আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
381 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (24 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
শায়েখ,

আমি বেশ কয়েকমাস যাবত OCD রোগে ভুগছি। ওয়াসওয়াসা বা কোন মানসিক রোগ ও বলতে পারেন। যার দরুন আমার মনে বিভিন্ন ধরনের নেগেটিভ বা নোংরা চিন্তা আসতে থাকে সবসময়। বিশেষ করে ধর্ম সক্রান্ত খারাপ চিন্তা বেশি আসে। যাকে মেডিকেল ভাষায় Religious OCD বলে।

(১) আল্লাহকে নিয়ে কোরআন কে নিয়ে আমার এতটায় নোংরা চিন্তা ভাবনা আমার চলে আসে যার জন্য আমার মনে হয় আমি কাফের হয়ে গেছি। কোন খারাপ কিছু শুনলে আমি সেটাকে আল্লাহর সাথে কল্পনা করে ফেলি। হিন্দুদের কোন কিছু দেখলে মনে হয় আমার হিন্দু হওয়া ভাল ছিল। মাঝে মাঝে মনে হয় আল্লাহ বলে কেউ নেই। নিজের ঈমান নিয়ে সন্দেহে ভুগি।  নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়। এছাড়া আল্লাহকে নিয়ে এতটায় ভয়াবহ নোংরা কথা মনে আসে যা আমি বলতে বা লিখতে পারবো না। যখনি আমার আল্লাহকে নিয়ে এসব নোংরা কথা মনে আসে আমি তখনি কপালে বাড়ি মারি। এমন চিন্তা আমার মাথায় আসে যেটা আমার বিশ্বাসের পরিপন্থি। শুধু এতটুকুই বলবো শায়েখ একটা মানুষ যতটা নোংরা চিন্তা করতে পারে আমার আল্লাহকে নিয়ে ঠিক সেসব চিন্তা চলে আসছে যা আমি কন্টোল করতে পারছি না। মনে সবসময় সন্দেহ ও ভয় কাজ করে মনে হয় আল্লাহ মনে হয় আমাকে ক্ষমা করবেন না। আমাকে কিছু পরামর্শ দিন শায়েখ। আমার কি ঈমান আছে??

(২) তালাক নিয়ে ও আমি ওসিডিতে ভুগছি। সারাদিন মনের ভিতর তালাক,তালাক চলতে থাকে। ওয়াফের সাথে নরমাল কথাবার্তা বলার সময় মনের ভিতর তালাক, তালাক আসতে থাকে। যা আমাকে সবসময় পেরেশান করে রাখে।
গত রাতে আমি আমার ওয়াইফকে রাতে ঘুম থেকে উঠতে বলছি, সে উঠতে একটু দেরি করাতে আমার মুখ দিয়ে মনে হচ্ছে তালাক বেরিয়ে যাবে, বেরিয়ে গেছিলো কিনা তা আল্লাহই ভাল জানেন । মনে মনে বলছি না উচ্চারন করছি আমি নিজেই সন্দিহান। মনে হয় তালাক বলার জন্য আমাকে কেউ ফোর্স করছে। তাছাড়া হাচি দেবার সময়,কিছু খাওয়ার সময়, গোছলের সময় এমনকি মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হলেও মনে হচ্ছে তালাক বলে ফেললাম। এভাবে ভয় আর সন্দেহ নিয়ে আমার দিন কাটে। তালাক দেবার ইচ্ছা নাই, তবুও তালাক, তালাক আমি মনে সবসময় আসতে থাকে । এসব আমি ভুলতে পারি না। এই চিন্তার কষ্ট আমাকে শেষ করে দিচ্ছে। তালাকের সন্দেহ আমার মনে এমন ভাবে বাসা বেধেছে যে, সবকিছুতই তালাক হয়ে গেল মনে হয়। ছোট ছোট বিষয়ে আমার সন্দেহ হয়। যেমন :

