বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/54609/?show=54609#q54609 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
মহিলাদের জন্য পুরুষ এর সাথে তওয়াফ করা জায়েজ ও প্রমানিত আছে।
কিন্তু মহিলাদের জন্য উচিত হলো, এমন সময় তওয়াফ করা, যখন মানুষের ভীড় কম হয় এবং পুরুষ দের থেকে পৃথক হয়ে কিনারা
হয়ে তওয়াফ করবে এবং পর্দার খেয়াল রাখবে।
বুখারী শরীফে এসেছেঃ-
بَاب
طَوَافِ النِّسَاءِ مَعَ الرِّجَالِ
পুরুষের সঙ্গে নারীদের তাওয়াফ করা।
و قَالَ لِي عَمْرُو بْنُ
عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنَا قَالَ
أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ إِذْ مَنَعَ ابْنُ هِشَامٍ النِّسَاءَ الطَّوَافَ مَعَ
الرِّجَالِ قَالَ كَيْفَ يَمْنَعُهُنَّ وَقَدْ طَافَ نِسَاءُ النَّبِيِّ صلى الله
عليه وسلم مَعَ الرِّجَالِ قُلْتُ أَبَعْدَ الْحِجَابِ أَوْ قَبْلُ قَالَ إِي
لَعَمْرِي لَقَدْ أَدْرَكْتُهُ بَعْدَ الْحِجَابِ قُلْتُ كَيْفَ يُخَالِطْنَ
الرِّجَالَ قَالَ لَمْ يَكُنَّ يُخَالِطْنَ كَانَتْ عَائِشَةُ تَطُوفُ حَجْرَةً
مِنْ الرِّجَالِ لاَ تُخَالِطُهُمْ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ انْطَلِقِي نَسْتَلِمْ يَا
أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ قَالَتْ انْطَلِقِي عَنْكِ وَأَبَتْ يَخْرُجْنَ
مُتَنَكِّرَاتٍ بِاللَّيْلِ فَيَطُفْنَ مَعَ الرِّجَالِ وَلَكِنَّهُنَّ كُنَّ
إِذَا دَخَلْنَ الْبَيْتَ قُمْنَ حَتَّى يَدْخُلْنَ وَأُخْرِجَ الرِّجَالُ وَكُنْتُ
آتِي عَائِشَةَ أَنَا وَعُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ وَهِيَ مُجَاوِرَةٌ فِي جَوْفِ
ثَبِيرٍ قُلْتُ وَمَا حِجَابُهَا قَالَ هِيَ فِي قُبَّةٍ تُرْكِيَّةٍ لَهَا
غِشَاءٌ وَمَا بَيْنَنَا وَبَيْنَهَا غَيْرُ ذَلِكَ وَرَأَيْتُ عَلَيْهَا دِرْعًا
مُوَرَّدًا
[ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন] আমাকে ‘আমর
ইবনু ‘আলী (রহ.) ..... থেকে ইবনু জুরাইজ (রহ.) বর্ণনা করেন যে, ‘আত্বা (রহ.) বলেছেন, ইবনু হিশাম (রহ.) যখন মহিলাদের পুরুষের
সঙ্গে তাওয়াফ করতে নিষেধ করেন, তখন ‘আত্বা (রহ.) তাঁকে বললেন, আপনি তাদের কী করে নিষেধ করেছেন, অথচ নবী সহধর্মিণীগণ পুরুষদের সঙ্গে
তাওয়াফ করেছেন? [ইবনু জুরাইজ (রহ.) বলেন] আমি তাঁকে প্রশ্ন
করলাম, তা কি পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পরে, না পূর্বে? তিনি [‘আত্বা (রহ.)] বললেন, হাঁ, আমার জীবনের কসম, আমি পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরের
কথাই বলছি। আমি জানতে চাইলাম পুরুষগণ মহিলাদের সাথে মিলে কিভাবে তাওয়াফ করতেন? তিনি বললেন, পুরুষগণ মহিলাগণের সাথে মিশে তাওয়াফ
করতেন না। ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) বরং পুরুষদের পাশ কাটিয়ে তাওয়াফ করতেন, তাদের মাঝে মিশে যেতেন না। এক মহিলা
‘আয়িশাহ্ (রাযি.)-কে বললেন চলুন, হে উম্মুল ‘মু’মিনীন! আমরা তওয়াফ করে
আসি। তিনি বললেন, ‘‘তোমার মনে চাইলে তুমি যাও’’ আর তিনি
যেতে অস্বীকার করলেন। তাঁরা রাতের বেলা পর্দা করে বের হয়ে (সম্পূর্ণ না মিশে) পুরুষদের
পাশাপাশি থেকে তাওয়াফ করতেন। উম্মুল মু’মিনীনগণ বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতে চাইলে সকল
