আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
254 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
reshown by
১.স্বামী যদি তালাকের মজলিসে স্ত্রীকে বলে যদি পড়শুনা করো তাহলে আমার ঘরে থাকতে পারবা না? একথা বলাতে কি নিয়ত ছাড়াই তালাক হবে?
২.স্বামী যদি তালাকের মজলিসে স্ত্রীকে বলে যদি পড়শুনা করো তাহলে আমার সংসারে থাকতে পারবা না?এ কথা বলাতে কি নিয়ত ছাড়াই শর্তযুক্ত তালাক হবে?

৩.স্বামী যদি তালাকের মজলিসে স্ত্রীকে বলে যদি পড়শুনা করো তাহলে আমার ঘর থেকে চলে যাবা বা চলে যেতে হবে।একথা বলাতে কি নিয়ত ছাড়াই শর্তযুক্ত তালাক হবে?

৪.আমার নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে প্রায় প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজেই একটা না একটা সন্দেহ হয়েই চলছে কত রাকাত নামাজ পড়লাম ৩ নাকি ৪, সেজদা ২ টা নাকি একটা দিলাম,রুকু করলাম কিনা,তাশাহুদ পড়লাম কিনা ১ম বৈঠকে।যতই মনযোগী সহকারে নামাজ পড়তে চাইনা কেন কি করে যেন হঠাৎ অমনোযোগী হয়ে এধরনের সন্দেহ হয়।যেকারনে এক নামাজ ২/৩ বারও পড়তে হচ্ছে আবার না হলে সহু সেজদা দিতে হচ্ছে আবার এমন ও হয় সহু সেজদা ১ টা দিলাম না ২ দিলাম এটা নিয়েও সন্দেহ হয়।একা কথায় নামাজ নিয়ে এমন হচ্ছে।এ ক্ষেত্রে আামার করনীয় কি আমি কি সন্দেহ হলেও এটাকে পাত্তা দিবনা?আমি আর পারছিনা এ কস্ট নিতে।ওজু করার ক্ষেত্রেও অনেক সময় এমন হচ্ছে মনে হয়।সব কিছুতেই সন্দেহ।

1 Answer

0 votes
by (574,410 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
না,তালাক হবেনা।

(০২)
না,এক্ষেত্রে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৩)
এক্ষেত্রেও কোনো শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৪)
নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)

যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ওই ব্যক্তি যেদিকে তার মন বেশি যায় (প্রবল ধারণা হয়), সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যার ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে, শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاَثًا أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلاَتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ " .

মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন রাকাআত আদায় করা হলো না চার রাকাআত আদায় করা হলো- সালাতের মধ্যে তোমাদের কারো এরূপ সন্দেহ হলে সে যে কয় রাক’আত আদায় করেছে বলে নিশ্চিত হবে (তিন রাকাআত) সে কয় রাকাআতকে ভিত্তি ধরে অবশিষ্ট করণীয় করবে। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সিজদা করবে। (এখন) সে যদি পাঁচ রাকাআত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু' সিজদা দ্বারা তার সালাতের জোড়া পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত চার রাকাআত হয়ে থাকে তাহলে (এই) সিজদা দুটি শয়তানের মুখে মাটি নিক্ষেপের শামিল হবে। (মুসলিম ১১৫৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫২, ইসলামীক সেন্টার ১১৬১)

যদি এক সেজদার উপর প্রবল ধারনা হয়,তাহলে আরো এক সেজদাহ আদায় করবে,আর দুই সেজদার উপর প্রবল ধারনা হলে সে আর সেজদাহ দিবেনা,উভয় ছুরতে শেষে সেজদায়ে সাহু দিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

لقوله صلى الله عليه وسلم: "إذا سها أحدكم في صلاته فلم يدر واحدة صلى أو اثنتين فليبن على واحدة فإن لم يدر اثنتين صلى أو ثلاثا فليبن على اثنتين فإن لم يدر ثلاثا صلى أو أربعا فليبن على ثلاث ويسجد سجدتين قبل أن يسلم"
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ নামাযে সন্দেহ করে,এক রা'কাত পড়েছে না দুই রা'কাত পড়েছে? তাহলে সে যেন এক রা'কাত ধরে নিয়ে সেই হিসেবে নামাযকে সম্পন্ন করে।এভাবে দুই/তিন বা তিন/চার নিয়ে সন্দেহ হলে কম সংখ্যাকে ধরে নিয়ে সে নামাযকে সম্পন্ন করবে।এবং শেষে যেন সে সেজদায়ে সাহু দেয়।

