিয়ে আসেন।
নাসায়ী ৪৬৯৭, আবূ দাউদ ৩৩৮৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৯৪, ইরওয়া ১৪৭৪।
مَالِك وَجْهُ الْقِرَاضِ الْمَعْرُوفِ الْجَائِزِ أَنْ يَأْخُذَ الرَّجُلُ الْمَالَ مِنْ صَاحِبِهِ عَلَى أَنْ يَعْمَلَ فِيهِ وَلَا ضَمَانَ عَلَيْهِ وَنَفَقَةُ الْعَامِلِ فِي الْمَالِ فِي سَفَرِهِ مِنْ طَعَامِهِ وَكِسْوَتِهِ وَمَا يُصْلِحُهُ بِالْمَعْرُوفِ بِقَدْرِ الْمَالِ إِذَا شَخَصَ فِي الْمَالِ إِذَا كَانَ الْمَالُ يَحْمِلُ ذَلِكَ فَإِنْ كَانَ مُقِيمًا فِي أَهْلِهِ فَلَا نَفَقَةَ لَهُ مِنْ الْمَالِ وَلَا كِسْوَةَ قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يُعِينَ الْمُتَقَارِضَانِ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ عَلَى وَجْهِ الْمَعْرُوفِ إِذَا صَحَّ ذَلِكَ مِنْهُمَا قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يَشْتَرِيَ رَبُّ الْمَالِ مِمَّنْ قَارَضَهُ بَعْضَ مَا يَشْتَرِي مِنْ السِّلَعِ إِذَا كَانَ ذَلِكَ صَحِيحًا عَلَى غَيْرِ شَرْطٍ قَالَ مَالِك فِيمَنْ دَفَعَ إِلَى رَجُلٍ وَإِلَى غُلَامٍ لَهُ مَالًا قِرَاضًا يَعْمَلَانِ فِيهِ جَمِيعًا إِنَّ ذَلِكَ جَائِزٌ لَا بَأْسَ بِهِ لِأَنَّ الرِّبْحَ مَالٌ لِغُلَامِهِ لَا يَكُونُ الرِّبْحُ لِلسَّيِّدِ حَتَّى يَنْتَزِعَهُ مِنْهُ وَهُوَ بِمَنْزِلَةِ غَيْرِهِ مِنْ كَسْبِهِ
মালিক (রহঃ) বলেনঃ মুযারাবাত বা শরীকী কারবার এইভাবে বৈধ যে, কেহ কাহারও নিকট হইতে এই শর্তে টাকা নেয় যে, সে শ্রম ও মেহনত করিবে। ক্ষতি হইলে সে দায়ী থাকিবে না। সফরে খাওয়া-দাওয়া এবং বহন খরচ ও অন্যান্য বৈধ খরচ ঐ মাল হইতে নিয়ম মাফিক ব্যয় করা হইবে মূলধন অনুযায়ী। অবশ্য অর্থ গ্রহণকারী আবাসে থাকিলে মূলধন হইতে ব্যয় করিতে পারবে না।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি অর্থ গ্রহণকারী অর্থদাতাকে, অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারীকে তাহার শ্রমের পরিমাণ মতো কোন শর্ত ব্যতীত সাহায্য করে তবে তাহাতে কোন ক্ষতি নাই। যদি অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারী হইতে শর্ত ব্যতীত কোন বস্তু খরিদ করে তবে ইহাতেও কোন ক্ষতি নাই।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে এবং স্বীয় দাসকে শরীকী কারবারের জন্য অর্থ দেয় এবং এই শর্ত করে যে, উভয়ই ইহাতে কাজ করিবে, তবে তাহা জায়েয আছে। কারণ নির্ধারিত লভ্যাংশের মালিক ক্রীতদাস হইবে, তাহার প্রভু উহা ছিনাইয়া লইতে পরিবে না, এই মালের স্বত্বাধিকারী ক্রীতদাসই থাকিবে।
(মুয়াত্তা মালিক ১৩৮৯)
প্রশ্নোক্ত ব্যবসায়িক চুক্তিটিকে ফিকহে ইসলামীর পরিভাষায় ‘মুদারাবা’ চুক্তি বলে। এতে মূলধন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসা পরিচালনাকারীর জন্য
শতকরা হারে লভ্যাংশ বণ্টনের চুক্তি করতে হয়। কারো জন্য নির্দিষ্ট বেতনভাতা বা নির্দিষ্ট কোনো কিছুর চুক্তি করা জায়েয নেই। অতএব ব্যবসা পরিচালনাকারী কেবল নির্ধারিত পরিমাণ লভ্যাংশই গ্রহণ করতে পারবে। তার জন্য ভিন্নভাবে কোনো বেতনভাতার চুক্তি করা যাবে না।
