আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (75 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ হযরত,


১. নামাজে মাঝে মাঝে ইমামের কিরাআত শুনে যেকোনো আয়াতের একটা শব্দ নিজের মুখে বলে ফেলি, এতে নামাজ নষ্ট হবে?
যেমন:
ইমাম পড়ছেন, "মালিকি ইয়াও মিদ্দিন" আমি বলে ফেললাম "মালিক" তারপর থেমে গেলাম!

ইমাম পড়ছেন, "তব্বাত ইয়াদা আবি লাহাবিও ওয়া তাব্ব"

আমি বলে ফেললাম, "তব্বত, অথবা লাহাব" অতপর থেমে গেলাম।

২. গৃহপালিত পশু যদি কাউকে কষ্ট দেয়, অথচ কারো জিনিস খেয়ে ফেলে, কারো জায়গায় পায়খানা করলে আমি গুনাহগার হবো? (যদি পশুকে রশি ছাড়া ছেড়ে দেওয়া হয়।)

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
এতে নামাজ নষ্ট হবেনা।
তবে এভাবে পড়ার অনুমতি নেই।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْعَجْمَاءُ جَرْحُهَا جُبَارٌ وَالْمَعْدِنُ جُبَارٌ وَالْبِئْرُ جُبَارٌ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পশু-প্রাণীর আঘাতের কোনো ক্ষতিপূরণ নেই। খনিতে ক্ষতিপূরণ নেই এবং কূপে (পড়ে গিয়ে মারা গেলেও) কোনো ক্ষতিপূরণ নেই।
(সহীহ : বুখারী ৬৯১২, মুসলিম ১৭১০, আবূ দাঊদ ৪৫৯৩, নাসায়ী ২৪৯৫, তিরমিযী ৬৪২, ইবনু মাজাহ ২৬৭৩, আহমাদ ৭২৫৪, দারিমী ২৪২২, ইরওয়া ৮১২, সহীহ আল জামি‘ ৪১২৪।)

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ-

খত্ত্বাবী রহঃ বলেনঃ চতুস্পদ জন্তুর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত জিনিসের ক্ষতিপূরণ কারো ওপর বর্তায় না যখন তার সাথে কোনো চালক বা সওয়ারী না থাকে।

ইমাম নববী রহঃ বলেনঃ ‘আলিমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, দিবাভাগে চতুস্পদ জন্তুর অপরাধের কারণে কোনো ক্ষতিপূরণ নেই। তবে যদি তার সাথে কোনো আরোহী বা কোনো নিয়ন্ত্রণকারী থাকে তবে ‘আলিমগণের সর্বসম্মতিক্রমে তার ওপর ক্ষতির দায় বর্তাবে। আর যখন রাত্রিকালে এরূপ কোনো ক্ষতি সাধন করবে তখন তার মালিক ক্ষতির জন্য দায়ী হবে।

ইমাম শাফি‘ঈ রহঃ ও তাঁর সাথীবর্গ বলেন- যদি মালিক জন্তুকে সংরক্ষণের ব্যাপারে অবহেলা বা শিথিলতা অবলম্বন করে তাহলে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় দিতে হবে না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৭৪৫৮১)

সহীহ মুসলিম-এর ভাষ্যকার বলেন- জন্তুর মালিকের অবহেলা ছাড়া যখন প্রাণীটি দিনে বা রাতে কোনো অন্যায় করে বসে অথবা তার সাথে কোনো আরোহী বা নিয়ন্ত্রক না থাকে তাহলে তার ক্ষতির দণ্ড মাফ। তবে যখন তার সাথে চালক থাকে বা আরোহী যে নিয়ন্ত্রণ করে আর জন্তুটি হাত, পা বা মুখ অথবা কোনোভাবে ক্ষতি করে দিলে মালিককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। চাই সে মালিক হোক বা ভাড়ায় গ্রহণকারী হোক অথবা ধারকারী হোক, ছিনতাইকারী ও আমানত গ্রহণকারী হোক ও প্রতিনিধি হোক।

