بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
শরীয়তের বিধান হলো দাড়ি না রাখা , মুন্ডিয়ে ফেলা বা এক মুষ্ঠির কম রাখা হারাম
ও কবীরা গুনাহ। হাদীস শরীফে
এসেছেঃ
عن ابن عمر
: عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( خالفوا المشركين وفروا اللحى وأحفوا
الشوارب . وكان ابن عمر إذا حج أو اعتمر
قبض على لحيته فما فضل أخذه
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তোমরা
মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর।
আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩}
★★দাড়ির সীমানা হলো গালের শেষ ভাগে এবং গলার
শুরু ভাগে বাম কান থেকে ডান কান পর্যন্ত বিস্তৃত লম্বা হাড্ডিতে গজানো চুল হলো দাড়ির
সীমারেখা। বাকিটা দাড়ি নয়। থুতনির উপরের ছোট চুল কাটাও উচিত নয়।
( وفى المعجم الوسيط- (اللحي ) منبت
اللحية من الإنسان وغيره وهما لحيان والعظمان اللذان فيهما الأسنان من كل ذي لحى
(المعجم الوسيط – باب اللام
যার সারমর্ম হলো হাড্ডির উপরে গজানো অংশ দাড়ি,তার দুই পার্শে যা আছে,সেটা দাড়ির সীমানার বাহিরে অন্তর্ভুক্ত
। গালের উপরিভাগে গজানো চুল দাড়ি নয়। তাই এসব
ছেটে বা কামিয়ে ফেলাতে কোন সমস্যা নেই।
ولا بأس بأخذ الحجبين وشعر وجهه ما لم يشبه
المخنث، (مرقاة المفاتيح، كتاب الأدب، باب الترحل، الفصل الأول-8/298، كتاب الآثار
لمحمد، باب حف الشعر من الوجه-198
যার সারমর্ম হলো চেহারার চুল কামিয়ে ফেলা কোনো সমস্যাকর
নয়। তবে কিছু উলামায়ে কেরামগন গালের উপরিভাগের এ অংশটুকুকেও কাটতে নিষেধ করেছেন।
গলার শুরুর অংশের নিচ থেকে (যেটি সীমানার মধ্যে নেই) কেটে
ফেলাকে অনেকেই জায়েজ বললেও অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে সেটিও না কাটাই উচিত।
দাড়ি না রাখার অনেক কুফল রয়েছে। কারণ দাড়ি
যদি কেউ না রাখে তার দ্বারা ইসলামের অনেক বিধান লঙ্ঘিত হয়। যেমন-
(১) দাড়ি
না রেখে রাসূলের অবাধ্যতা করা হয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘গোঁফ ছোট করো এবং দাড়ি লম্বা
করো।’ (বুখারি, মুসলিম
ও অন্যান্য)
(২) দাড়ি
না রেখে মহান আল্লাহর অবাধ্যতা করা হয়। কারণ: মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন
যে-
‘যে রাসূলের
আনুগত্য করলো, সে আল্লাহরই
আনুগত্য করলো।’ (সুরা নিসা, আয়াত-৮০)
(৩) মহানবী
(সা.) দাড়ি রাখতেন এবং তার উম্মতকেও রাখতে বলতেন আর তাই কেউ যদি দাড়ি না রাখে সে রাসূলের
পথ থেকে বিচ্যুতি হয়ে গেল।
(৪) যে দাড়ি
রাখে না সে মুমিনদের পথ থেকে বিচ্যুত। মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ১১৫নং আয়াতে বলেন
যদি কেউ রাসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে তাহলে তার জায়গা হবে জাহান্নাম।
(৫) দাড়ি
মুসলিমদের কাফিরদের থেকে আলাদা হিসেবে চিন্হিত করে। তাই দাড়ি রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কুফল ও কঠোর শাস্তি রয়েছে দাড়ি না
রাখার। তাই অবশ্যই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত ইসলামের বিধান অনুযায়ী দাড়ি রাখা।
এগুলো ছাড়াও দাড়ির কিছু উপকারী দিক রয়েছে সেগুলো হলো-
(১) দাড়ির
অস্তিত্ব যৌন শক্তিকে বৃদ্ধি করে,
(২) লম্বা
দাড়ি ক্ষতিকর জীবাণু থেকে আমাদের রক্ষা করে,
(৩) পাইরিয়ার
মতো মারাত্বক রোগের জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া যায়,
(৪) দাড়ি
রাখলে অনর্থক সময় ও অর্থ অপচয় রোধ করা যায়,
(৫) শারীরিক
সৌন্দর্য্য ও আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়,
(৬) দাড়িতে
ক্ষুর বা ব্লেড ব্যবহারের কারণে চোখের জ্যোতি কমে যায় এবং মুখমন্ডলের চামড়া শক্ত
হয়ে যায়। দাড়ি রেখে দিলে এসব ক্ষতিকর দিক থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
পরিশেষে বলা যায় যে, হাদীসে লূত সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ রয়েছে, যে সম্প্রদায়কে মহান আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস
করে দিয়েছিলেন। আর এ ধ্বংসের পেছনে যে ১০টি কারণ ছিল ‘দাড়ি না রাখা এবং গোফ বড় রাখা’
তাদের অন্যতম একটি কারণ ছিল।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
উপরের
আলোচনার ভিত্তিতে আপনি তাকে বুঝাতে ও দাওয়াত দিতে পারেন দাড়ি রাখার বিষয়ে।