আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
136 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম।
২০১৯ সালে আমি আমার পৈতৃক সূত্রে ৭ লক্ষ টাকা পাই। যার জন্য আমার হজ ফরজ হয়। আমি রেজিস্ট্রেশন করে ফেলি সাথে সাথে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনা মহামারী ছিল। তাই আর হজ করা হয়নি। ২০২১ সালেও হয়নি। আর ২০২২ সালে আমার সিরিয়াল আসেনি তাই যাওয়া হয়নি। ইন শা আল্লাহ ২০২৩ সালে আমার সিরিয়া আসতে পারে।
২০১৯ এ যখন হজে যাওয়া হয়নি, তখন আমি চিন্তা করলাম টাকা টা ব্যবসায় খাটাই। কারণ আমার তো এই টাকার যাকাত দিতে হবে। ব্যবসা থেকে যা আসে তাই দিয়ে যাকাত দিব। কোন লাভের উদ্দেশ্যে খাটাইনি। কারণ স্বামীর কাছ থেকে যাকাতের টাকা নিতে চাচ্ছিলাম না। আর হজ কবে আবার চালু হবে তা-ও তো নিশ্চিত ছিলাম না। তাই ব্যবসায় লাগিয়ে রাখি আমারই আপন ছোট ভাইয়ের কাছে।

এখন ইন শা আল্লাহ সামনের বছর হজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু সমস্যা হয়ে গেছে, আমার ভাই এর ব্যবসায় বিরাট লস হয়েছে। সে এখন কিছুতেই আমার টাকা দিতে পারবে না। আর অদূর ভবিষ্যতে ও দিতে পারে কি না কোন ঠিক নাই। আব্বা আম্মাও আমার এই টাকা আর দিতে পারবে না। বাবা মায়ের এমন কোন সম্পদ ও নাই যে আমাকে এই টাকার ক্ষতিপূরণ দিবে। আপন‌ ছোট ভাই। ওকে কোন চাপ ও আমি দিতে পারছি না। আর আমি তো জানিই আমার পরিবারের হালত। এমন কিছুই নাই যে ওরা এখন আমাকে এই টাকা দিতে পারবে। একমাত্র উপায় হলো জমি বিক্রি করা। কিন্তু আমার আরো ২ ভাই আছে। ওঁরাও তো জমি তে হকদার। এখন তো চাইলেও জমি বিক্রি করা যাবে না। আমি আসলে টাকার জন্য কোন অস্থির হচ্ছি না। আমি আমার ছোট ভাইকে টাকা টা ছেড়েই দিতাম। কিন্তু আমার হজ কিভাবে আমি আদায় করব? এই চিন্তাতে আমি অস্থির।
এমতাবস্থায় আমার কি করণীয়? আমি কি আমার স্বামীর কাছে হজের টাকা চাইব? আর স্বামীর টাকা সম্পূর্ণ বৈধ কি না তাতেও আমার কিছু টা সন্দেহ আছে। কিভাবে আমি আমার ফরজ আদায় করব? আমার উপর কি এখনো হজ ফরজ আছে? মোট কথা সব মিলিয়ে আমি অনেক অস্থিরতার মধ্যে আছি। আমাকে একটা সমাধান দিবেন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (58,470 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/57391/ নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,

হজ্ব ফরজ হয় দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে। সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরিফে এরশাদ করেনঃ  

ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا، ومن كفر فان الله غنى عن العلمين.

 (তরজমা) মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহরউদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্ব করা ফরয। আর কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিতযে, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রতি মুখাপেক্ষী নন।-সূরা আলে ইমরান (৩) : ৯৭

ফাতওয়ার কিতাবে এসেছেঃ  

যার মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচের অতিরিক্ত এই পরিমাণ টাকা-পয়সা বা সম্পত্তি আছে, যা দ্বারা হজ্জে যাওয়া-আসার ব্যয় এবং হজ্জকালীন সাংসারিক খরচ হয়ে যায়, তার উপর হজ্জ করা ফরয। (আদ্দুরুল মুখতার মা‘আ রদ্দিল মুহতার ২/৪৫৮)

হজ্জ যে বছর ফরয হয় সে বছরই তা আদায় করা ওয়াজিব। গ্রহণযোগ্য কোনো ওযর ছাড়া হজ্জ বিলম্বিত করলে গুনাহ হবে। তবে পরবর্তীতে হজ্জ আদায় করে নিলে এই গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৭ রশীদিয়া, কিতাবুল মাসাইল ৩/৭৬)

মহিলাদের উপর হজ্বঃ

দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে এবং সফর সঙ্গি হিসেবে স্বামী বা মাহরাম কেউ থাকলে ঐ মহিলার উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।

স্বামী উভয়ের খরচ বহনে সক্ষম হ’লেই স্ত্রীর উপর হজ্জ ফরয হয় না। বরং স্ত্রীর যদি নিজ মালিকানায় হজ ফরজ হওয়ার মতো সম্পদ থাকে,তাহলে তার উপর হজ ফরজ হবে। নারীদের সাথে মাহরাম ব্যক্তি থাকা অপরিহার্য। মাহরাম সাথে না থাকলে হজে যাওয়া জায়েজ নেই।

যদি কোনো মাহরাম হজে যাওয়ার মতো না থাকে,সেক্ষেত্রে মাহরাম পুরুষকে হজে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ থাকা উক্ত মহিলার উপর হজ্ব ফরজ হওয়ার শর্ত বলে বিবেচিত হবে। নতুবা হজ্ব আদায় করবেনা।

আরো জানুনঃ  https://ifatwa.info/21183/

সম্মানিত প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন !

প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে জীবিত থাকাবস্থায় যখনি আপনি হ্জ্জ করার সুযোগ পাবেন আপনাকে হ্জ্জ করতে হবে যদি আপনার নিজের এবং সাথে মাহরামকে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য হয়। আপনার ভাই আপনাকে টাকা ফিরত দেওয়ার পরে বা অন্য কোন উপায়ে আপনি সক্ষমতা ফিরে পেলেই আপনাকে হজ্জ করতে হবে। যদি আপনি আদায় করতে না পারেন তাহলে আপনার উত্তরাধীকারীদেরকে আপনার পক্ষ থেকে বদলি হজ্জ করার অছিয়ত করে যেতে হবে। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/20291/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 146 views
...