আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (36 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায,
নিম্নোক্ত লেখাটির কি কোনো তাহক্বীক আছে?যদি না থাকে অনুগ্রহপূর্বক যদি একটু তাহক্বীক করে দিতেন।এখানে কিছু দার্শনিক এবং ইসলামিক স্কলারদের বক্তব্য দেয়া আছে।তাদের এরকম কথা আসলে কোনো কিতাব বা বিশ্বস্ত সোর্স থেকে নেয়া হয়েছে কি?

❝দার্শনিক ইবনে সিনা বলেন
এক স্ত্রী বিশিষ্ট পুরুষদের দেহ মন অসুস্থ থাকে। উঠতি যুবক হওয়া সত্বেও তাদেরকে বার্ধক্য পেয়ে বসে। হরহামেশা গিরায় গিরায় ব্যাথা,  হাটু ও মেরুদণ্ডের সমস্যার অভিযোগ করে। মনের প্রফুল্লতা বিদায় নেয়।  সর্বদা বন্ধুদের কাছে হা- হুতাশ, অসহায় মনোভাব ও নেতিয়ে পড়ার অভিযোগ করে ফিরে।

কাজি ইবনে মাসউদ বলেন
এক স্ত্রীর স্বামি মানুষের মাঝে বিচার ফায়সালা দেওয়ার মত উচ্চ ও সুক্ষ্ম মানসিকতার হয় না।

ইবনে হাইয়্যান আত্বাওহিদী বলেন
আমি একদল এমন সুপুরুষদের কথা জানি যারা এক স্ত্রীতে বিশ্বাসীদের সাথে বৈঠকে বসতেন না।
তারা এমন লোকদেরকে আধাপুরুষ ও নগণ্য মনে করতেন।

ইতিহাসবেত্তা   ইবনে খালদুন বলেন
ফেতনা ফাসাদে  জর্জরিত জাতিদের সমস্যাগুলো যখন আমি পর্যবেক্ষক করলাম -দেখলাম তাদের অনুন্নত চিন্তা ও দুর্বল মনোবৃত্তির পিছনে তাদের  এক স্ত্রীতে অভ্যস্ত হওয়ার সমস্যা ই প্রধান।

আবেদ ইবনে মাইসার বলেন
যার মাত্র এক স্ত্রী তার ইবাদত যথাযথ ভাবে আদায় হয়না।

খলিফা হারুনুর রশিদের ছেলে খলিফা মামুনকে  বলা হলো ---
বসরায় কতেক গোত্র রয়েছে যেখানকার পুরুষরা এক স্ত্রীতে বিশ্বাসী ।
মামুন বললেন-
তারা পৌরুষে কামেল নয়। প্রকৃত পুরুষদের একাধিক স্ত্রী থাকে। তারা স্বভাবজাত পৌরষের বিরুদ্ধে এমনকি তারা নবীর সুন্নাহ বিরোধীও।

ইউনুছ বিন মুজানীকে বলা হলো
ইহুদী খৃষ্টানরা  কেন একাধিক স্ত্রী কে অস্বীকার করে ?
তিনি বললেন ---- তারা হলো এমন জাতি --
যাদের উপর লাঞ্চনা  ও দারিদ্র্যতা চাপিয়ে দেওয়া হলো আর তারা আল্লাহর ক্রোধে পতিত হলো। (সুরা বাকারা 61)

আবু মারুফ কারখীকে বলা হলো ---
দুনিয়া ত্যাগীদের ব্যাপারে আপনার মতামত কি যারা এক স্ত্রীকেই যথেষ্ট মনে করে  ?
তিনি বললেন ---  আর কি ! এরা পাগলের দল !
দুনিয়া বিমূখতায় তারা নিজেরা  এমন স্তরে  পৌছে গেছে মনে করে যেখানে একাধিক স্ত্রীর অধিকারী আবুবকর,  ওমর, ওসমান, আলী রাঃ মত মনিষীরাও পৌছাতে পারেনি !

ইবনে ফাইয়্যাদ কে এক স্ত্রীতে বিশ্বাসী পুরুষদের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন---
তারা পানাহার করে,  শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ করে ঠিক কিন্তু তারা মৃত।

 ইবনে ইসহাক যখন নিশাপুরের গভর্নর হলেন তখন তিনি এক স্ত্রীর স্বামীদের রাষ্ট্রীয় অনুদান বন্ধের নির্দেশ  দিলেন।  তারা অভিযোগ করে বলল--  আপনি এমনটা কেন করলেন ?
তিনি বললেন -- এসব আল্লাহর মাল,   অকর্মণ্য বেকুবদেরকে এসব দেওয়া হয়না।

 ইবনে আতাউল্লাহ এক স্ত্রীর পুরুষদের ব্যাপারে  বললেন---
যারা বড়দের ( নবিজী সাঃ ও সাহাবাগণ)  সুন্নাহের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারেনা আমরা তাদেরকে নগণ্য ও পুচকে মনে করি।

আল্লামা ত্বকিউদ্দীন মুজানী যখন সমরকন্দের "ফকীহ " পদে অধিষ্ঠিত হলেন তখন লোকেরা তাঁকে এক স্ত্রী বিশিষ্ট পুরুষদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করল।
তিনি বললেন, তারাও কি মুসলমান! (তিনি তাদের ঈমানের পূর্ণতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন)
তখন তিনি তাদেরকে নসীহাহ করে পরামর্শ দিলেন ।
দেখা গেল একমাসও পার হয়নি  এরই মাঝে  প্রায় তিন হাজার পুরুষ তাদের মাসনা সেরে ফেলল !
পরিস্থিতি  একপর্যায় এমন দাঁড়ালো যে -- অত্রাঞ্চলে কোন কুমারী,  অকুমারী,  বিধবা  আর অবশিষ্ট রইলনা।

 ইমাম হোসরী বলেন
আল্লাহ যখন বিবাহনীতির কথা আলোচনা করেছেন তখন মাসনা দিয়ে শুরু করেছেন- ওয়াহিদা দিয়ে শুরু করেননি বরং ওয়াহিদার স্বামীদেরকে  " খিফতুম " শব্দ দ্বারা  ভীতুদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাদের অসম্পূর্ণতার জানান দিয়েছেন ৷

এক শায়েখের স্ত্রীকে জিজ্ঞাস করা হল আপনার স্বামীকে একাধিক বিয়ে করেত দেখে আপনার কষ্ট হয়না?

;তিনি বলেন,মানুষ হিসেবে কষ্ট পেয়েছি।কিন্তু আল্লাহ তাকে ৪টি বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন।আল্লাহর অনুমতিতে আমি কিভাবে বাধা দিতে পারি?

দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে,বর্তমানে আলিমরাই একাধিক বিয়ে করতে সাহস পাননা।অথচ তাদেরকেই এ ট্যাবুটি সমাজ থেকে দূর করতে হবে।❞

1 Answer

0 votes
by (565,350 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-


https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে ,
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع 
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক। 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ। 

এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না। 

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান। 

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত লেখাটির তাহক্বীক আমাদের কাছে নেই।
আপনি যেখানে এই লেখা পেয়েছেন,সেখান থেকেই এর তাহক্বীক করে নিতে পারেন।

তবে এই মাসয়ালার ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান বিস্তারিত ভাবে উপরে উল্লেখ রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...