-ওয়াইফ ডিম ভাজবে কিনা আমাকে জিগ্গাসা করছে ।
-আমি বললাম, যা খুশি তাই করো। যখন বললাম তখন আমার মনে তালাক চলে আসলো। এবং মনে হলো এটা তো কেনায়া শব্দ। আমি যে তালাকের নিয়তে বলিনি সেটা মনকে বুঝ দেবার জন্য আবার বললাম যে,  যা খুশি তাই কর। ডিম ভাজলে ভাজো অথবা অন্য কিছু করলে করো। এমন কোন সাধারন কথাবার্তা বলার ভিতর যদি যা খুশি তাই করো বলি তাহলে মনে হয় আমি তালাকের নিয়তে বললাম। তখন ভয় লাগা শুরু হয়। আর কোন কাজে শান্তি পায় না।
ওয়াইফকে কোন সময় যদি এক জায়গা থেকে একটু সরে যাবার জন্য সরো বলি, তাতেও মনে হয় কেনায়া শব্দ হয়ে গেল কিনা।

(৩) ifatwa.info তে দেখলাম একজন প্রশ্ন করেছে শোশুরকে যদি কেউ বলে আপনার মেয়ের সাথে সংসার করবো না, তাহলে কি তালাক পতিত হবে? এটা দেখার পর আমার মনে সন্দেহ হচ্ছে, আমার তো অনেক আগে এক সময় আমার ওয়াইফের সাথে ঝামেলা চলছিল। তখন কি আমি কখনো আমার শশুর শাশুড়িকে এমন কথা বলেছি?
এসব ভেবে আবার মনের ভিতর অশান্তি লাগছে। এমন অবস্থায় আমি কি করবে শায়েখ ???

আমার আগের প্রশ্ন ও আপনাদের জবাব : দেখবেন দয়া করে।

https://ifatwa.info/56005/
https://ifatwa.info/55576/

(৪) শায়েখের কাছে আমার প্রশ্ন আমার যদি কোন সময় তালাক মুখ দিয়ে উচ্চারন হয়ে যায় তাহলে কি তালাক কার্যকর হবে?
by (583,410 points)
আপনার সাথে ফোনে কথা বলা জরুরী।
by
ধন্যবাদ শায়েখ। আমি আপনাকে কল করবো। 

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আপনাকে বলবো দয়াকরে আপনি এই তালাকের ওয়াসওয়াসাকে পরিহার করুন। কিভাবে পরিহার করবেন,সেটা হল, যখনই মনে এরকম ওয়াসওয়াসা আসবে, সাথে সাথেই মনকে বলবেন, আমি যেহেতু ওয়াসওয়াসার রোগী, তাই আমার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুমে শীতিলতা রয়েছে।আমি অন্য দশজনের মত নই। কেননা ওয়াসওয়াসা রোগি কাউকে হত্যা করলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে কেসাস আসেনা।ওয়াসওয়াসার রোগী সারাদিন কুফরি বাক্য উচ্ছারণ করলেও সে কাফির হয়না।বরং তার ঈমান বহাল থাকে।

যদি ওয়াসওয়াসা থেকে আপনি বের না হন,তাহলে আপনার ভবিষ্যত আপনি নিজেই নষ্ট করবেন।ওয়াসওয়াসা থেকে বের হওয়ার একমাত্র মাধ্যম হল, এই চিন্তাকে পরিহার করে ভিন্ন চিন্তা গ্রহণ করা,লোকদের সাথে হাশিখুশিতে থাকা।

ইবনে হাজার হাইতামি রাহ এ সম্পর্কে বলেন,
( وسئل نفع الله به عن داء الوسوسة هل له دواء ؟
فأجاب بقوله : له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان - فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون) (الفتاوى الفقهية الكبرى 1/149)
মর্মার্থ - পরিপূর্ণ ভাবে এই চিন্তাকে পরিহার করার চেষ্টা করাই এর সর্বোত্তম চিকিৎসা।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ওয়াসওয়াসা রোগ, এমন এক রোগ, যে রোগ হলে তালাক বা কুফরি কোনো কিছুই পতিত হয় না। সুতরাং যেহেতু আপনি ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত, তাই আপনার তালাক কুফরি কোনো কিছুই কার্যকর হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (583,410 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...