বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«وَيْلٌ لِلَّذِي يُحَدِّثُ بِالحَدِيثِ لِيُضْحِكَ بِهِ القَوْمَ فَيَكْذِبُ، وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস!’’ (তিরমিযী-২৩১৫; আবূ দাউদ-৪৯৯০)
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا، وَبِبَيْتٍ فِي وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِي أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা বর্জন করে, মস্কারা বা কৌতুক করতেও মিথ্যা বলে না, তার জন্য জান্নাতের মধ্যদেশে একটি বাড়ির জন্য আমি দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।’’ (আবূ দাউদ হাদীস নং ৪৮০০)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যবাদীতা সম্পর্কে বলেন:
«عَلَيْكُمْ بِالصِّدْقِ، فَإِنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى الْبِرِّ، وَإِنَّ الْبِرَّ يَهْدِي إِلَى الْجَنَّةِ، وَمَا يَزَالُ الرَّجُلُ يَصْدُقُ وَيَتَحَرَّى الصِّدْقَ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ صِدِّيقًا، وَإِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ، فَإِنَّ الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ، وَإِنَّ الْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ، وَمَا يَزَالُ الرَّجُلُ يَكْذِبُ وَيَتَحَرَّى الْكَذِبَ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ كَذَّابًا»
‘‘তোমরা সর্বদা সত্য আঁকড়ে ধরবে; কারণ সত্য পুণ্যের দিকে ধাবিত করে আর পুণ্য জান্নাতে নিয়ে যায়। একজন মানুষ যখন সর্বদা সত্য বলতে থাকে এবং সত্য বলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে তখন সে এক পর্যায়ে আল্লাহর কাছে ‘‘সিদ্দীক’’ বা মহাসত্যবাদী বলে লিখিত হয়ে যায়। আর তোমরা মিথ্যা সর্বোতভাবে বর্জন করবে। কারণ মিথ্যা পাপের পথে পরিচালিত করে এবং পাপ জাহান্নামে নিয়ে যায়। একজন মানুষ যখন মিথ্যা বলে এবং মিথ্যা বলার সুযোগ খুঁজে বেড়ায় তখন সে এক পর্যায়ে আল্লাহর নিকট মহামিথ্যাবাদী বলে লিখিত হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম-২৬০৭)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে কৌতুক করা কখনো জায়েয হবে না।কাউকে মিথ্যা বলে কৌতুক করতে দেখলে সামর্থ্যানুযায়ী তাকে বাধা দিতে হবে।
হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ থেকে বিস্তারিত এভাবে বর্ণিত আছে যে,
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ": ﻣﺎ ﻣﻦ ﻧﺒﻲ ﺑﻌﺜﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﺃﻣﺘﻪ ﻗﺒﻠﻲ ﺇﻻ ﻛﺎﻥ ﻟﻪ ﻣﻦ ﺃﻣﺘﻪ ﺣﻮﺍﺭﻳﻮﻥ ﻭ ﺃﺻﺤﺎﺏ ﻳﺄﺧﺬﻭﻥ ﺑﺴﻨﺘﻪ ﻭ ﻳﻘﺘﺪﻭﻥ ﺑﺄﻣﺮﻩ ﺛﻢ ﺃﻧﻬﺎ ﺗﺨﻠﻒ ﻣﻦ ﺑﻌﺪﻫﻢ ﺧﻠﻮﻑ ﻳﻘﻮﻟﻮﻥ ﻣﺎﻻ ﻳﻔﻌﻠﻮﻥ ﻭ ﻳﻔﻌﻠﻮﻥ ﻣﺎﻻ ﻳﺆﻣﺮﻭﻥ ﻓﻤﻦ ﺟﺎﻫﺪﻫﻢ ﺑﻴﺪﻩ ﻓﻬﻮ ﻣﺆﻣﻦ ﻭ ﻣﻦ ﺟﺎﻫﺪﻫﻢ ﺑﻠﺴﺎﻧﻪ ﻓﻬﻮ ﻣﺆﻣﻦ ﻭ ﻣﻦ ﺟﺎﻫﺪﻫﻢ ﺑﻘﻠﺒﻪ ﻓﻬﻮ ﻣﺆﻣﻦ ﻭﻟﻴﺲ ﻭ ﺭﺍﺀ ﺫﻟﻚ ﻣﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﺣﺒﺔ ﺧﺮﺩﻝ ."
