আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায,
অনেক সময় দেখা যায় বাবা বুঝে বা না বুঝে কোনো ছেলে/মেয়ে/অন্য কারও নামে সম্পত্তি লিখে দেয়। আবার কোনো ছেলের নামে তেমন কিছু থাকে না। বাবার মৃত্যুর পর শুধু বাবার নামে যেই সম্পত্তিগুলো আছে সেগুলো আবার সব সন্তারদের মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী ভাগ করা হয়। ফলে দেখা যায় যাদের নামে বাবা সম্পত্তি লিখে দিয়েছে তারা কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেশি পায়। এক্ষেত্রে করণীয় কি?
১। সন্তানদের কি উচিৎ নয় যে শরীয়ত অনুযায়ী তাদের বাবার সম্পদকে ভাগ করে নেয়া?
২। আবার যাদের নামে বাবা কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেশি দিয়ে দিয়ে গেছে তারা যদি সেই সম্পদ ভাগ করতে না চায় তাইলে কি তারা দোষী হবে?
৩। অনেক সময় কোনো বিশেষ কাউকে আসলে সম্পদ একেবারে  দিয়ে দেয়া বাবার উদ্দেশ্য ছিলো না। কোনো বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এরকম করেছেন। যেমন ৭০ বা ৮০ এর দশকে জমিতে খাজনা দেওয়ার আঈন কড়াকড়ি করা হয়েছিল। সম্ভবত ২৫ বিঘার বেশি জমিতে আলাদা/বেশি খাজনা দেওয়ার রীতি চালু হয়। কোনো লোক খাজনা এড়াতে তাঁর সম্পদ অনেক লোকের নামে লিখে দেয়! (হাস্যকর!) কিন্তু মালিক হিসেবে সে নিজেই সম্পদগুলো ভোগ করতে থাকে। কিন্তু সেই লোকের মৃত্যুর পর যাদের নামে সম্পদদগুলো লিখে দিয়েছিলো তারা সেগুলো নিজেদের বলে দাবি করে বসে। এক্ষেত্রে করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
জীবিত ব্যক্তি সে তার ইচ্ছামত সম্পদকে ব্যবহার করতে পারবে। সে যাকে ইচ্ছা তাকে দিতে পারবে।যত ইচ্ছা তত দিতে পারবে। সে যদি জীবিত অবস্থায় কোনো এক সন্তান কিছু লিখে দেয়ার ইচ্ছা করে তাহলে সেটাও তার জন্য জায়েয হবে। তবে সন্তানদের মধ্যে কাউকে বেশী আবার কাউকে কম, এভাবে বে-ইনসাফি সে করতে পারবে না। এভাবে সমান ভাবে বন্টন না করার জন্য তার গোনাহ হবে। বাবা/মা জীবদ্দশায় কোনো এক সন্তানকে বেশী দিয়ে দিলে অপর সন্তানদের জন্য সমানভাবে পাওয়ার নিমিত্তে ঐ দিয়ে সম্পদকে অন্য সন্তানরা দাবী করতে পারবে না।

(২)
যাদের নামে বাবা কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেশি দিয়ে দিয়ে গেছে তারা যদি সেই সম্পদ ভাগ করতে না চায় তাহলে তারা দোষী সাব্যস্ত হবে না যদি এই বেশী পাওয়ার মধ্যে তাদের অন্যায় কোনো হস্তক্ষেপ না থাকে।

(৩)
বিশেষ কোনো কারণে সম্পদের কিছু অংশ কোনো এক সন্তানের নামে লিখে দিলে, তখন কিন্তু সন্তান ঐ সম্পদের মালিক হবে না।ঐ সম্পদের সকল ভাই বোন সহ সকল প্রকার ওয়ারিছদের হক থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 338 views
...