আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in সাওম (Fasting) by (21 points)
আসসালামু 'আলাইকুম।

১) উইপোকা যদি কুরআন কেটে ফেলে সেক্ষেত্রে করণীয় কি?
২) আমি যদি আমার জন্য দুইটা রোজা মানত করি, সেটা একইদিনে আমি আর আম্মু  রাখলে আদায় হয়ে যাবে?? রোজার মানত এমন ছিল যে,  দুইটা রোজা করব আমি আর মা মিলে৷ সেটা একইদিনে দুইজন রোজা রাখলে দুইটা মানতের রোজা আদায় হবে কি না।
আবার, আমি নিয়ত করেছিলাম যে আমি আর মা রোজা দুইটা করব, কিন্তু আমি করতে পারলাম না। সেক্ষেত্রে আমার বাবা-মা  দুজন মিলে একইদিনে রোজা রেখে দুইটা রোজা করে দিল। সেক্ষেত্রে কি মানতের রোজা আদায় হবে কিনা বা সেটার সওয়াব পাব কি না? নাকি আবার রাখতে হবে ই রোজা দুইটা??
৪) আমার ব্যাগে কিছুদিন আগে আরবি লিখা একটা চিকন কাগজ পাওয়া গিয়েছে। খুব চিকন করে ভাজ করে ব্যাগের সেলাইয়ের কাছে গুজে দেয়া ছিল। ঘরের কেউ জানেনা এটার ব্যাপারে। পরে একজন উস্তাযকে দেখালে উনি জানান এটা তাবিজ। তাবিজ অনেক কারণেই মানুষ করে(স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদ, সংসারে অশান্তি ইত্যাদি)। উনি কাগজটি পুড়িয়ে ফেলতে বলেন। এখন আমার করণীয় কি??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
উক্ত কুরআন যদি পড়ার অনুপযুক্ত হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে
উত্তম হচ্ছে একটা ভালো জায়গা বেছে মাটিতে কোরআন শরিফটি পুঁতে ফেলা।

যদি এটি করতে সক্ষম না হন তাহলে পানিতেও আপনি ফেলে দিতে পারেন। যদি আপনি মনে করেন যে, মাটিতে রাখলে কেউ হয়তো উঠিয়ে ফেলতে পারে অথবা কোনোভাবে কোরআনের অবমাননা হতে পারে, সেক্ষেত্রে পুড়ে ফেলে আপনি মাটিতে পুঁতে ফেলতে পারেন, এটি জায়েজ রয়েছে।

হাদীস শরীফে এসেছে- 

وَعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ قَدِمَ عَلٰى عُثْمَانَ وَكَانَ يُغَازِىْ أَهْلَ الشَّامِ فِىْ فَتْحِ أَرْمِينِيَّةَ وَأَذْرَبِيجَانَ مَعَ أَهْلِ الْعِرَاقِ فَأَفْزَعَ حُذَيْفَةَ اخْتِلَافُهُمْ فِى الْقِرَاءَةِ فَقَالَ حُذَيْفَةُ لِعُثْمَانَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَدْرِكْ هٰذِهِ الْأُمَّةَ قَبْلَ أَنْ يَخْتَلِفُوْا فِى الْكِتَابِ اخْتِلَافَ الْيَهُودِ وَالنَّصَارٰى فَأَرْسَلَ عُثْمَانُ إِلٰى حَفْصَةَ أَنْ أَرْسِلِىْ إِلَيْنَا بِالصُّحُفِ نَنْسَخُهَا فِى الْمَصَاحِفِ ثُمَّ نَرُدُّهَا إِلَيْكِ فَأَرْسَلَتْ بِهَا حَفْصَةُ إِلٰى عُثْمَانَ فَأَمَرَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ وَعَبْدَ اللّٰهِ بْنَ الزُّبَيْرِ وَسَعِيْدَ بْنَ الْعَاصِ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ فَنَسَخُوهَا فِى الْمَصَاحِفِ وَقَالَ عُثْمَانُ لِلرَّهْطِ الْقُرَشِيِّيْنَ الثَّلَاثِ إِذَا اخْتَلَفْتُمْ فِىْ شَىْءٍ مِنَ الْقُرْاٰنِ فَاكْتُبُوهُ بِلِسَانِ قُرَيْشٍ فَإِنَّمَا نَزَلَ بِلِسَانِهِمْ فَفَعَلُوا حَتّٰى اِذَا نَسَخُوا الصُّحُفَ فِى الْمَصَاحِفِ رَدَّ عُثْمَانُ الصُّحُفَ إِلٰى حَفْصَةَ وَأَرْسَلَ إِلٰى كُلِّ أُفُقٍ بِمُصْحَفٍ مِمَّا نَسَخُوْا وَأَمَرَ بِمَا سِوَاهُ مِنَ الْقُرْاٰنِ فِىْ كُلِّ صَحِيفَةٍ أَوْ مُصْحَفٍ أَنْ يُحْرَقَ قَالَ ابْنِ شِهَابٍ فَاَخْبَرَنِىْ خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ سَمِعَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ قَالَ فَقَدْتُ اٰيَةً مِنَ الْأَحْزَابِ حِينَ نَسَخْنَا الْمُصْحَفَ قَدْ كُنْتُ أَسْمَعُ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ يَقْرَأُ بِهَا فَالْتَمَسْنَاهَا فَوَجَدْنَاهَا مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ الْأَنْصَارِىِّ (مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا الله عَلَيْهِ) فَأَلْحَقْنَاهَا فِىْ سُورَتِهَا فِى الْمُصْحَفِ. رَوَاهُ الْبُخَارِىُّ
 