(جرح العجماء) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ধ্বংস সাধন করা বা নষ্ট করা। এটা আঘাত করার মাধ্যমে হতে পারে অথবা ক্ষতি করা হতে পারে। এই ক্ষতিটা জানের অথবা মালের হতে পারে। শাফি‘ঈ মতাবলম্বীগণ বলেন- যদি সে ক্ষতিটা إفسادً (তথা ক্ষতিসাধন করা) হিসেবে গণ্য করা হয় তবে সেক্ষেত্রে মালিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। কেননা তার দায়িত্ব হলো সেটাকে বেঁধে রাখা।

ইমাম মালিক রহঃ -এর মতে জন্তু রাত্রে অপরাধ করলে তার দায় বর্তাবে মালিকের ওপর। (শারহে মুসলিম ১১ খন্ড হাঃ ১৭১০)

قال ولو أرسل بهيمة فأفسدت زرعا على فوره ضمن المرسل وإن مالت يمينا أو شمالا وله طريق آخر لا يضمن لما مر ولو انفلتت الدابة فأصابت مالا أو آدميا ليلا أو نهارا لا ضمان على صاحبها لقوله عليه الصلاة والسلام جرح العجماء جبار۔(الهداية، كتاب الديات، باب جناية البهيمة والجناية عليها، ج:8، ص، 153 )
সারমর্মঃ-
কেহ যদি নিজ চতুষ্পদ জন্তুকে পাঠায়,জন্তুটি যদি তৎক্ষনাৎ ক্ষেত নষ্ট করে ফেলে,তাহলে পশুর মালিক এর ক্ষতিপূরণ এর জামিন হবে।

إذا أرسل دابة في طريق المسلمين فما أصابت في فورها فالمرسل ضمن؛ لأن سيرها مضاف إليه ما دامت تسير على سننهاولو انعطفت عنه يمنة أو يسرة انقطع حكم الإرسال إلا إذا لم يكن له طريق آخر سواه وكذا إذا وقفت ثم سارت أي ينقطع حكم الإرسال بالوقفة أيضا كما ينقطع بالعطفة۔(البحر الرائق، كتاب الديات، باب جناية البهيمة والجناية عليها، ج:9،  ص:138)
সারমর্মঃ-
কেহ যদি নিজ চতুষ্পদ জন্তুকে রাস্তায় পাঠায়,জন্তুটি যদি তৎক্ষনাৎ ক্ষেত নষ্ট করে ফেলে,তাহলে পশুর মালিক এর ক্ষতিপূরণ এর জামিন হবে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
গৃহপালিত পশু যদি কাউকে কষ্ট দেয়,তাহলে আপনি গুনাহগার হবেননা।
কারো জায়গায় পায়খানা করলে আপনি গুনাহগার হবেননা।

কাহারো যদি ক্ষতি করে সেক্ষেত্রে বিধানঃ-
উক্ত প্রানী যদি বাধা থাকা অবস্থায় বা মালিক বা রাখালের উপস্থিতিতে অন্যের ক্ষতি করে,তাহলে মালিকের ক্ষতি পূরন দিতে হবে। 

আর যদি ছেড়ে দেয়া থাকে,তার সাথে যদি মালিক বা রাখাল কেউ না থাকে,সেক্ষেত্রে মালিকের ক্ষতিপূরন দিতে হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (0 points)
শায়েখ প্রশ্ন করা যায় না
by (75 points)
উস্তাদ, যদি ঘোড়ার উপর সওয়ার থাকা অবস্থায় ঘোড়া কারো উপরে উঠে যায়, তাহলে আমার গুনাহ হবে?
by (573,870 points)
এক্ষেত্রে কোনো ক্ষতি হলে সেই ক্ষতিপূরণ আপনাকে করতে হবে।
ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও ক্ষতিপূরণ না করলে গুনাহ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 172 views
...