আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
192 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
১.আমার স্বামীর তাজউইদ শুদ্ধ নয়।মসজিদে উনার জামাত মিস হলে প্রায়ই আমাকে নিয়ে বাড়িতে জামাত পড়েন(উনি ইমাম হন,আমি মুত্তাকী)। নামাজে আমি নিজেও উনার মাদ্দ,গুন্নাহ মাখরাজে ভুল বুঝতে পারি, যদিও আমার নিজেরও তেলাওয়াত খুব একটা বিশুদ্ধ নয়(শিখতেছি আমি)

এ অবস্থায় তার পিছনে নামাজ হবে/বৈধ হবে? আর তার জন্য করনীয় কি? স্ত্রীকে নিয়ে নামাজে ইমামতি করা তার জন্য জায়েজ হবে কিনা? বা একাকী স্বলাত পড়লে নামাজ হবে কিনা? এ অবস্থায় জামাতে নামাজ পড়া কি তার জন্য বাধ্যতামুলক?


২. আমার ননদকে জ্বীন ধরেছিল। কবিরাজ বলেছে ভোগ দিলে ছেড়ে দিবে।তারপর একটা কালো খাসি(ছাগল) দেওয়া হয়েছে(যদিও এর আগেও বিভিন্ন ভোগ দেয়া হয়েছে, ছাড়েনি)।এবার ছাগল দেয়ার পর মনে হচ্ছে জ্বীন ছেড়ে গেছে। কিন্তু কিছুদিন পরই ভাসুরের ৩/৪ বছর বয়সী ছেলেকে ধরেছে।অন্য একটা কবিরাজ ধরা হলে বলেছে ভোগ হিসেবে একবছর বয়সী খাসী(ছাগল) দিলে ছেড়ে দিবে।
ছাগলটা রাতের আধারে একটা (নির্দিষ্ট) বিলের ওখানে ছেড়ে দিয়ে পেছন দিকে না তাকিয়ে চলে আসতে হবে?

এটা কি জায়েজ কাজ?একটা জীবন্ত প্রাণীকে এভাবে মারা জায়েজ হবে?


৩. বাচ্চার জন্মদিন হিসেবে হুজুর, মাদ্রাসার স্টুডেন্ট, ইয়াতিম মিসকিনদের খাওয়নো জায়েজ হবে? কেক বা প্রচলিত কোন অনুষ্ঠান করা হবেনা।শুধু মানুষকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানো হবে।জায়েজ না হলে সেই খাবার আমার জন্য খাওয়া জায়েজ হবে?


৪. সমিতিতে চাকরি করে এমন ব্যক্তির হাদিয়া নেয়া বা খাবার খাওয়া জায়েজ হবে?


জানাবেন ইনশাআল্লাহ। জাযাকুমুল্লাহু খইরা

1 Answer

+1 vote
by (573,870 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাবঃ-


(০১) https://ifatwa.info/38173/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

« زَيِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ »

“তোমরা সুন্দর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত কর।” [হাদিসটি ইমাম আহমদ, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী ও হাকেম রহ. হাদিসটি বর্ণনা করেছেন এবং তা সহীহ]

 শাইখ সালেহ আল ফাউযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,

“قراءة القرآن بالتجويد مستحبة من غير إفراط، وليست واجبة، وإنما الواجب تجويد القرآن من اللحن والخطأ في الإعراب”

“তাজবিদ সহ কুরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। তবে এ ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। এটা ওয়াজিব নয়। বরং ওয়াজিব হল, ইরাব (উচ্চারণ ও প্রকাশ করা) এর ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত করে সুন্দরভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা।”

★যাদের জন্য পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত সম্ভব। শুধুমাত্র তাদের জন্যই পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব।আর যাদের বেলায় সম্ভব নয়, তাদের জন্য পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব নয়।বরং অর্থে পরিবর্তন আসেনা এমনকরে কুরআন পড়াই তাদের জন্য যথেষ্ট হবে।এমনকি তারা পূর্ণ তাজবিদ সহকারে না পড়লেও তাদের কোনোপ্রকার গোনাহগার হবেন না।(শরহু তাইয়্যিবাতুন-নাশর-৬৩)

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/19542/

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 

https://www.ifatwa.info/4350 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করা হয়েছে যে,
নামাযের কেরাতে যদি তাজবীদে ভূল হয়,যাকে লাহলে খাফী বলা হয়,তাহলে উক্ত নামাযকে দোহড়ানের প্রয়োজন নেই।তাজবীদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1126

তবে যদি নামাযে এমন কোনো ভূল হয়,যার কারণে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়,(এক্ষেত্রে তাজবীদ বিভাগের লাহনে জালী গ্রহণযোগ্য নয়,কেননা তাজবীদের পরিভাষায় এক হরফের স্থলে অন্য হরফ পড়ে নিলেই লাহনে জলী হয়ে যায়,চায় নিকটবর্তী মাখরাজ হোক বা দূরবর্তী মাখরাজ হোক,চায় অর্থ সঠিক থাকুক বা নাই থাকুক)কিন্তু ফুকাহায়ে কেরাম দূরবর্তী মাখরাজের উচ্ছারণের সময়ে এবং অর্থ বিগড়ে যাওয়ার সময়ে নামাযকে ফাসিদ হওয়ার ফাতাওয়া দিয়ে থাকেন।

সুতরাং নামাযে কোনো হরফ উচ্ছারণের সময়ে,সেই হরফের স্থলে তার দূরবর্তী মাখরাজের কোনো হরফ উচ্ছারিত হয়ে গেলে,এবং অর্থ বিগড়ে গেলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।


ফাতাওয়ায়ে শামিতে আছেঃ-

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 581):

"(و) لا (غير الألثغ به) أي بالألثغ (على الأصح) كما في البحر عن المجتبى، وحرر الحلبي وابن الشحنة أنه بعد بذل جهده دائماً حتماً كالأمي، فلايؤم إلا مثله

সারমর্মঃ

যে ব্যাক্তি কিরাআত শুদ্ধ পড়ার উপর শক্তি রাখেনা,সে কিরাআত শুদ্ধ পাঠ কারীর ইমাম হতে পারবেনা।তবে তার মতো ব্যাক্তিদের ইমাম হতে পারবে।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনারও তিলাওয়াত বিশুদ্ধ নয়,তাই আপনার স্বামীর পিছনে আপনার নামাজ শুদ্ধ হবে।  আপনি আপনার স্বামীকে বলবেন যে সুরা ফাতেহা+ আর চারটি ছোট সুরা মাখরাজ মদ গুন্নাহ ঠিক করে মুখস্থ করতে। তাহলে কোনো সমস্যা হবেনা। একাকী সালাত আদায় করলেও নামাজ হবে।


(০২)
এই পদ্ধতি জায়েজ পদ্ধতি নয়।

(০৩)
জন্মদিন উপলক্ষ করে এ ধরনের দাওয়াতের আয়োজন জায়েজ হবেনা।
উক্ত খাবার আপনি সহ কাহারো জন্য খাওয়া জায়েজ হবেনা।

(০৪)
সূদী সমিতি হলে তার দেয়া খাবার ও হাদিয়া নেয়া জায়েজ হবেনা।
তবে তার যদি অন্যান্য কোনো হালাল ইনকাম থাকে,সেক্ষেত্রে হালাল ইনকামই বেশি হলে আপনি তার হাদিয়া ও দাওয়াত গ্রহন করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...