ব্রণ ও নাপাকি নিয়ে প্রশ্ন

Question

১.আজকে গোসলের পর মুখে পাকা ব্রণ দেখতে পাই। এরপর আমি চাপ দিয়ে সেই ব্রণ গালিয়ে দেই। এরপর পুজ বের হয় এবং রক্ত বের হয়। আমি তা হাত দিয়ে মুছে তা ধুয়ে ফেলি। এরপর আমি পাঞ্জাবি তে মুখ মুছে ফেলি। কিছুক্ষণ পর মানে ৫ মিনিট এর মত হবে তখন সেই স্থানে রক্তযুক্ত তরল পদার্থ দেখতে পাই। মুটামুটি ভালই ছিল। তবে তা গড়িয়ে পড়েনি। পরে তা আবার হাত দিয়ে মুছে ধুয়ে ফেলি।

আমার পাঞ্জাবি কি নাপাক হয়ে গেছে? আমার ভয় হচ্ছে যে ধোয়ার সময় হয়তো এমনও হতে পারে যে তা গড়িয়ে পড়বে। যেহেতু, ২য় বারও মুটামুটি ভালই রক্তযুক্ত পানি বের হয়েছে।

আমি পবিত্রতার ব্যাপারে মারাত্মক ওয়াসওয়াসায় ভুগছি তাই সিন্ধান্ত নিতে পারছিনা।

২. আমার স্যান্ডেল এর ফিতা কাপড়ের। এখন সেই ফিতায় অদৃশ্য নাপাক লাগলে স্যান্ডেল কিভাবে পাক করবো?

৩. এই ঘটনার ৩ ঘন্টা পর উক্ত স্থানে আংগুল ঘষলে কি আংগুল নাপাক হবে? তখন উক্ত স্থান ভিজা ছিল কি না আমি নিশ্চিত না।

৪. আমি খুবই কষ্টে আছি ওয়াসওয়াসা নিয়ে। আমি পাত্তা দিতে চাই না। কিন্তু ওয়াসওয়াসা অনুযায়ী কাজ না করলে মারাত্মক অস্থির লাগে। ১ বছর ধরে ভুগছি। চিকিৎসা করেও ফল পাইনি। কি করবো হুজুর? কাপড় ধুইতে ধুইতে আমার টন্সিন হয়ে গেছে। শরীর জ্বর জ্বর অনুভব হয়। পায়খানা করা আমার কাছে খুবই কষ্টের বিষয় মনে হয়। কারণ, আমি নাপাক থেকে রক্ষা পেতেই পারি না। তাই, প্রশ্রাব পায়খানা আসলেই ভয় লাগে। আমার জন্য কি শরিয়তের শিথিলতা রয়েছে?

৫. হাতের আংগুলে নাপাকি লেগে গেলে প্রতিটি নোখ পরিষ্কার করা কি বাধ্যতামূলক?

৬. আমার প্রচুর ওয়াসওয়াসা। আজকে ভেসিনে নাপাক ছিল। সে আজ হাত দিয়ে ভেসিন দেখাইছিল। তবে, সেই নাপাক স্থানে স্পর্শ লেগেছিল কি না আমি বুঝতে পারিনি। কারণ, সে খুব দ্রুত ভেসিন থেকে হাত সরিয়ে নিয়েছে। তার হাত ভেজা ছিল। এরপর সে ভেজা হাত দিয়েই বিভিন্ন জিনিস স্পর্শ করে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি নাপাকে হাত লেগেছিল কি না? সে উত্তর দিয়েছে লাগেনি। আমার কাছে মনে হচ্ছে লাগলেও হয়তো আমাকে বলবে না। কারণ, আমি তাকে হাত ধুতে বলবো। এখন সে ভেজা হাত দিয়ে যেসব জিনিস স্পর্শ করেছে সেগুলো কি পাক ধরে নিবো নাকি নাপাক? আমি নিশ্চিত না হাত লেগেছিল কি না?