مُسَدَّدٌ قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ عَنِ الْحَكَمِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ الظُّهْرَ خَمْسًا فَقَالُوا أَزِيدَ فِي الصَّلاَةِ قَالَ وَمَا ذَاكَ قَالُوا صَلَّيْتَ خَمْسًا فَثَنَى رِجْلَيْهِ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ.
আবদুল্লাহ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত পাঁচ রাক‘আত আদায় করেন। তখন মুসল্লীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ সালাতে কি কিছু বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ তা কী? তারা বললেনঃ আপনি যে পাঁচ রাক‘আত সালাত আদায় করেছেন। রাবী বলেন, তিনি নিজের পা ঘুরিয়ে (ক্বিবলাহ্মুখী হয়ে) দু’ সাজদাহ (সাজদাহ সাহু) করে নিলেন। (বুখারী ৪০১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৫)

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا نُوْدِيَ بِالصَّلَاةِ أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ وَلَهُ ضُرَاطٌ فَإِذَا قُضِيَ أَقْبَلَ فَإِذَا ثُوِّبَ بِهَا أَدْبَرَ فَإِذَا قُضِيَ أَقْبَلَ حَتَّى يَخْطِرَ بَيْنَ الْإِنْسَانِ وَقَلْبِهِ فَيَقُوْلُ اذْكُرْ كَذَا وَكَذَا حَتَّى لَا يَدْرِيَ أَثَلَاثًا صَلَّى أَمْ أَرْبَعًا فَإِذَا لَمْ يَدْرِ ثَلَاثًا صَلَّى أَوْ أَرْبَعًا سَجَدَ سَجْدَتَيِ السَّهْوِ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সালাতের জন্যে আযান দেয়া হয় তখন শয়তান সশব্দে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে। আযান শেষ হলে সামনে এগিয়ে আসে। আবার যখন ইকামাত দেয়া হয় তখন আবার পালাতে থাকে। ইকামাত শেষ হলে আবার সামনে আসে এবং মানুষের মনে খটকা সৃষ্টি করতে থাকে আর বলতে থাকে ওটা ওটা মনে কর। এমনকি সে ব্যক্তি আর মনে রাখতে পারে না যে, সে কি তিন রাক‘আত পড়ল না চার রাকআত পড়ল। এ রকম যদি কারো হয়ে যায়, সে মনে রাখতে পারে না তিন রাকা‘আত পড়েছে না কি চার রাকআত তখন সে যেন দু’টি সাহু সাজ্দাহ করে। (৬০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩০৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৫২)

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ يُصَلِّي جَاءَهُ الشَّيْطَانُ فَلَبَسَ عَلَيْهِ حَتَّى لاَ يَدْرِي كَمْ صَلَّى فَإِذَا وَجَدَ ذَلِكَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ " .

ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কেউ যখন সলাতে দাঁড়াও তখন শাইত্বন তার কাছে এসে তাকে সন্দেহ ও দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলে দেয়। এমনকি সে কয় রাকাআত সলাত আদায় করল তাও স্মরণ করতে পারে না। তোমরা কেউ এরূপ অবস্থা হতে দেখলে যেন বসে বসেই দু'টি (অতিরিক্ত) সাজদাহ করে নেয়। (মুসলিম ১১৫২,ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৪৫, ইসলামীক সেন্টার ১১৫৪)


أنه يجب بستة أشياء: بتقديم ركن، وبتأخير ركن، وتكرار ركن، وبتغيير واجب، وبترك واجب، وبترك سنّة تضاف إلى جميع الصلاة (المحيط البرهانى، كتاب الصلاة، الفصل السابع فى سجود السهو-1/501)
وفى منية المصلى: يجب بستة اشياء بتقديم ركن….. بتأخير ركن…. بتكرار الركن…. بتغيير الواجب….. بترك الواجب…. بترك لسنة المضافة على جميع الصلاة نحو ان يترك قراءت التشهد فى القعدة الاولى (منية المصلى مع غنية المستملى-456-457)
যার সারমর্ম হলো   সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হয় ৬ কারণে।
 যথা-
১) কোন রুকন আগে করে ফেলা।
২) কোন রুকনকে আপন সময় বা স্থান থেকে দেরী করে ফেলা।
৩) কোন রুকনকে তাকরার তথা বারংবার আদায় করা।
৪) কোন ওয়াজিবকে পরিবর্তন করে ফেলা। যেমন  জোরে পড়া বিষয়কে আস্তে পড়া।
৫) কোন ওয়াজিবকে ছেড়ে দেয়া।
৬) এমন কোন সুন্নতকে ছেড়ে দেয়া যা পুরো নামাযের দিকে সম্বোধিত। যেমন প্রথম বৈঠকে তাশাহুদ ছেড়ে দেয়া।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।
যদি কোনোদিকেই প্রবল ধারনা না হয়,সেক্ষেত্রে কমটাকে ধরে রুকন গুলো আদায় করবেন।
ও শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...