আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
170 views
in সালাত(Prayer) by (73 points)
আসসালামু আলাইকুম।

মুহতারাম,

০১.কোন মুসল্লী সুরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য সুরা না পড়ে ভুলে বাঁধা হাত রুকুতে যাওয়ার  জন্য ছেড়ে দিলেন। সাথেই সাথেই অন্য সুরার কথা মনে পড়ল। এক্ষেত্রে পুনরায় হাত বেঁধে বাকি কেরাত শেষ করতে হবে, নাকি হাত ছাড়া অবস্থায়ই বাকি কেরাত শেষ করতে হবে?
০২.অবৈধ উপার্জনকারীর দান করা টাকা মাদরাসা-মসজিদে  লাগানোর হুকুম কী?
০৩.
ইমাম জোরে কেরাত পড়ার স্থলে আস্তে পড়া শুরু করলেন অথবা আস্তে কেরাতের স্থলে জোরে পড় শুরু করলেন। কিছু পড়ার পর ভুল ভাঙলো। প্রশ্নটা হলো যতটুকু কেরাত ভুলেএভাবে পড়েছেন, ততটুকু কেরাত কি আবার দোহরাতে হবে? উদাহরণ স্বরূপ- ইমাম সুরা ফাতিহার ২ আয়াতে এরকম ভুল করলেন।অতপর ভুল ভাঙলো। এখন এই দুই আয়াত পুণরায় পড়বেন কি না?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
এক্ষেত্রে আর হাত বাধতে হবেনা।
হাত ছাড়া অবস্থায়ই বাকি কেরাত শেষ করতে হবে।

তবে হাত পুনরায় বাধলেও নামাজ হয়ে যাবে।
নামাজের সমস্যা হবেনা।


(০২)
শরীয়তের বিধান মতে হারাম টাকা মসজিদে দান করা জায়েজ নেই।
যদি কাহারো পুরা বা অধিকাংশ কামাই হারাম হয়,তাহলে তার দান মসজিদে গ্রহন করা জায়েজ নেই।
যদি কাহারো কামাই হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,এক্ষেত্রে যদি হালাল বেশি হয়,তাহলে তার সম্পদ মসজিদ নির্মানের নেওয়া জায়েজ আছে।
অন্যথায় জায়েজ নেই।

শরীয়তের বিধান মতে হারাম সম্পদ দ্বারা নির্মিত মসজিদে নামাজ পড়া মাকরুহ।
এথেকে পরিত্রানের উপায় হলো,যত টুকু হারাম সম্পদ মসজিদ নির্মানে ব্যবহার হয়েছে,সেটি খরচ কারীর নিকট ফিরিয়ে দিতে হবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৩/৩৪০ ইমদাদুল ফাতওয়া ২/৬৭২)

দারুল উলুম দেওবন্দ এর 170640 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে যদি তার পুরা বা অধিকাংশ কামাই হারাম হয়,তাহলে তার দান মসজিদে গ্রহন করা জায়েজ নেই।
যদি তার কামাই হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,এক্ষেত্রে যদি হালাল বেশি হয়,তাহলে তার সম্পদ মসজিদ নির্মানের নেওয়া জায়েজ আছে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْمَلِيحِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَقْبَلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ صَدَقَةً مِنْ غُلُولٍ وَلَا صَلَاةً بِغَيْرِ طُهُورٍ " .

আবুল মালীহ্ (রহঃ) হতে তার পিতা সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ আত্মসাৎকৃত মালের দান এবং পবিত্রতা ছাড়া সলাত কবুল করেন না।

(আবু দাউদ ৫৯.নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতাম অনুঃ উযু ফারয, হাঃ ১৩৯ এবং অধ্যায়ঃ যাকাত, অনুঃ হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের সাদাকা, হাঃ ২৫২৩), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ আল্লাহ পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কবুল করেন না, হাঃ ২৭১) হাফিয ইবনু হাজার ‘ফাতহুল বারী’ (৩/৩২৬) গ্রন্থে বলেন, এর সানাদ সহীহ।
,
বিস্তারিত জানুনঃ   
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অবৈধ উপার্জনকারীর দান করা টাকা মাদরাসা-মসজিদে লাগানোর ব্যাপারে বিধান হলো, যদি অবৈধ উপার্জনকারীর পুরো বা অধিকাংশ কামাই/উপার্জন হারাম হয়,তাহলে তার দান মসজিদ,মাদ্রাসায় গ্রহন করা জায়েজ নেই।
যদি তার কামাই হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,এক্ষেত্রে যদি হালাল বেশি হয়,তাহলে তার সম্পদ মসজিদ,মাদ্রাসায় নেওয়া জায়েজ আছে।

(০৩)
ইমাম সাহেব যদি জাহরী (উচ্চস্বরে কেরাত বিশিষ্ট) নামাযে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ আস্তে পড়েন তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। অনুরূপভাবে সিররী ( নিন্মস্বরে কেরাত বিশিষ্ট) নামাযে বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ কেরাত যদি এতটা উঁচু আওয়াজে পড়েন যে, পিছনে দাঁড়ানো লোকজনও শুনতে পায় তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।
(রদ্দুল মুহতার ১/৫৩৫)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ইমাম জোরে কেরাত পড়ার স্থলে আস্তে পড়া শুরু করলেন অথবা আস্তে কেরাতের স্থলে জোরে পড় শুরু করলেন। কিছু পড়ার পর ভুল ভাঙলো। এক্ষেত্রে যতটুকু কেরাত ভুলে এভাবে পড়েছেন, ততটুকু কেরাত আবার দোহরাতে হবেনা।

তবে এর পরিমান বড় এক আয়াত বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ হলে নামাজের শেষে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 189 views
...