তরজমাঃ নবীজী সাঃ বলেনঃ- অতীতে এমন কোনো নবী অতিবাহিত হননি যার কিছু সাহায্যকারী ও সাথী ছিলেন না,যারা সেই নবীর সুন্নাতকে আকড়ে ধরতেন এবং তার পদাঙ্ক অনুসরণ করতেন।অতঃপর তাদের পরবর্তী এমন কিছু লোক আসল যারা যা বলে তা তারা করে না এবং যা করে তা তারা বলে না।যে ব্যক্তি (শরীয়ত বিরোধী কাজকে প্রতিহত করতে)হাত দ্বারা চেষ্টা প্রচেষ্টা করবে,সে মু'মিন।এবং যে জবান দ্বারা চেষ্টা-প্রচেষ্টা করবে সেও মু'মিন। এবং যে অন্তর দ্বারা চেষ্টা-প্রচেষ্টা করবে সেও মু'মিন। কিন্তু এর পরবর্তী ঈমানের দানা পরিমানও আর কোনো স্থর নেই।(সহীহ মুসলিম-৫০)
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ উক্ত হাদীস সমূহের ব্যখা করতে যেয়ে বলেনঃ
ﻭﻗﻮﻟﻪ : « ﻣﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ » ﺃﻱ : ﻣﻦ ﻫﺬﺍ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ، ﻭﻫﻮ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﺍﻟﻤﻄﻠﻖ، ﺃﻱ : ﻟﻴﺲ ﻭﺭﺍﺀ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺜﻼﺙ ﻣﺎ ﻫﻮ ﻣﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ، ﻭﻻ ﻗﺪﺭ ﺣﺒﺔ ﺧﺮﺩﻝ . ﻭﺍﻟﻤﻌﻨﻰ : ﻫﺬﺍ ﺁﺧﺮ ﺣﺪﻭﺩ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ، ﻣﺎ ﺑﻘﻰ ﺑﻌﺪ ﻫﺬﺍ ﻣﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﺷﻲﺀ، ﻟﻴﺲ ﻣﺮﺍﺩﻩ ﺃﻧﻪ ﻣﻦ ﻟﻢ ﻳﻔﻌﻞ ﺫﻟﻚ ﻟﻢ ﻳﺒﻖ ﻣﻌﻪ ﻣﻦ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﺷﻲﺀ، ﺑﻞ ﻟﻔﻆ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﺪﻝ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻌﻨﻰ ﺍﻷﻭﻝ- ﻣﺠﻤﻮﻉ ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ | ﺍﻟﻤﺠﻠﺪ ﺍﻟﺴﺎﺑﻊﺗﻔﺴﻴﺮ ﺁﻳﺎﺕ ﻓﻴﻤﺎ ﺃﺣﻞ ﻭﻣﺎ ﺣﺮﻡ ﻣﻦ ﺍﻷﻃﻌﻤﺔ
তরজমাঃউপরোক্ত হাদীসে যে ঈমান থাকবে বলা হচ্ছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল "কামিল ঈমান" থাকবে না।অর্থাৎ উপরোক্ত ঈমানের তিন স্থর ব্যতীত কামিল ঈমানের আর কোনো স্থর নেই।"এই তিন স্থর পর ঈমানের আর কোনো স্থর নেই "এ বাক্য দ্বারা এই উদ্দেশ্য নয় যে, অন্তর দ্বারা গৃনা না করলে তার আসল ঈমান অবশিষ্ট থাকবে না।বরং উদ্দেশ্য হল কামিল ঈমান অবশিষ্ট থাকবে না।যদিও তার আসল ঈমান বহাল থাকবে। তবে কিন্তু ফরয তরক করার ধরুন অবশ্যই তার শাস্তি হবে।বিস্তারিত জানুন-
1982
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সামর্থ্য থাকার পরও যদি আপনি বাধা না দেন,তাহলে অবশ্যই আপনার গোনাহ হবে।