আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
297 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১) গত ফাতওয়া 6275 অনুসরণে- এক তালাক যখন দিয়েছিলো, তখনও সে স্বামীর বাড়িতে ছিলো বলে জেনেছি। দ্বিতীয় তালাক যখন দিয়েছিলো, তখনও সে স্বামীর বাড়িতে ছিলো বলে জেনেছি,  এখন স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায়ই রজাআত কীভাবে করতে হবে?

২) বিয়ে করার সময়ই যদি স্বামী মোহর লিখা হলেও মোহর না দেবার নিয়্যাত করে নেয়, তবে বিয়ে কি শুদ্ধ হবে?

৩) বিয়ের ৩২ বছর পর স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে মোহর আদায়ের দাবি করলে যদি জানতে পারে যে, স্বামীর পরিশোধের নিয়্যাত নেই, তবে তাদেের স্বামী স্ত্রী সুলভ আচরণ বা কথাবার্তা কি বৈধ হবে?

৪) স্বামী যদি বলে যে, তোমার কারণে অন্যান্য অনেক দিক থেকে এতো এতো টাকা নষ্ট হইসে, তাই তোমার মোহর পরিশোধ হয়ে গেছে- এই কথা কি গ্রহণযোগ্য? অর্থাৎ সে আর মোহর দিবে না

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
এক তালাক দেওয়া পর স্বামীর বাড়ীতে যদি স্ত্রী থাকে,এবং ইদ্দতের ভিতর স্বামীর সাথে সহবাস বা এ জাতীয় কিছু হয়ে থাকে,তাহলে রাজ'আত হয়ে গেছে।
তবে যদি স্বামী বিদেশ থেকে তালাক দেয়,এবং স্ত্রীর তিন হায়েয এর ভিতর স্বামী বিদেশ থেকে দেশে চলে না আসে,তাহলে যখনই ইদ্দত খতম হবে,সাথে সাথেই তালাক রাজয়ী টি বায়িন তালাকে পতিত হবে।


মহরকে নগদ বা বাকীতে রাখা স্ত্রী বা স্ত্রীর অভিভাবকের সন্তুষ্টির উপর নির্ভরশীল।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاء إِلاَّ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ كِتَابَ اللّهِ عَلَيْكُمْ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَاء ذَلِكُمْ أَن تَبْتَغُواْ بِأَمْوَالِكُم مُّحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً وَلاَ جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُم بِهِ مِن بَعْدِ الْفَرِيضَةِ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।(সূরা নিসা-২৪)

নগদ বা বাকী যেকোনো প্রকারের মহর সম্পর্কে যখন স্বামী স্ত্রী পরস্পর সম্মত, তখন সেই চুক্তিকে বাস্তবায়ন করা জরুরী।
কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
 (الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ) 
মুসলমান তার কৃত চুক্তি ও ওয়াদা সমূহকে অত্যাবশ্যকীয় ভাবে পূর্ণ করবে।

উকবা ইবন আমির (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ أَحَقَّ الشُّرُوطِ أَنْ يُوَفَّى بِهِ مَا اسْتَحْلَلْتُمْ بِهِ الْفُرُوجَ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সর্বাধিক পালনীয় শর্ত হলো তোমরা যা দ্বারা মহিলার লজ্জাস্থান হালাল করবে, তা আদায় করা।(সুনানু নাসাঈ-৩২৮৫)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যুগে নগদ মহরের আলোচনাই পাওয়া যায়।এবং সাহাবায়ে কেরামের যুগেও নগদ মহরের আলোচনা পাওয়া যায়।তবে যেহেতু মহর স্ত্রীর হক,তাই সে চাইলে তার হককে দেড়ীতে উসূল করতে পারবে।এ বিষয়ের সম্পূর্ণ অধিকার শরীয়ত স্ত্রীকে দিয়েছে।সুতরাং সে হিসেবে নগদ মহরের শর্তে বিয়ের পর মহর উসূলের পূর্বে স্ত্রী তার স্বামীকে সহবাস থেকে বাধা প্রদাণ করতে পারবে।


(২)
বিয়ে শুদ্ধ হবে।এমনকি যদি স্বামী মহর না দেবার শর্ত করে বিয়ে করে,তবেও বিয়ে শুদ্ধ হবে।এবং মহর ওয়াজিব হবে।ইসলামি সরকার স্বামীকে মহর প্রদানের জন্য বাধ্য করবে।কোর্ট বিচারের মাধ্যমে জোড় প্রদর্শনের মাধ্যমে মহর উসূল করা হবে।শরীয়তে এর অনুমোদন রয়েছে।


(৩)
স্বামীর মহর আদায়ের নিয়ত না থাকলে হবেনা।বরং স্বামীকে আদায় করতেই হবে।শরীয়ত কর্তৃক স্বামী বাধ্য।কাযী বা ইসলামী সরকার স্বামীকে বাধ্য করবে।স্বামী যাই নিয়ত করুক না কেন,তাদের মধ্যকার বিবাহ সম্পর্ক নষ্ট হবে না।


(৪)
স্বামী যদি বলে যে, তোমার কারণে অন্যান্য অনেক দিক থেকে এতো এতো টাকা নষ্ট হইসে, তাই তোমার মোহর পরিশোধ হয়ে গেছে- এই কথা গ্রহণযোগ্য নয়।বরং তাকে পৃথকভাবে মহর আদায় করতেই হবে।





(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (12 points)
উস্তায, iom এর ফিক্বহ্ ক্লাসে জেনেছি, মোহর আদায় করা ফরজ। মোহর পরিশোধের নিয়্যাত না থাকলে যিনায় লিপ্ত হবে- এটা কি ঠিক?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...