৭. শুক্রবার রাতে আমার হাতে নাপাকি লেগেছিল। এরপর আমি ভেসিন এ হাত ধৌত করি। এতপরও আরও ৩ দিন অন্যান্য কাজে ভেসিন ব্যবহার করা হয়েছে। গতকাল (সোমবার) সেই ভেসিনে হাত লেগে গেলে হাত কি নাপাক হবে? আমার ভয় হচ্ছে হয়তো নাপাক হাত ধোয়ার সময় এমন জায়গায় পানি ছিটেছিল যেখানে হয়তো গত ৩ দিনে সেখানে পানি পৌছায়নি। এমনতো হতে পারে গতকাল সেই জায়গাতেই হাত লেগেছিল যেখানে ৩ দিন কোন পানি পৌছায়নি। যদিও ভেসিন প্রতিদিনই ব্যবহার করি।

৮. কোথায় বাতাড়ির (ছোট ইদুরের) মুত্র লাগলে যদি সেটা শুকিয়ে যায় এবং সেই স্থানে হাত লাগলেও যদি হাত এ গন্ধ চলে আসে তাহলে কি সেই হাত নাপাক হয়ে যাবে? সেই গন্ধযুক্ত হাত দিয়ে মোবাইল স্পর্শ করলে মোবাইল কি নাপাক হয়ে যাবে? এটা সকালে ঘটেছিল। ঘটনা ঘটার ৪ ঘন্টা পর মোবাইলে গন্ধ চেক করেছি কোন গন্ধ পাইনি। আমার হাত শুকনো ছিল

কিন্তু আমার মোবাইল গ্লাসের হওয়ায় কিছুক্ষণ হাতে মোবাইল রাখলে সামান্য ভেজা ভেজা ভাব অনুভব হয়।

৯. নাপাক হলে হোক - এই ধারণা নিয়ে কি আমি জীবন যাপন করতে পারবো? কারণ, আমার পক্ষে এখন পাক নাপাক আলাদা করা কঠিন হয়ে গিয়েছে।

১০. হাতে নাপাকি লাগার পর আমি অনেক্ষণ যাবত হাত ধুয়েছিলাম। হাত ধুয়ে আসার পর হাতের উপরে পানির ফোটা দেখতে পাই। সেই ফোটা কাপড়ে মুছে ফেলেছি। সেই কাপড় কি নাপাক হয়ে গেছে? সেই ফোটা কি নাপাক ছিল? এমনতো হতে পারে নাপাকি ধোয়ার শুরুতেই সেই ফোটা লেগেছিল?

Answer 1

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইয়াকিন বিশ্বাস ব্যতিত কোনো হুকুম প্রমাণিত হয়না।
যেমন ইতিপূর্বে একটি মূলনীতি আমরা উল্লেখ করেছি যে,
আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,
اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ}
ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]

মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই,
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনার প্রশ্নটি অস্পষ্ট।তাই আপনাকে অনুরোধ করবো, আপনি কমেন্টে বুঝিয়ে লিখবেন।

যতটুকু বুঝেছি, সেই আলোকে বলছি, ব্রণ থেকে পানি নিজে নিজে বের হয়ে স্বস্থান ত্যাগ করলে উক্ত পানি নাপাক হিসেবে বিবেচিত হবে।এবং অজুও চলে যাবে।আর স্বস্থান ত্যাগ না করলে সেই পানিও নাপাক হবে না এবং অজুও নষ্ট হবে না।

(২) স্যান্ডেল এর ফিতা যদি কাপড়ের হয়,এবং সেই ফিতায় অদৃশ্য নাপাকি লাগে,তাহলে সেই ফিতাকে তিনবার ধৌত করতে হবে।

(৩) এই ঘটনার ৩ ঘন্টা পর উক্ত স্থানে আঙ্গুল ঘর্ষণ করলে যদি সেই স্থান ভিজা না থাকে, তাহলে আঙ্গুলও নাপাক হবে না।

Comments

সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।