আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
253 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
১।আমাকে একজনের বলসে কালকে তুমি এটা রান্না করবা আমি উত্তর দিসি আচ্ছা কইরা দিমুনে যা। এই যা শব্দটা  বলার পরে সাথেই সাথেই আমার মনে হলো আমার মাইন আসচে আমার নিজের ওপর তালাক। এটা কি তালাক হয়ে গেছে?? আমিতো যা আমার স্বামীকে বলি নাই বলসি আরেকজনকে

২। একজন হাতুড়ি দিয়ে কাজ করছিলো খুব দ্রুত কাজ শেষ করে আমার হাতে দিয়ে দিসে। আমি তাকে বলসি  হয়ে গেছে?? মানে বলতে চাইসি এতো দ্রুত হয়ে গছে?? এর পরে আমার মাইন আসছে আমি কোন উদ্দেশ্য নিয়ে বললাম তারপর মনে আসছে আমার নিজের ওপর তালাক। এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে?? আমি যেহেতু কাজ হয়ে গেছে কিনা সেটা জিগ্যেস করসি  তাহলে এখানে তালাক কিভাবে হয়?? হয়ে গেছে  এটা কি কেয়ানা বাক্য??

৩। আমি নামজে মুনাজাতে দুয়া করতেসিলাম আমার যেহেতু তালাকের অনেক ওয়াসওয়াসা তাই আমি আল্লাহর ঝামেলা শেষ করে তাও ঝামেলা এই ধরণের শব্দ বকতে চাচ্ছিলাম না তবুও শব্দটা মুখ থেকে বের হয়ে গেছে আমি বলসি আল্লাহ আমার সব যামেলা শেষ করে দাও। তখন আমার মনে আসে আমার নিজের ওপর তালাক আর কথাটা মনে হলো আমি জোর করে নিজের ইচ্ছায় আমার মনে আনসি। কিন্তু আমার কখনোই  এসব কথা আমার মনে আনার ইচ্ছা নাই বরং আমি আতঙ্কে থাকি সারাক্ষন কখন জানি আমার মুখ থেকে উল্টা পাল্টা কথা বের হয়ে যায়। ভয়ে আমি কোথাও কম বলি । আমিতো আল্লাহর কাছে ঝামেলা শেষ হওয়ার জন্য দুয়া করসি। আর আমিতো এটাও বলিনি  যে আল্লাহ আমার যামেলা আমি শেষ করে দিলাম। যেহেতু আমি বলিনি আমার যামেলা শেষ করে দিলাম সেহেতু কি তালাক হয়ে গেছে??

৪। আমার বাচ্চার কাছ থেকে উঠে আসে আমি একজনকে  শুনেচ্ছিলাম যে বাবু আমাকে টেনে নিয়ে তার কাছে বসাইসে  তারপর  আমি উঠে যখন আসছি এখানে বাবু আমাকে তার কাছে আবার যাইতে বলতেসে। আমি উঠে আসছি এই কথা বলার সময় মনে হচ্ছিলো আমার মনে অন্য কিছু চলে আসে কিনা আবার এটা ভাবতেই ভাবতেই আমি বলসি আমি উঠে আসছি এখানে  তারপর যখন মনে হলো অন্য কিছু মনে চলে আসে কিনা তাই আসছি বলার পরে সাথেই সাথেই বলসি এখানে। মানে পুরা ব্যাকটা হলো আমি উঠে আসছি এখানে। এইটা বলার পরে মনে আসে আমার নিজের ওপর তালাক। মনে হয় আমি যেনো জোর করে কথাটা আমার মনে আনসি। কখনোই  না আমি জোর করে এসব কেনো আনতে যাবো!!!প্রতিটা কথায় মনে হয় আমি ইচ্ছা করে জোর করে আমার নিজের ওপর তালক কথাটা আনি। এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে??

৫। একদিন আমার স্বামীকে দিয়ে উত্তরা যাব প্ল্যান করতেসিলাম। তো সে বলসে বিকেলের আগেই আসবো আমরা আর আমি বলসি বিকেলের আগে আসবোনা । তারপর আমার ঠিক মনে নাই যে আমি বলসি বিকেলের আগে আসলে তোমার খবর  আছে। যতদূর মনে পরে আমি বলসি বিকেলের আগে আসবোনা। তারপর মনে হয় বলসি বিকেলরর আগে আসলে এর পরে আর কোনো কথা বলিনি  ভয়ে  যে যদি কিছু বলি আর মনের মধ্যে চলে আসে বিকেলের আগে আসলে আমার নিজের ওপর তালাক। আমি বিকেলের আগে আসবোনা বলার পরে আমার মনে আসসিলো যে আল্লাহর এর পরে অন্য কিছু মনে আসে কিনা নাকি বিকেলের আগে আসবোনা বলার পরে বিকেলের আগে আসলে এই কথাটা  বলার পরে মনে আসসিলো যে আল্লাহর এখন মনে অন্য কিছু আসে কিনা ২ তার একটা হবে আমার ঠিক মনে নেই।

ক। বিকেলের আগে আসবোনা বলার পরে যদি আমার মনে আসে এখন যদি অন্য কিছু মনে চলে আই তারপর সাথেই সাথেই মনে আসে যে বিকেলের আগে আসলে আমার নিজের ওপর তালাক। কথাটা আমি মুখে উচ্চারণ করিনি  এবং  মনেও আনতে চাইনি তবুও চলে আসে। এভাবে কি তালাক। হয়ে যায়??

