আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
309 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (36 points)
আমি আমেরিকায় থাকি।আমি ও আমার মা জব করি।এখন কোভিড ১৯ এর জন্য সরকার থেকে বাসা ভাড়ার জন্য আর্থিক সাহায্য দিতে চাচ্ছে।এর মধ্যে আমার আম্মুর চাকরি চলে গেছে এক মাস আগে।তারা আমাদের মার্চ ও জুলাই মাসের ২ জনের উপার্জনের প্রমান ও বর্তমান  মাসের ব্যাংক statement চেয়েছেন যাতে আমাদের সাহায্য করতে পারেন।এখন আমরা কী যেকোন ১ জনের উপার্জন গোপন রেখে ও ব্যাংক থেকে টাকা সব তুলে ফেলে তারপর তাদের থেকে সাহায্য নিলে তা কী হালাল হবে?গতকাল সব জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল।২৪ ঘন্টার মধ্য উওর দিলে ভাল হত।কারন আমি শুধু আমার উপার্জন এর তথ্য এবং অন্য ব্যাংক যেখানে টাকা নেই তার statement দিয়েছি।দ্রুত উওর দিলে আমি তাদের সাথে কথা বলে এই ব্যাপারটা সমাধান করতে পারব?
by (597,330 points)
উপার্জন গোপন রাখলে টাকা দিবে কি?
by (36 points)
আরেকটি কথা এটা কী হালাল হবে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : (مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّي)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি কাউকে ধোকা দিবে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।(সহীহ মুসলিম-১০২)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রথম এভাবে নিজ ইনকাম লুকিয়ে সরকারের পক্ষ্য থেকে ভাতা বোনাস গ্রহণ ধোঁকা।আর ধোঁকা দেয়া শরীয়তে স্পষ্টত নাজায়েয। 
প্রশ্ন হতে পারে,
অমুসলিম সরকারের কাছে থেকে ছলে বলে কৌশলে আর্থিক লাভবান হওয়া কি নাজায়েয?

প্রতিউত্তরে বলা যায় যে,
যখন কোনো মুসলমান কাফির রাষ্ট্রে প্রবেশ করবে,তখন সে কিছু ওয়াদা ও চুক্তির মাধ্যমেই তথায় প্রবেশ করবে।কেননা সেই দেশের রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করলে ভিসা পাওয়া যাবে না।সুতরাং যখন কেউ অন্যায়ভাবে কোনো অমুসলিমের মালকে গ্রহণ করে নিবে,তখন সেটা চুরি হোক বা না হোক,অবশ্যই পূর্বের চুক্তির খেলাফ হবে।
 
সুতরাং মাল সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রহণ করা হারাম।এ সম্পর্কে কারো উযর এবং ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করা যাবে না।মুসলমানদের উচিৎ সেইসব আহলে কিতাবদের বৈশিষ্ট্যকে অনুসরণ না করা,যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمِنْهُم مَّنْ إِن تَأْمَنْهُ بِدِينَارٍ لاَّ يُؤَدِّهِ إِلَيْكَ إِلاَّ مَا دُمْتَ عَلَيْهِ قَآئِمًا ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواْ لَيْسَ عَلَيْنَا فِي الأُمِّيِّينَ سَبِيلٌ
আর তোদের মধ্যে অনেক এমনও রয়েছে যারা একটি দীনার গচ্ছিত রাখলেও ফেরত দেবে না-যে পর্যন্ত না তুমি তার মাথার উপর দাঁড়াতে পারবে। এটা এজন্য যে, তারা বলে রেখেছে যে, উম্মীদের অধিকার বিনষ্ট করাতে আমাদের কোন পাপ নেই। (সূরা আল-ইমরান-৭৫)

বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত রয়েছে যে,হযরত মুগিরাহ ইবনে শু'বা রাযি কাফির থাকাবস্থায় কিছু মানুষের সাথে মিশেছিলেন।অতঃপর তাদেরকে হত্যা করে তাদের মালকে ছিনিয়ে নিয়ে যান,অতঃপর তিনি ইসলাম কবুল করে নেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন,তোমার ইসলামকে তো আমি কবুল করলাম।তবে তোমার এই অন্যায়ভাবে গ্রহণকৃত মালকে গ্রহণ করা যাবে না।কোনো কোনো বর্ণনায় এভাবে এসেছে যে,তোমার সম্পদ এটা তো হল,ধোকার মাল,আর ধোকার মালে আমার কোনো প্রয়োজন নাই।(সহীহ বোখারী-২৫৮৩,সুনানে আবি দাউদ-২৭৬৫)

ইবনে হাজার রাহ বলেন,
وأما المال فلستُ منه في شيءٍ أي : لا أتعرض له لكونه أخذه غدراً ، ويستفاد منه : أنه لا يحل أخذ أموال الكفار في حال الأمن غدراً ؛ لأن الرفقة يصطحبون على الأمانة، والأمانة تؤدَّى إلى أهلها مسلِماً كان أو كافراً، وأن أموال الكفار إنما تحل بالمحاربة والمغالبة، ولعل النبي صلى الله عليه وسلم ترك المال في يده لإمكان أن يسلم قومه فيرد إليهم أموالهم
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলছেন,যেহেতু তুমি এই মালকে অন্যায়ভাবে গ্রহণ করেছো,তাই এ মালকে গ্রহণ করতে পারছি না।এত্থেকে বুঝা যায় যে,যে যুদ্ধাবস্থা ব্যতীত অন্যান্য সময়ে কাফিরের মালকে আত্মসাৎ করা গ্রহণ কখনো জায়েয হবে না।কেননা যুদ্ধাবস্থা ব্যতীত অন্যান্য সময়ে কাফিরের মাল গ্রহণ নাজায়েয। রাসূলুল্লাহ সাঃ ঐ মালকে মূল মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ না দিয়ে বরং ঐ সাহাবীর হাতে এ জন্য রেখে দিয়েছিলেন,হয়তো ঐ কওম পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে নিবে,এবং তারপরই ঐ মালকে সাহাবী মূল মালিকের নিকট ফিরিয়ে দিবেন।(ফাতহুল বারী-৫/৩৪১)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রথমত ধোকা হওয়ার কারণে এবং দ্বিতীয়ত  তাদের সাথে কৃত চু্ক্তির কারণে আপনি নিজ ইনকাম লুকিয়ে এভাবে সুবিধাদি গ্রহণ করতে পারবেন না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...