আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
146 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
edited by
১. সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আলাইহিস সালাম, রাদিয়াল্লাহু আনহু, রহমাতুল্লাহি আলাইহি, রহিমাহুল্লাহ, দাঃবাঃ, হাফিঃ , ফাক্কাল্লাহু আসরাহ ইত্যাদি শব্দ গুলোর অর্থ এবং কার জন্য কোন শব্দ ব্যবহার করা হয় বিস্তারিত জানালে বেশ উপকৃত হব।

২. মেয়েদের জন্য আলাইহিস সালাম এর জায়গায় আলাইহাস সালাম ব্যবহার হয় , আবার রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বদলে আনহা হয়। তো রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও কি মেয়েদের জন্য অন্য শব্দ ব্যবহার হয়?

৩. ইউটিউবে কিছু চ্যানেলে ইসলামি অডিওবুক প্রচার করে, এগুলো শুনার হুকুম কি?

৪. দরকারি কাগজ / টাকায় নাপাকি লাগলে পরিষ্কার কিভাবে করব? বেশি ঘসলে তো লেখা উঠে যাওয়া বা ছিড়ে যেতে পারে, এক্ষেত্রে কি করণীয়?

৫. দেশের পরিস্থিতিতে কোন বিচারের জন্য প্রচলিত আইনের আশ্রয় নেয়া কি কুফর / শিরক হবে? আমাদের দেশে কি ইসলামিক কোনো বিচারের ব্যবস্থা আছে?

৬. গাইরুল্লাহ এর বিধানের আনুগত্য শিরক, এ শিরক থেকে বাচতে আমাদের কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
★সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অর্থঃ-
তার উপর দরুদ নাযিল হোক।

এটি শুধুমাত্র রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নামের সাথেই বলা যাবে।

★عليه السلام ‘আলাইহিস সালাম।
 ’ অর্থ, তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।

যারা নবী নন,তাদের নামের শেষে সরাসরি আলাইহিস সালাম বলা জায়েজ নয়।
হ্যাঁ যদি আম্বিয়ায়ে কেরামদের নাম আলোচনার সাথে তারা ব্যাতিত অন্য কোনো নেককারদের নামও আলোচনা করা হয়,তাহলে শেষে তাবে' হিসেবে আলাইহিস সালাম বলা,লেখা ছহীহ আছে। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৫/৯০,আহসানুল ফাতওয়া ৯/৩৫,)
(আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ১/১০২),
,
পারিভাষিক অর্থে আলাইহিস সালাম আম্বিয়ায়ে কেরামদের নামের সাথেই খাছ।

তবে যিমানান,তাবআন তাদের সংশ্লিষ্টদের নামের সাথেও এটা বলা,লেখা জায়েজ আছে।
সুতরাং যখন শুধু হযরত হুসাইন  এর নাম বলা হবে,তখন রাদিআল্লাহু আনহু বলতে হবে।
আলাইহিস সালাম বলা যাবেনা।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
سَلٰمٌ عَلٰۤی اِلۡ یَاسِیۡنَ ﴿۱۳۰﴾ 
ইলয়াসীনের উপর শান্তি বৰ্ষিত হোক।
(সুরা আস সফফাত ১৩০)

سَلٰمٌ عَلٰی مُوۡسٰی وَ ہٰرُوۡنَ ﴿۱۲۰﴾ 
মূসা ও হারূনের প্রতি সালাম (শান্তি ও নিরাপত্তা)।
(সুরা আস সফফাত ১২০)

سَلٰمٌ عَلٰی نُوۡحٍ فِی الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۷۹﴾ 
সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।
(সুরা আস সফফাত ৭৯)

ولا یصلی علی غیر الأنبیاء ولا علی غیر الملائکۃ إلا بطریق التبع۔ (تنویر الأبصار علی الدر المختار، کتاب الخنثیٰ / مسائل شتی ۶؍۷۵۳ دار الفکر بیروت، ۱۰؍۴۸۳ زکریا، معارف القرآن ۲۲۳۷، کذا في النووي علی شرح صحیح مسلم ۱؍۱۷۶، مستفاد: فتاویٰ احیاء العلوم ۱؍۱۵۴) 

সারমর্মঃ আম্বিয়া ব্যাতিত অন্য কাহারো নামে দরুদ, আলাইহিস সালাম বলা যাবেনা। 
তবে তাবে' হিসেবে সকলের নামের শেষে বলা যাবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


★رضي الله عنه 
‘রাদিয়াল্লাহু আনহু’ ‘রাযিয়াল্লাহু আনহু’, 
 বাক্যের অর্থ হলো- আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন।  
‘রাদিয়াল্লাহু আনহুম’ আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন।  
,
রাদিয়াল্লাহু আনহু এটা সাধারণ ভাবে ছাহাবায়ে কেরাম রাঃ দের জন্য ব্যবহার করা হয়,অন্যান্য ব্যাক্তিদের জন্য রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলা যায়।

