আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
232 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (48 points)
আমার বাবা দুই জন এতিম এর ভরনপোষণ ও লেখা পড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রতিমাসে তাদের জন্য নিরদ্রিষ্ট টাকা তাদের মাদ্রাসা পাঠিয়ে দেন।
আমরা প্রতি বছর রমজানে আমাদের যাকাত এর টাকা হিসাব করে যাকাত আদায় করার চেষ্টা করি। এখন বাবা যদি ওই টাকা যাকাত এর নিয়তে দিয়ে বছর শেষে মোট যত টাকা যাকাত আসলো আর যা সারা বছর ধরে দেয়া হল সেটা সেখান থেকে কর্তন করতে পারবে কিনা।  বিষয় টা অনেকটা অগ্রীম যাকাত দেয়া

ধরা যাক বছর শেষে এতিম কে মোট দল ১০ হাজার আর আমাদের মোট যাকাত আসলো ১২ হাজার,  যেহেতু অগ্রিম আগে থেকে ১০ হাজার দেয়া এখন শুধু বাকি ২ হাজার দিলে আমার যাকাত আদায় হবে কিনা।
আবার এমন যদি হয় যাকাত আসলো ১০ হাজার কিন্তু আমরা আগ্রিম দিয়েছি ১২ হাজার।  তাওলে যেই দুই হাজার বেশি আসলো সেটা কি পরবর্তী বছর যে টাকা আসবে সেটার সাথে adjust করা যাবে কিনা না।

1 Answer

0 votes
by (61,200 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/16535/ ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

যাকাত সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيۡهِمۡۖ إِنَّ صَلَوٰتَكَ سَكَنٞ لَّهُمۡۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ ١٠٣﴾ [التوبة: 103]

“তাদের সম্পদ থেকে সদকা নাও, এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদের জন্য দো‘আ কর, নিশ্চয় তোমার দো‘আ তাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩]

অপর আয়াতে তিনি বলেন:

﴿وَٱلَّذِينَ يَكۡنِزُونَ ٱلذَّهَبَ وَٱلۡفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ فَبَشِّرۡهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٖ ٣٤﴾ [التوبة:34]

“যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদেরকে বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৪]

অপর আয়াতে তিনি বলেন:

﴿وَلَا يَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ يَبۡخَلُونَ بِمَآ ءَاتَىٰهُمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦ هُوَ خَيۡرٗا لَّهُمۖ بَلۡ هُوَ شَرّٞ لَّهُمۡۖ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُواْ بِهِۦ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۗ ١٨٠﴾ [آل عمران:180]

“আল্লাহ যাদেরকে তার অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর, বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর, যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!  

বিনা ওযরে যাকাত আদায়ে দেরি করা জায়েজ নেই। এতে যাকাত আদায় হয়ে গেলেও গুনাহ হবে। তবে ওযর বশত এমনটি করলে কোনো সমস্যা নেই। 

وتجب علی الفور عند تمام الحول حتی یأثم بتأخیرہ من غیر عذر۔ (الفتاویٰ الہندیة ۱/۱۷۰)

সারমর্মঃ যাকাত বছর পার হলে তৎক্ষনাৎ আদায় করা ওয়াজিব।  বিনা ওযরে দেড়ি করার দ্বারা গুনাহ হবে

وافتراضہا عمري : أي علی التراخي وصححہ الباقاني وغیرہ، وقیل فوري: أی واجب علی الفور وعلیہ الفتویٰ، کما في شرح الوہبانیة، فیأثم بتأخیرہا بلاعذر۔ قولہ: فیأثم بتأخیرہا … وقد یقال: المراد أن لایوٴخر إلی العام القابل، لما في البدائع عن المنقی: إذا لم یوٴدِّ حتی مضی حولان، فقد أساء وأثم۔ (الدر المختار مع الرد المحتار، کتاب الزکاة ۲/۲۷۲ کراچی، بدائع الصنائع، الزکاة / في کیفیة فرضیة الزکاة ۲/۷۷ زکریا، کذا في الفتاویٰ التاتارخانیة ۳/۱۳۴ رقم: ۳۹۳۸ زکریا)

সারমর্মঃ যাকাত বছর পার হলে তৎক্ষনাৎ আদায় করা ওয়াজিব। ইহার উপরেই ফতোয়া।

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

ওযর বশত সামান্য সামান্য করে সারা বছর যাকাত দেওয়া যাবে। তবে বিনা ওযরে এমনটি করলে গুনাহ হবে। যাকাত ফরজ হওয়ার পর বছর পূর্ণ হলে সেটার ৪০ ভাগের এক ভাগ যাকাত আদায় করতে হয়। যদি সেটি আদায় করার পর সেই বছরেই আবার আদায় করে,বা নফল সদকা করে তাহলে সেটি প্রশংসনীয়। এটি নফল দান হিসেবে গন্য হবে।

সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনার বাবার জন্য সারা বছর এভাবে যাকাত প্রদান করা উচিত হবে না। কারণ, এটি যাকাত আদায়ে বিলম্ব হওয়ার শামিল। তবে উত্তম হবে তিনি বর্তমানে যেভাবে তাদের জন্য ব্যয় করছেন সেভাবেই তাদেরকে দিবেন। অথবা তাদের জন্য মাদ্রাসায় যেই টাকা দেন তা যাকাতের অংশ থেকে বছরের শুরুতে একবারেই একত্রে দিতে পারেন। অর্থাৎ তাদেরকে মালিক বানিয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...