ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/59812/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছ যে,
আমাদের জানা মতে বাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে
ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না। তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না
রাখা ভাল। কিন্তু প্রয়োজন হওয়ার কারণে কারেন্ট একাউন্ট খোলা জায়েজ। ডিপোজিট এ
জাতীয় দীর্ঘমেয়াদী কোন একাউন্ট খোলা জায়েজ হবে না।
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল
সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে
আহমাদ,
হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা,
হাদিস নং-৪৯৮১)
তবে যেহেতু বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকগুলো ছাড়া বাকি
ব্যাংকগুলো আমভাবে সুদী কারবার করে থাকে। শরয়ী বিধানের কোন তোয়াক্কাই করে না। সেই
হিসেবে ইসলামী ব্যাংকগুলো শরয়ী বিধান পালনের কিছুটা হলেও চেষ্টা করে থাকে। যদিও
পূর্ণাঙ্গ শরয়ী রুলস তারাও অনুসরণ করে না বলেই আমরা জানি। কিন্তুর মন্দের ভাল
অবশ্যই। তাই অন্য ব্যাংকে একাউন্ট খোলার তুলনায় ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা
নিরাপদ বলেই মনে হয়। বাকি আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন।
আর যদি কারেন্ট একাউন্ট খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে বাধ্য হলে ডিপোজিট ও দীর্ঘমেয়াদী একাউন্টও জায়েজ আছে।
তবে ডিভিডেন্টটি সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবে।
فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ [٢:١٧٣
অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও
সীমালঙ্ঘনকারী না হয়,
তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু। (সূরা বাকারা-১৭৩)
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন/বোন!
১. ইসলামী ব্যাংকগুলো এব্যাপারে পরিপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দেয়
যে,
তারা সুদের ভিত্তিতে নয়; বরং লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে ইসলামের পূর্ণ রীতি মেনে ব্যাংকিং করে, সেহেতু তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা- গ্রহণ করে নিজেদের
জন্য খরচ করাটা কিছু আলেম নাজায়েয মনে করেন না।
কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো ইসলামের পূর্ণ
রীতি মেনে ব্যাংকিং করে কিনা–এ নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ আছে। তাই তাদের সঙ্গে কোনো
ধরণের মুনাফা-চুক্তি না করাটাই হল তাকওয়ার পরিচায়ক। তবে প্রয়োজনের খাতিরে একাউন্ট
খোলা নিষেধ নয়। আর যে লভ্যাংশ দিবে, তা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দেওয়াটাই উত্তম হবে। কেননা الضرورات
تبيح
المظورات তীব্র প্রয়োজন নিষিদ্ধ বিষয়কে বৈধ করে দেয়। (শরহুল
কাওয়ায়িদিল ফিক্বহ লিজ জারক্বা, কায়দা নং-২০)
এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন না করলে
তাদের গুনাহ হবে এবং গ্রাহকের জন্য সন্দেহজনক মুনাফা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। বরং
তা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দেওয়াটাই উত্তম হবে।
২. যদি ব্যাংকের এমন
কোনো সেক্টরের কাজ হয়, যাতে সুদী কাজে জড়িত হতে
হয় না। যেমনঃ ড্রাইভার, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়, তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি সুদের সহায়তা নেই তাই এমন
সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। আর তার চাকরীর ধরণের (সে সুদি
কারবারের সাথে জড়িত কি না) উপর ভিত্তি করে তাকে বিয়ে করা বা না করা বিষয়ে
সিদ্ধান্ত নিবেন।