আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
373 views
in সালাত(Prayer) by (3 points)
উমরি কাযা কি? এটা কি সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত?  উমরি কাযার সালাত কিভাবে আদায় করতে হয়?
সালাত ফরজ হওয়ার পর অনেক অনেক সালাত কাযা হয়ে গেসে। তার পরিমাণ সঠিক মনেও নেই। এখন কিভাবে পড়তে হবে?
দয়া করে জানালে খুবই উপকৃত হতাম।

জাযাকিল্লাহু খইরন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

নামায কাযা হওয়ার দু'টি সূরত হতে পারে যথাঃ-
(প্রথমত) অনিচ্ছাকৃত নামায কাযা হয়ে যাওয়া।তথা শরয়ী কোনো উযরে নামায কাযা হয়ে যাওয়া।যেমন, ভূলে বা সঠিক সময়ে নামায পড়ার আখাঙ্কা থাকার পরও ঘুমের কারণে নামায কাযা হয়ে যাওয়া।এমতাবস্থায় সর্বসম্মতিক্রমে ঐ ব্যক্তির উপর স্বরণ হওয়া মাত্রই কাযা পড়া ওয়াজিব।
এর প্রমাণ হল নিম্নোক্ত হাদীস- 
ফজরের নামাযের সময়ে রাসূলুল্লাহ সাঃ সহ সাহাবায়ে কেরাম রাযি এর ঘুমের কিচ্ছা সম্ভলিত বর্ণনা। যখন সাহাবায়ে কেরাম ঘুম থেকে উঠার পর পরস্পর কানে কানে বলেছিলেন-
ٍ" ﻣَﺎ ﻛَﻔَّﺎﺭَﺓُ ﻣَﺎ ﺻَﻨَﻌْﻨَﺎ ﺑِﺘَﻔْﺮِﻳﻄِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺻَﻼﺗِﻨَﺎ " ﻓﻘَﺎﻝَ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ : " ﺃَﻣَﺎ ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻴْﺲَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﻮْﻡِ ﺗَﻔْﺮِﻳﻂٌ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺘَّﻔْﺮِﻳﻂُ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳُﺼَﻞِّ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺠِﻲﺀَ ﻭَﻗْﺖُ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ ﺍﻷُﺧْﺮَﻯ ﻓَﻤَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﺫَﻟِﻚَ ﻓَﻠْﻴُﺼَﻠِّﻬَﺎ ﺣِﻴﻦَ ﻳَﻨْﺘَﺒِﻪُ ﻟَﻬَﺎ ."
আমরা আমাদের নামায সম্পর্কে যে সীমালঙ্ঘন করেছি,সম্ভবত সেটা কোনো কাফফারা হবে না।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, ঘুমের মধ্যে কোনো সীমালঙ্ঘন নেই।সীমালঙ্ঘন তো হল সেই ব্যক্তির ব্যাপারে যে নামায পড়ল না অথচ আরেকটি নামাযের ওয়াক্ত তার সামনে চলে আসল।সুতরাং যে ব্যক্তি নামাযের সময়ে ঘুমিয়ে থাকবে, যখনই সে জাগ্রত হবে তখনই যেন সে নামাযকে পড়ে নেয়।(সহীহ মুসলিম-৬৮১)


এ হাদীসের এ অর্থ নয় যে,মানুষ ইচ্ছা করে ঘুমিয়ে যাবে,এবং তার নামায ছুটে যাবে।অতঃপর সে ঘুমকে উযর হিসেবে সাব্যস্ত করবে।অর্থাৎ নামাযের জন্য অন্তরায় মূলকরকোনো কাজকে সে বেছে নিবে,অতঃপর সে উক্ত কাজকে উযর হিসেবে পেশ করবে।
বরং মানুষের উপর ওয়াজিব যে,নামাযের সহায়ক সকল প্রকার আসবাবকে সে যথাসাধ্য গ্রহণ করবে।যেমন উপরোক্ত ঘটনায় রাসূলুল্লাহ সাঃ নামাযের সহায়ক যথাসাধ্য ব্যবস্থা করেছিলেন। কেননা সে ঘটনায় আমরা জানতে পেরেছি যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ একজন কে রাত্রে পাহারাদারি সহ ফজরের সময়ে জাগানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন।কিন্তু সেই ব্যক্তির চোখে প্রচন্ড রকমের ঘুম চলে আসার ধরুণ তিনি কাউকে জাগাতে পারেননি।সুতরাং এমন অবস্থায় লোকজন মা'যুর(শরীয়ত অনুমোদিত অপারগ) হিসেবে গণ্য হবে।