খ। যদি বিকেলের আগে আসবোনা বিকেলের আগে আসলে এতটুকু  বলার পরে আমার মকনে আসে যে এখন যদি মনে অন্য কিছু আসে তারপর সাথেই সাথেই আসে যে বিকেলের আগে আসলে আমার নিজের ওপর তালাক। আমি এটা উচ্চারণ করিনি মনেও আনতে চাইনি জোর করে চলে আসে। এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে?

গ। যদি কথাটা এমন হয় যে অনড় স্বামীকে বলতেসি  বিকেলরর আগে আসবোনা আসলে তোমার খবর আছে। আর আমার মনে আসে এখন যদি মনে অন্য কিছু আসে আর সাথেই সাথেই মনে আসে যে বিকেলের আগে আসলে আমার নিজের ওপর তালাক। আমি এটা বুলেও মনে আনতে চাইনি বলতে চাহিনী এসব জোর করে আমার মনে আসে। এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে??

৬। কোনো একটা কথা বলার পরে আমার মনে হয় আমি যেনো জোর করে নিজের ইচ্ছায় আমার মনে আনতেসি আমার নিজের ওপর তালাক। যদিও কখনোই  আমার তালাকের ইচ্ছা নাই। উদাহরণ স্বরূপ যদি বলি যে তুমি যাও বা আমি যাই তখন মনে হয় আমি জেনি জোর করে আমার নিজের ওপর তালাক  কথাটা  আমার মনে আনি আমি যেনো ইচ্ছা করে আমার মনে আনি। কিন্তু আমি ইচ্ছা করে আনিনা। আমি সারাক্ষন আতঙ্কে থাকি  যে কখন যেনো নিজের ওপর তালাক এই ধরনের বাক্য আমার মুখ দিয়ে চলে আসে। আমি সব সময়  ভয়ে ভয়ে থাকি। ভয়ে আমি কথা বলা কমিয়ে দিসি।আমিতো জোর করে আমার মনে এসব আনিনা। কিছু বললেই মাইন হয় আমি এটা কোন নিয়তে বললাম  আবার মনে হয় আমি জোর করে নিজের ওপর তালাক এসব আনসি। এই ক্ষত্রে আমি কি করতে পারি।

৭। আমার স্বামী বেশিনে প্লেট ধুচ্ছিলো  বেসিনের কলটা  বন্ধ ছিলো আমিও সেখানে হাত ধুতে গিয়ে বলসি একটু ছাড়বা  মানে একটু কলটা  ছাড়বা  সেও বলসে একটু ছাড়বো বলে কল ছাড়সে। তারপর আবার দুষ্টামি করে বলতেসে তোমাকে কে ধরে রাখসে নাকি যেনো বলসে তোমাকে কে একটু ধরে রাখসে  তোমাকে একটু ছাড়বো। এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে?? ওইখানে তো তালাকের কোনো কথাই হয় নাই। এভাবে সাধারণ দৈনন্দিন কথায়  তালাক হয়ে যায়??

৮। আস্সালামুআলাইকুম, ওয়ালাইকুমুস্সালাম, হ্যালো এগুলো কি কেনায়া শব্দ?? এগুলো বলার সময় কেউ ইচ্ছা করে নিজের ওপর তালাক নিলে কি তালাক হয়ে যায়??

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনএক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললোহে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেনরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেনঅতঃপর বললেনহে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যেসে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধতালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]

 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবেযদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে। এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোকবা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

 আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/12329/

 

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। তবে যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দিয়ে দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে স্ত্রী সে তার নিজের নফসের উপর তালাক দিতে পারবে। এভাবে বললে (আমি আমার নিজের উপর তালাক দিলাম) তালাক হবে। অন্যথায় স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে যে, ‘আমি তোমাকে তালাক দিলাম’। তাহলে এতে কোনো তালাক পতিত হয় না।

https://ifatwa.info/54963/?show=54963#q54963 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,

نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ

وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُمَّةِ

 

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ:

٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ

ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন, ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।

ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা, বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

 

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না। (আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন - https://www.ifatwa.info/835     

মনে মনে তালাক দেওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/48097?show=48111#a48111

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

১-৪. না, এগুলোর দ্বারা কোনো তালাক পতিত হবে না। তাই পেরেশানীর কোনো কারণ নেই। আর আপনি তালাক নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা একেবারে বাদ দিয়ে দেন।

৫. (ক,খ,গ) না, এগুলো তখন মনে আসার দ্বারা কোনো তালাক পতিত হবে না।

৬. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি তালাক নিয়ে কোনো চিন্তা ভাবনা করবেন না। এসব মাথার মধ্যে একেবারে আনবেন না।

৭-৮. না, এগুলো বলার দ্বারা কোনো তালাক পতিত হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...