হ্যা যদি কেহ অন্যান্য ব্যাক্তিদের ক্ষেত্রেও রদিয়াল্লাহু আনহু বলে,লিখে,তাহলে সেটি নাজায়েজ নয়।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৫/৯১)
,
یستحب الترضي والترحم علی الصحابۃ والتابعین، فمن بعدہم من العلماء والعباد وسائر الأخیار، فیقال: رضي اللّٰہ عنہ، أو رحمہ اللّٰہ ونحو ذٰلک۔ وأما ما قالہ بعض العلماء: إن قولہ: رضي اللّٰہ عنہ مخصوصٌ بالصحابۃ، ویقال في غیرہم: رحمہ اللّٰہ فقط، فلیس کما قال، ولا یوافق علیہ؛ بل الصحیح الذي علیہ الجمہور استحبابہ، ودلائلہ أکثر من أن تحصر۔ فإن کان المذکور صحابیًا ابن صحابي قال: قال ابن عمر رضي اللّٰہ عنہما، وکذا ابن عباس، وابن الزبیر، وابن جعفر، وأسامۃ بن زید ونحوہم، یشملہ وأباہ جمیعًا۔ (کتاب الأذکار للنووي، باب الصلاۃ علی الأنبیاء واٰلہم تبعًا لہم صلی اللّٰہ علیہ وسلم / فصل: یستحب الترضي والترحم علی الصحابۃ والتابعین ۱۶۰ دار البیان بیروت)
সারমর্মঃ ছাহাবায়ে কেরামদের নামের সাথে রাদিআল্লাহু আনহু বলা মুসতাহাব।
কেহ কেহ এটা ছাহাবায়ে কেরামদের সাথেই খাছ বলেছেন।
,
কেহ কেহ বলেছেন যে অন্যান্য ব্যাক্তিদের নামের সাথেও এটা বলা যাবে।

ویستحب الترضي للصحابۃ، وکذا من اختلف في نبوتہ کذي القرنین ولقمان والترحم للتابعین ومن بعدہم من العلماء والعباد وسائر الأخیار، وکذا یجوز عکسہ الترحم للصحابۃ والترضي للتابعین ومن بعدہم علی الراجح (الدر المختار) قولہ: ویستحب الترضي للصحابۃ: لأنہم کانوا یبالغون في طلب الرضاء من اللّٰہ تعالیٰ، ویجتہدون في فعل ما یرضیہ، ویرضون بما یلحقہم من الابتلاء من جہتہ أشد الرضا، فہٰؤلاء أحق بالرضا، وغیرہم لا یحلق أدناہم، ولو أنفق ملء الأرض ذہبًأ۔ (الدر المختار مع الشامي، کتاب الخنثیٰ / مسائل شتی ۱۰؍۴۸۵ زکریا، ۶؍۷۵۴ کراچی) 
সারমর্মঃ ছাহাবায়ে কেরামদের নামের সাথে রাদিআল্লাহু আনহু বলা মুসতাহাব।
কেহ কেহ এটা ছাহাবায়ে কেরামদের সাথেই খাছ বলেছেন।

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
★রহমাতুল্লাহি আলাইহি অর্থঃ আল্লাহ তার উপত রহমত নাযিল করুন। এটি বুযুর্গ সম্মানিত মাইয়্যিতদের শানে বলা হয়।

★রহিমাহুল্লাহ অর্থঃ আল্লাহ তাকে রহম করুন।
এটি যেকোনো বুযুর্গ/সম্মানিত ব্যাক্তিদের শানে বলা হয়।

★দা; বা; এর গাঠনিক শব্দ দামাত বারকাতুহুম।
'দামাত বারকাতুহুম ' এটি দু'টি আরবি শব্দ দ্বারা গঠিত যার মধ্যে একটি শব্দ 'দামাত' যার শাব্দিক অর্থ স্থায়ী এবং 'বারকাতুহুম' এটি বারকত শব্দের বহুবচন যার শাব্দিক অর্থ কল্যাণময়।
অর্থাৎ এটি একপ্রকার দুয়া যার পারিভাষিক অর্থ দ্বারায় স্থায়ীভাবে অগণিত কল্যাণ বর্ষিত হওয়ার জন্য দোয়া করা।

এটি যেকোনো বুযুর্গ/সম্মানিত ব্যাক্তিদের শানে বলা যাবে।

★হাফিঃ অর্থাৎ আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন।
এটি যেকোনো বুযুর্গ/সম্মানিত ব্যাক্তিদের শানে বলা যাবে।

★ফাক্কাহাল্লাহু আসরাহু এর অর্থ আল্লাহ তার বন্দীত্বকে মুক্ত করুক।তাকে আযাদ করুক।অথবা তার বন্দী কোনো আপনজনকে আল্লাহ মুক্ত করুক।

এটি সাধারণত বন্দী তথা কয়েদির মুক্তির দোয়া হিসেবে বলা হয়।

(০২)
রহমাতুল্লাহি আলাইহা বলা যাবে।
তবে এটি প্রসিদ্ধ নয়,তাই স্বাভাবিক যেটি প্রসিদ্ধ, সেটি বলাতে সমস্যা নেই।

(০৩)
সংরক্ষিত প্রকাশনার না হলে কোনো সমস্যা নেই।

সংরক্ষিত প্রকাশনার হলেও অনুমতি নেয়া হলে কোনো সমস্যা নেই।

তবে সংরক্ষিত প্রকাশনার হলে অনুমতি না নিলে এভাবে অডিও করা হলে তাহা শোনা যাবেনা।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
ধুয়ে শুকাতে হবে।

(০৫)
ক,
প্রচলিত আইনের আশ্রয় নেয়া কুফর / শিরক হবেনা।

খ, 
না নেই।

(০৫)
নিকটতম কোনো দারুল ইফতা থেকে সরাসরি জেনে নেয়ার পরামর্শ থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...