আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
185 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
edited by
১। সহিহ মুসলিম এর একটি হাদিস আছে যেখানে খিলাফত কুরাইশদের জন্য এরকম কিছু বলা হয়েছে। এই হাদিসের ব্যাখ্যা কি বিস্তারিত জানতে চাই?

কেউ যদি এই সহিদ হাদিস শুনে মনে এমন চিন্তা আসে ইসলামে কোন বংশকে অগ্রাধিকার থাকতে পারে না, নিশ্চয়ই হাদিসের ব্যাখ্যা আছে বা বুঝার ভুল আছে, তবে কি ইমান ভঙ্গ হবে?

২। আমি একদিন অযু করার পর দাত ব্রাশ করি, তখন খুব সামান্য রক্ত বের হয়। এখন অতটুকু রক্তে গড়িয়ে পরবে কিনা তা নিশ্চিত না, পরে অই অযুতে আবার নামাজ ও পড়ি। এখন কি ওই নামাজ হবে নাকি আবার পড়তে হবে?

৩। কিছু শব্দ প্রতিনিয়তই শুনি,  এগুলোর অর্থ কি?।

- আল্লাহ তায়ালা, তায়ালা অর্থ কি?

- কুরআন কারীম/  মাজিদ / শরীফ, কারীম , মাজিদ ও শরিফ অর্থ কি?

৪। শীতকালে অনেকে মেয়েদের দেখা যায় রাস্তায় বোরকা / হিজাব পরে ব্যাডমিন্টন খেলে, এটা তো মনে হয় পর্দার খেলাফ। তবে মেয়েদের ও তো এরকম খেলা খেলতে মন চাইতে পারে। কি করণীয় এক্ষেত্রে?

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
ইসলাম সর্বদা খুবই শক্তিশালী অথবা দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে যতদিন বার জন খলীফাহ্ থাকবে। 
সেই আলোকে প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসের ব্যাখ্যা হলো, সেই বারোজন ইমাম তথা খলীফাহ কুরাইশ মধ্য থেকেই হবে।
অন্য বংশ থেকে নয়।

তার মানে ইসলামে ১২ জন খলিফা থাকবে,যাদের জীবদ্দশায় তথা যাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসলাম সর্বদা খুবই শক্তিশালী অথবা দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে।
আর তারা কুরাইশ মধ্য থেকেই হবে।
অন্য বংশ থেকে নয়।

এক্ষেত্রে এটি অর্থ নয় যে মুসলিম জাহানের নেতা কুরাইশ বংশের ছাড়া অন্য বংশের হতেই পারবেনা,বিষয়টি ঠিক নয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَزَالُ الْإِسْلَامُ عَزِيزًا إِلَى اثْنَيْ عَشَرَ خَلِيفَةً كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْشٍ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «لَا يَزَالُ أَمْرُ النَّاسِ مَاضِيًا مَا وَلِيَهُمُ اثْنَا عَشَرَ رَجُلًا كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْشٍ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «لَا يَزَالُ الدِّينُ قَائِمًا حَتَّى تَقُومَ السَّاعَة أَو يَكُونُ عَلَيْهِمُ اثْنَا عَشَرَ خَلِيفَةً كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْش»

জাবির ইবনু সামুরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, বারোজন খলীফাহ্ অতিবাহিত হওয়া অবধি ইসলাম শক্তিশালী থাকবে। তারা সকলই হবেন কুরায়শ বংশোদ্ভূত। অপর এক বর্ণনাতে আছে, মানুষের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সঠিকভাবে চলতে থাকবে বারোজন খলীফাহ অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত। তারা সকলেই হবে কুরায়শ বংশের।
অপর আরেক বর্ণনাতে আছে, [নবী (সা.) বলেছেন:] দীন-ইসলাম প্রতিষ্ঠিত থাকবে, যে অবধি না কিয়ামত আসে এবং তাদের ওপর বারোজন খলীফার শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। যারা সকলেই হবেন কুরায়শী।
(সহীহ: বুখারী ৩৫০১, ৭২২২ মুসলিম ৭-(১৮২১), ১০-(১৮২২), মুসনাদে আহমাদ ২০৮৬২, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ৩৭৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৬৬১, আল মুজামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ১৭৮৩, আল মু'জামুল আওসাত্ব ৮৫৯, আবূ দাউদ ৪২৮০,মিশকাত ৫৯৮৩।)

(لَا يَزَالُ الْإِسْلَامُ عَزِيزًا) অর্থাৎ ইসলাম সর্বদা খুবই শক্তিশালী অথবা দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে যতদিন বার জন খলীফাহ্ থাকবে। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই বর্ণনা ও অন্য বর্ণনা দ্বারা জানা যায় যে, দীন সর্বদা প্রতিষ্ঠিত থাকবে এমনকি তাদের নিকট বার জন খলীফাহ্ আগমন করবে।

(كُلُّهُمْ مِنْ قُرَيْشٍ) কতিপয় মুহাক্কিক বলেন, এদের মধ্যে চার খলীফাহ্ অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর বাকীগুলো কিয়ামতের আগে পূর্ণ হবেন। কেউ কেউ বলেন, তারা সবাই একই যুগে হবেন আর মানুষ তাদেরকে আলাদা করবে।

★তবে প্রশ্নে উল্লেখিত চিন্তার দ্বারা কাহারো ঈমান চলে যাবেনা।

(০২)
যদি থুতু থেকে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হয়,সেক্ষেত্রে আপনার অযু ভেঙ্গে গিয়েছিলো।
আপনাকে পুনরায় উক্ত নামাজ আদায় করতে হবে।
আর যদি থুতুতে রক্তের ভাগ সমান না হয়,বরং কম হয়,সেক্ষেত্রে অযু ভেঙ্গে যায়নি।
তাই নামাজও হয়ে গিয়েছে।
উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবেনা ।

(০৩)
تَعَالَى (تَعَالِي) [علو]
[তা'আলা] শব্দের অর্থঃ-
উঁচু হওয়া
উচ্চ হওয়া
বড় হওয়া
ঊর্ধ্বে হওয়া
শ্রেষ্ঠ হওয়া
মহান হওয়া।

كَرِيم ج كِرَام [كرم]
[কারীম] শব্দের অর্থঃ-
সম্মানিত
মর্যাদাবান
মহৎ
উদার
দানশীল
দাতা
মহানুভব
বদান্য
অতিথিপরায়ণ
মূল্যবান

مَجِيد [مجد]
[মাজীদ] শব্দের অর্থঃ-
মর্যাদাবান
মহিমান্বিত
মহীয়ান
মহান
গৌরবান্বিত
গৌরবময়

شَرِيف ج أَشْرَاف ، شُرَفَاء [شرف]
[শারীফ] শব্দের অর্থঃ-
সম্ভ্রান্ত
ভদ্র
অভিজাত
মর্যাদাবান
মহৎ
শরীফ

★সেই হিসেবে কুরআন কারীম এর অর্থঃ মূল্যবান কুরআন, সম্মানীত কুরআন। 

কুরআন শরীফ এর অর্থঃ মর্যাদাবান কুরআন।

কুরআন মাজীদ এর অর্থঃ মর্যাদাবান/মহিমান্বিত/মহীয়ান কুরআন। 

(০৪)
এক্ষেত্রে ঘরোয়া ভাবে পূর্ণ পর্দার পরিবেশে মহিলাদের সাথে বা স্বামীর সাথে,বা ফিতনার আশংকা না থাকলে  অন্যান্য মাহরাম পুরুষ এর সাথেও খেলতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...