আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। যদি মুফতি ওলী উল্লাহ হাফিঃ উত্তর দিতেন, মুনাসিব হতো ইন শা আল্লাহ।
১। আমরা অনলাইনে কিছু বোনকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন কিতাবাদী পড়ি। আগ্রহী বোনেদের রেজিষ্ট্রেশন করে যুক্ত হতে হয়। রেজিষ্ট্রেশন ফর্মে একটি প্রশ্ন থাকে -
''মূল পোস্টে থাকা সকল শর্তে আপনি একমত এবং আপনি মারাত্মক যত্নশীল হবেন এই কাফেলার ব্যাপারে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থাকবেন না। আপনি কি এমন ওয়াদা করছেন? (ওয়াদা রক্ষার ব্যাপারে আল্লহ কে ভয় করুন)''

এর উত্তর প্রায় সবাই ই হ্যাঁ দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায় অনেক বোন ই উপস্থিত থাকেন না কাফেলায়। কয়েকদিন পরেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
এক্ষেত্রে উনাদের কি ওয়াদার বরখেলাফের গুনাহ হবে? হলে কাফফারা কি হবে? যদি আমরা তাঁদের মাফ করে দেই, তবুও কি কাফফারা প্রযোজ্য হবে উনাদের জন্য?
২। কোনো মহিলার অভিভাবক যদি কোনো খাবার বাকিতে কেনেন এবং বাকি পরিশোধের ব্যাপারে টালবাহানা করেন। হয়তো পরিশোধ করবেন, হয়তো করবেন না। এক্ষেত্রে ওই খাবার খাওয়া কি জায়েয হবে ওই মহিলার জন্য?  জায়েয হলেও সেটা কি আজিমাতের উপর আমল হবে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/782 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,

স্বামীর উপার্জন যদি হারাম থাকে বা স্বামীর সম্পদের অধিকাংশ যদি হারাম থাকে, তাহলে স্ত্রীর জন্য উচিৎ নিজ মাল থাকলে সেই মাল থেকে খোরাকি গ্রহণ করা। তবে সে চাইলে স্বামীর মাল থেকেও খোরাকি নিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে না নেয়াই উত্তম। স্ত্রীর কোনো প্রকার মাল না থাকলে সে স্বামীর উক্ত সম্পত্তি থেকে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি নিতে পারবে।

রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,

وَفِي جَامِعِ الْجَوَامِعِ: اشْتَرَى الزَّوْجُ طَعَامًا أَوْ كِسْوَةً مِنْ مَالٍ خَبِيثٍ جَازَ لِلْمَرْأَةِ أَكْلُهُ وَلُبْسُهَا وَالْإِثْمُ عَلَى الزَّوْج ِتَتَارْخَانِيَّةٌ

যদি স্বামী সন্দেহজনক মাল দ্বারা খাদ্য বা কাপড় ক্রয় করে,তাহলে স্ত্রীর জন্য উক্ত খাদ্য এবং কাপড়-কে গ্রহণ করা জায়েয রয়েছে। গোনাহ অবশ্য স্বামীরই হবে। (তাতারখানিয়া) (রদ্দুল মুহতার-৬/১৯১)

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!

শরীয়ত উপার্জন সক্ষম বালেগ পুরুষ এর উপর আরো অনেকের লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছে। যেমন, উপার্জন অক্ষম মাতা-পিতা, নাবালিগ ছেলে,মেয়ে,স্ত্রী সহ অনেকের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে একজন পুরুষের উপর।

 

এখন অভিবাবকের সম্পদ হারাম হলে, সেই সম্পদ থেকে খরচ না করে নিজ মাল থেকে খরচ করাই উচিৎ,যদি নিজের সম্পদ থাকে। তবে বালেগ ছেলের উপর ওয়াজিব যে,তার সম্পদ না থাকলেও সে হালাল তরিক্বায় তার জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করবে। হ্যা উপার্জন অক্ষম ব্যক্তির জন্য অভিবাবকের  হারাম মাল থেকে তাওবাহ-ইস্তেগফারেরর সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা বৈধ রয়েছে। কেননা এই উপার্জন অক্ষম ব্যক্তিগণকে ভরণপোষণ করা ঐ উপার্জন সক্ষম ব্যক্তির একান্ত দায়িত্ব ছিলো। সুতরাং গোনাহ ঐ অভিবাবকের-ই হবে। বিস্তারিত জানতে দেখুন-(ফাতাওয়ায়ে উসমানী-৩/১২৭)