(দ্বিতীয়ত) 
ইচ্ছাকৃত নামাযকে ছেড়ে দেওয়া। এটা হল অনেক বড় গুনাহ এবং মারাত্মক অন্যায়। এমনকি অনেক উলামায়ে কেরাম একে কুফরি বলেও ফাতাওয়া প্রদাণ করেছেন।(মাজ'মু ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাত-১০/৩৭৪)
সমস্ত উলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে এমন ব্যক্তির উপর তাওবাহ করা ওয়াজিব। 
উক্ত ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া নামাযকে কি কাযা করা ওয়াজিব?
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতপার্থক্য রয়েছে- 
ঐ ব্যক্তির কাযা নামায কি এই মূহুর্তে কবুল হবে যদি সে কাযা করে নেয়? না কি কবুলই হবে না?

অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের অভিমত হল যে, সে উক্ত নামাযকে কাযা করে নিবে,কাযা করার ধরুণ তার পক্ষ্য থেকে সেই নামায আদায় হয়ে যাবে, যদিও সে এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে নামাযকে ছেড়ে দেওয়ার ধরুণ গোনাহগার হবে।তবে তাওবাহ করে নিলে তার ঐ গোনাহও(ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়ার গোনাহ) মাফ হয়ে যাবে।(আল্লাহ ভালো জানেন)
(ইবনে উছাইমিন-শরহুল মুমতি'-২/৮৮)

ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
 " ﻭﺗﺎﺭﻙ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻤﺪﺍ ﻻ ﻳﺸﺮﻉ ﻟﻪ ﻗﻀﺎﺅﻫﺎ ، ﻭﻻ ﺗﺼﺢ ﻣﻨﻪ ، ﺑﻞ ﻳﻜﺜﺮ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻄﻮﻉ ، ﻭﻫﻮ ﻗﻮﻝ ﻃﺎﺋﻔﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻠﻒ ". 
এমন ব্যক্তির পক্ষ্য থেকে কাযা নেই।এমনকি সে কাযা করে নিলেও তার পক্ষ্য থেকে কাযা কবুল হবে না।বরং এক্ষেত্রে তার দায়িত্ব হল সে কাযা না করে বেশী বেশী করে নফল নামায পড়বে।(আল-এখতিয়ারাত-৩৪)
সালাফদের একাংশের ও এ অভিমত।তাদের দলীল হল, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যুগে ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া নামাযের কাযা করার কোনো প্রচলন ছিলনা।
 
বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/968


https://www.ifatwa.info/1780 নং ফাতাওয়ায় আমরা লিখেছি,
সাবালক হওয়ার পর থেকে সকল কা'যা নামাযকে আদায় করতে হবে।এক্ষেত্রে কা'যা নামাযকে আদায় না করে শুধুমাত্র তাওবাহ ইস্তেগফার যথেষ্ট হবে না।বরং অবশ্যই আদায় করতে হবে।এবং সাথে সাথে তাওবাহ ইস্তেগফার জারী রাখতে হবে।
কখন থেকে এবং কোন পদ্ধতিতে কা'যা নামায-কে আদায় করতে হবে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1609



জীবনে কতটি দিন বা মাস কিংবা বৎসরের নামায কা'যা হয়েছে,সে বিষয়ে অধিকাংশ ধারণার উপর ভিত্তি করেই মূলত নামায-কে কা'যা করতে হবে।যখন মনের মধ্যে পূর্ণ ঈয়াক্বিন চলে আসবে যে,এখন থেকে আরো কোনো নামায কা'যা নেই।তখন থেকেই কা'যা নামায কে সমাপ্ত করা হবে।

তিনটি হারাম সময় ব্যতীত যেকোনো সময় কা'যা নামায পড়া যাবে। https://www.ifatwa.info/1604


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 232 views
...