অবশ্য ব্যবসার স্বার্থে যে খরচ হবে যেমন, পণ্য ক্রয়বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে যাতায়াত ভাড়া, থাকা-খাওয়ার বাস্তব খরচাদি গ্রহণ করতে পারবে এবং এ ধরনের খরচ পরিশোধের পরই ব্যবসার লাভ-লোকসানের হিসাব হবে।
(কিতাবুল আছল ৪/২৯১; মাজাল্লা মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী ১৩/৩/২৯৪; আলমাআইরুশ শরইয়াহ ২৪০, ২৪২, ২৫১; আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১২৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/২৮৭; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১১৯)
قال صاحب الهداية: (وَمِنْ شَرْطِهَا أَنْ يَكُونَ الرِّبْحُ بَيْنَهُمَا مُشَاعًا لَا يَسْتَحِقُّ أَحَدُهُمَا دَرَاهِمَ مُسَمَّاةً) مِنْ الرِّبْحِ لِأَنَّ شَرْطَ ذَلِكَ يَقْطَعُ الشَّرِكَةَ بَيْنَهُمَا وَلَا بُدَّ مِنْهَا كَمَا فِي عَقْدِ الشَّرِكَةِ.(الهداية-3/226)
وشرط تسلیم المال إلی المضارب بلا ید لرب المال فیہ عاقداً کان أو غیر عاقد ․․․․ وکون الربح بینہما مشاعاً ، فتفسد إن شرط لأحدہما عشرة دراہم مثلاً (ملتقی الابحر مع مجمع الأنہر: ۳/۴۴۵) وفیہ (۳/۴۵۸) وماہلک من مال المضاربة صرف إلی الربح أوّلاً ، فإن زاد علی الرّبح لایضمن المضاب الخ
যার সারমর্ম হলো কেহ যদি নির্দিষ্ট পরিমান লাভের চুক্তি করে,তাহলে এটা নাজায়েজ হবে।
হ্যাঁ শতকরা হারে লভ্যাংশ নির্দিষ্ট হতে হবে।
পার্সেন্টস হিসেবে যতটুকু উভয় চুক্তিকারী সম্মত হয়, ততটুকু মুনাফা গ্রহণই জায়েজ আছে। এখানে কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট নেই। বাকি মুনাফার পার্সেন্ট উভয় চুক্তিকারীর সম্মতিক্রমে হতে হবে।
নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বা বস্তু নির্দিষ্ট করা বৈধ নয়।
যেমন টাকা প্রদানকারী এ কথা বলল যে, লাভের ৫০/৬০/৭০ পার্সেন্ট আমাকে দিতে হবে। এতে উভয় চুক্তিকারী সম্মত হল। তাহলে চুক্তিকৃতি মুনাফা অর্থেদাতা পাবে, আর বাকিটা পাবে মুদারিব।
কিন্তু যদি একথা বলতো যে, লভ্যাংশ থেকে ৫ হাজার টাকা আমাকে দিতে হবে। অর্থাৎ পার্সেন্টস নির্দিষ্ট না করে পরিমাণ নির্দিষ্ট করে, তাহলে উক্ত চুক্তি বৈধ হবে না।
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ঐ ব্যাক্তির জন্য এক ভাগ বেতনভাতা বা নির্দিষ্ট কোনো যাতায়াত বাবদ খরচ এর চুক্তি করা জায়েয নেই। ব্যবসা পরিচালনাকারী কেবল নির্ধারিত পরিমাণ লভ্যাংশই গ্রহণ করতে পারবে। তার জন্য ভিন্নভাবে কোনো বেতনভাতার চুক্তি করা যাবে না।
অবশ্য ব্যবসার স্বার্থে যে খরচ হবে যেমন, পণ্য ক্রয়বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে যাতায়াত ভাড়া, থাকা-খাওয়ার বাস্তব খরচাদি গ্রহণ করতে পারবে এবং এ ধরনের খরচ পরিশোধের পরই ব্যবসার লাভ-লোকসানের হিসাব হবে।
তারপর শতকারা হারে চুক্তি মোতাবেক লভ্যাংশ সকলের মাঝে বন্টন করে দিতে হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত সকলের লাভ নেওয়া জায়েয হলেও ব্যবসা পরিচালনা কারীর বেতন বাবদ এক ভাগ,যাতায়াত বাবদ এক ভাগ নেওয়া জায়েয নেই।
এক্ষেত্রে করনীয় হলো কোনো পরিমাণ নির্দিষ্ট না করে লভ্যাংশ থেকে যাতায়াতের খরচ ধরতে হবে,অনেক সময় সেটা এক ভাগ থেকে কম বা বেশি হতেও পারে।
বেতন বাবদ সে কিছুই নিবেনা।
দরকার পরলে লভ্যাংশের ভিতর তার পার্সেন্টস বেশি করে ধরে চুক্তি করে নিতে হবে