পুরুষ বের করে না দেয়া পর্যন্ত তারা দাঁড়িয়ে থাকতেন। ‘আত্বা (রহ.) বলেন, ‘উবাইদ ইবনু ‘উমাইর এবং আমি ‘আয়িশাহ্
(রাযি.)-এর কাছে গেলাম, তিনি তখন ‘সবীর’ পর্বতে অবস্থান করছিলেন।
[ইবনু জুরাইজ (রহ.) বলেন] আমি বললাম, তখন তিনি কি দিয়ে পর্দা করছিলেন? ‘আত্বা (রহ.) বললেন, তখন তিনি পর্দা ঝুলান তুর্কী তাঁবুতে
ছিলেন, এছাড়া তাঁর ও আমাদের মাঝে অন্য কোন কিছু
ছিল না। (অকস্মাৎ দৃষ্টি পড়ায়) আমি তাঁর গায়ে গোলাপী রং-এর চাদর দেখতে পেলাম।
(বুখারী শরীফ ১৬১৮.আধুনিক প্রকাশনীঃ অনুচ্ছেদ
৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ পরিচ্ছেদ ১০২৪)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মহিলাদের জন্য উচিত হলো, এমন সময় তওয়াফ করা, যখন মানুষের ভীড় কম হয় এবং পুরুষদের থেকে পৃথক হয়ে কিনারা হয়ে
তওয়াফ করবে এবং পর্দার খেয়াল রাখবে।
□ অনিচ্ছাকৃত ভাবে বা বিশেষ ওযর বশত নারি পুরুষ ধাক্কাধাক্কির ফলে গুনাহ হবেনা। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা ওযরে ধাক্কাধাক্কির
ফলে গুনাহ হবে।
□ কারো মনে কুচিন্তা থাকলে তার জন্য সব
ছুরতেই গুনাহ হবে।
হযরত আয়েশা রা. থেকে বার্ণিত আছে, তিনি বলেন-
كَانَ الرُّكْبَانُ يَمُرُّونَ
بِنَا وَنَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مُحْرِمَاتٌ، فَإِذَا حَاذَوْا بِنَا سَدَلَتْ إِحْدَانَا جِلْبَابَهَا مِنْ
رَأْسِهَا عَلَى وَجْهِهَا فَإِذَا جَاوَزُونَا كَشَفْنَاهُ.
ইহরাম অবস্থায় আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের পাশ দিয়ে যেত তখন আমরা আমাদের চাদর মাথায় সামনে ঝুলিয়ে
দিতাম। আর চলে যাওয়ার পর তা সরিয়ে ফেলতাম। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৮৩৩)
ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মহিলারা মাথা ক্যাপ বা এ জাতীয় এমন কিছু
বেঁধে নিবে যে,যার উপর দিয়ে মাথা থেকে কাপড় ছেড়ে দিলে
উক্ত কাপড় চেহারা কে স্পর্শ না করে নিচের দিকে চলে যাবে। চেহারা বলতে মুখের ঐ অংশ যা
অজুতে ধৌত করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ কপালের উপরাংশের চুল থেকে নিয়ে থুতনি পর্যন্ত এবং এক
কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত। (কিতাবুল ফাতাওয়া-৪/৩৭)
আরো জানুনঃ-
https://ifatwa.info/53406/
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. মহিলাদের জন্য পুরুষের সাথে তওয়াফ করা
শরীয়তে জায়েজ প্রমানিত আছে। কিন্তু মহিলাদের জন্য উচিত হলো, এমন সময় তওয়াফ করা, যখন মানুষের ভীড় কম হয় এবং পুরুষদের থেকে পৃথক হয়ে কিনারা হয়ে
তওয়াফ করবে এবং পর্দার খেয়াল রাখবে। উল্লেখ্য
যে, তাওয়াফ করার সময়েও মহিলাদের জন্য পর্দার বিষয়টা খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।
২. কাবা ঘরের সামনে মুখ
খুলে ছবি তুলে ফেসবুকে দেওয়া। এটা অবশ্যই একটি গর্হিত কাজ।
সুতরাং কেউ হজ্জ-উমরায় গেলে এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকা চাই।
৩. অনিচ্ছাকৃত ভাবে বা বিশেষ ওযর বশত নারি পুরুষ ধাক্কাধাক্কির ফলে গুনাহ হবেনা। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বিনা ওযরে ধাক্কাধাক্কির
ফলে গুনাহ হবে।