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, হুযায়ফাহ্ ইবনু ইয়ামান, খলীফা ‘উসমান (রাঃ)-এর কাছে মাদীনায় এলেন। তখন হুযায়ফাহ্ ইরাক্বীদের সাথে থেকে আরমীনিয়্যাহ্ (আরমেনিয়া) ও আযরাবীজান (আযারবাইজান) জয় করার জন্য শামবাসীদের (সিরিয়াবাসীদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন। এখানে তাদের অমিল কুরআন তিলাওয়াত তাকে উদ্বিগ্ন করে তুলল। তিনি ‘উসমান (রাঃ)-কে বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! ইয়াহূদী-খৃষ্টানদের মতো আল্লাহর কিতাবে ভিন্নতা আসার আগে আপনি এ জাতিকে রক্ষা করুন। তাই ‘উসমান (রাঃ) উম্মুল মু’মিনীন হাফসাহ্’র নিকট রক্ষিত মাসহাফ (কুরআন মাজীদ) তার নিকট পাঠিয়ে দেবার জন্য খবর পাঠালেন। তিনি বললেন, আমরা সেটাকে বিভিন্ন মাসহাফে অনুলিপি করে আবার আপনার নিকট তা পাঠিয়ে দিব। হাফসাহ্ (রাঃ) সে সহীফাহ্ ‘উসমানের নিকট পাঠিয়ে দিলেন। ‘উসমান (রাঃ) সাহাবী যায়দ ইবনু সাবিত, ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র, সা‘ঈদ ইবনু ‘আস ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু হারিস ইবনু হিশামকে এ সহীফা কপি করার নির্দেশ দিলেন।
 
হুকুম মতো তারা এ সহীফার অনেক কপি করে নিলেন। সে সময় ‘উসমান কুরায়শী তিন ব্যক্তিকে বলে দিয়েছিলেন, কুরআনের কোন স্থানে যায়দ-এর সাথে আপনাদের মতভেদ হলে তা কুরায়শদের রীতিতে লিখে নিবেন। কারণ কুরআন মূলত তাদের রীতিতেই নাযিল হয়েছে। তারা নির্দেশ মতো কাজ করলেন। সর্বশেষ সমস্ত সহীফাহ্ বিভিন্ন মাসহাফে কপি করে নেবার পর ‘উসমান মূল সহীফাহ্ হাফসাহ্’র নিকট ফেরত পাঠালেন। তাদের কপি করা সহীফাহসমূহের এক এক কপি রাজ্যের এক এক এলাকায় পাঠিয়ে দিলেন। এ কপি ছাড়া অন্য সব আগের সহীফায় লিখিত কুরআনকে জ্বালিয়ে ফেলতে নির্দেশ জারী করেছিলেন।
 
ইবনু শিহাব যুহরী বলেন, যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) এর ছেলে খারিজাহ্ আমাকে জানিয়েছেন, তিনি তাঁর পিতা যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, আমরা যখন কুরআন নকল করি, সূরা আল আহযাব-এর একটি আয়াত খুঁজে পেলাম না। এ আয়াতটি আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পড়তে শুনেছি। তাই আমরা তা খোঁজ করতে লাগলাম। খুযায়মাহ্ ইবনু সাবিত আল আনসারী-এর নিকট অবশেষে আমরা তা পেলাম। এরপর আমরা তা মাসহাফে সংযোজন করে দিলাম। আর সে আয়াতটি হলো, ‘‘মিনাল মু’মিনীনা রিজা-লুন সদাকূ মা- ‘আ-হাদুল্ল-হা ‘আলায়হি’’ (অর্থাৎ- মু’মিনদের মধ্যে কতক লোক আল্লাহর সঙ্গে কৃত তাদের অঙ্গীকার সত্যে পরিণত করেছে)- (সূরা আল আহযাব ৩৩ : ২৩)
সহীহ : বুখারী ৪৯৮৭, তিরমিযী ৩১০৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২৩৭৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫০৬।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
আপনি মান্নত করেছিলেন যে আমি আর মা মিলে ২টি রোযা রাখবো।
তার মানে নিজে একটি রোযা রাখার মান্নত করেছেন,সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ মতে একই দিনে আপনারা রোযা রাখেন বা ভিন্ন ভিন্ন দিনে,তাতে সমস্যা নেই। মান্নতের রোযা আদায় হয়ে যাবে।

(তবে আপনি যে আপনার মায়ের জন্যেও একটি রোযার মান্নত করেছেন যে সেই রোযা আপনার মা রাখবে,এই রোযা রাখা আপনার মায়ের উপর আবশ্যক নয়।
কেননা আপনার কৃত মান্নতের কারনে আপনার মায়ের উপর রোযা আবশ্যক হবেনা।)

(০৪)
হ্যাঁ, আপনি কাগজটি পুড়িয়ে ফেলুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 244 views
...