সুতরাং আপনি উপার্জন অক্ষম হলে, আপনি প্রয়োজন পর্যন্ত আপনার পিতার মাল থেকে খরচ করতে পারবেন। বাবার কাছ থেকে প্রয়োজন পর্যন্ত নেয়া সম্ভব হলে অন্য কারো কাছে থেকে আর কিছু নেয়ার প্রয়োজন নেই।

 তিন সময়ে নামাজ পড়তে হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الصُّنَابِحِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الشَّمْسُ تَطْلُعُ وَمَعَهَا قَرْنُ الشَّيْطَانِ فَإِذَا ارْتَفَعَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا اسْتَوَتْ قَارَنَهَا فَإِذَا زَالَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا دَنَتْ لِلْغُرُوبِ قَارَنَهَا فَإِذَا غَرَبَتْ فَارَقَهَا " . وَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّلاَةِ فِي تِلْكَ السَّاعَاتِ .

আবদুল্লাহ সুনাবিহী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সুর্য শয়তানের দুই শিঙের মধ্য দিয়ে উদিত হয়। যখন সুর্য উপরে উঠে, তখন শয়তান তা থেকে দুরে সরে যায়। আবার যখন সুর্য মাথার উপর আসে, তখন শয়তান এসে মিলিত হয়। আবার ঢলে পড়লে পৃথক হয়ে যায়। আবার যখন সুর্য অস্তগমনের নিকটবর্তী হয়, তখন শয়তান মিলিত হয় এবং যখন সুর্য অস্তমিত হয়, তখন শয়তান সরে যায়। এ জন্যই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ তিন সময় সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন ( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬০)

 অন্য হাদীসে এসেছে-

عَنْ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ .

উকবা ইবনু আমির জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনটি সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সালাত আদায় করতে ও মৃত ব্যাক্তিকে কবরস্থ করতে নিষেধ করেছেন (১) যখন সুর্য আলোকিত হয়ে উদয় হয়, যাবৎ না ঊর্ধাকাশে উঠে; (২) যখন দ্বিপ্রহর হয়, যাবৎ না সুর্য হেলে পড়ে আর (৩) যখন সুর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়, যাবৎ না সম্পূর্ণ অস্ত যায়।( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬১)

তাশাহুদ পরিমান বৈঠক করার পর হুদুস অথবা নামাজ ভাঙ্গার কোনো কারণ সংঘটিত হলে উক্ত নামাজ সহীহ হয়ে যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عن عليِّ بن أبي طالب - رضي الله عنه - إذا جلسَ قدرَ التشهدِ ثم أحدثَ تمَّتْ صلاتُه.

যদি তাশাহহুদ পরিমাণ বৈঠক করে অতঃপর কোন হুদুস সংঘটিত হয় তাহলে তার নামায পূর্ণ হয়ে যাবে। (আল-খুলাসা, ১/৪৫০)

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যদি তাদের সাথে কৃত ওয়াদা খেলাফ কারীকে ক্ষমা করে দেন তাহলে সে আল্লাহ তায়ালার কাছেও ক্ষমা পাবে বলে আশা করা যায়। সর্বপরি এমন ব্যক্তির জন্য উচিত অতীতের খেলাফী থেকে তওবা করা ও ভবিষ্যতে যেন কারো সাথে ওয়াদা করার পর তা খেলাফ না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা।

সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে আপনারা যেহেতু মাফ করেছেন বিধায় সে মাফ পেয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে তারও উচিত স্বীয় কৃতকর্মের উপর তওবা করা।

২. জ্বী উক্ত খাবার খাওয়া জায়েয আচে। তবে সেই নারীর জন্য উচিত তার অভিভাবককে বাকি টাকা পরিশোধ করতে বলা। কারণ, বাকি টাকা পরিশোধ না করলে বান্দার হুক নষ্ট করার কারণে কবীরা গুনাহ হবে। তা পরিশোধ না করলে বা সেই বান্দা মাফ না করলে মাফ হবে না।

বাবা বা স্বামীর ইনকাম হারাম হলেও কোনো সমস্যা নেই, সকল বয়সের মেয়ে সন্তানদের জন্য তার পিতা বা স্বামীর ইনকামে লালিত পালিত হওয়া জায়েয। এক্ষেত্রে পিতা বা স্বামীর ইনকাম হারামের নিকটবর্তী হলেও তাদের গোনাহ হবেনা। এটি রুখছতের অন্তর্ভুক্ত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...