আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
edited by
একজন বোন ২০ সপ্তাহ অর্থ্যাৎ ৫ মাসের গর্ভবতী। গর্ভের বাচ্চার শুরু থেকেই নানান সমস্যা ছিল,শারীরিক মানসিক সমস্যার কথা বলেছিল যেসব কারনে গর্ভপাতের কথা ডাক্তার বলেছিল কিন্তু ডাক্তার নিশ্চিতভাবে হবেই বলতে না পারায় , সে আশায় ছিলো হয়তো বাচ্চা বড় হতে হতে সে ঠিক হয়ে যাবে।কিন্তু ২০ সপ্তাহের আল্ট্রাতে দেখা গেছে বাচ্চার সমস্যা অনেক বেশি বেড়ে গেছে,কিছুই ঠিক হয়নি।বাচ্চার পা বাঁকা ফলে সে হাটতে পারবে না,হাতও বাঁকা,মেরুদন্ডের হাড় বাঁকা,বাচ্চার চেহারা অস্বাভাবিক,ঘাড়েও সমস্যা ,বাচ্চার হাত পা ও অনেক ছোট ফলে সে সাধারন বাচ্চাদের মতো বড় হবেনা এবং এছাড়াও বাচ্চার মানসিক সমস্যা থাকার সম্ভবনা অনেক বেশী আর শারীরিক সমস্যাগুলোও ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।প্রত্যেকটা ব্যাপার ব্রেইন থেকে কানেক্টেট হলে ব্যপারগুলা সিউর যে কখনো ঠিক হবেনা কিন্তু এটি পুরোপুরি সিউর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করলে পরবর্তীতে মায়ের জীবন আশংকিত হতে পারে।একজন বিশেষজ্ঞ মুসলিম ডাক্তারের সব রিপোর্ট দেখে বলছে,এই প্রেগনেন্সি কন্টিনিউ করলে ফ্যামিলি এবং বাচ্চা উভয়ের জীবন কষ্টকর এবং মানসিক স্বাস্থে প্রভাব পরবে।এছাড়াও দেশের বাইরে থাকার দরুন এই দম্পতিকে সাপোর্ট দেওয়ার মতো কেউ নেই,বাবাকে সারাদিন বাইরে থাকতে হবে জীবিকার তাগিদে,মাকে একা এমন অসুস্হ বাচ্চা যে নিজে কিছু করতে পারবেনা,বুঝবেনা তাকে মানুষ করা,হসপিটালে যাওয়া কষ্টসাধ্য,এমনকি পরবর্তীতে ২য় বাচ্চা নেওয়ার কথা চিন্তা করাও কঠিন হয়ে যাবে।এ অবস্হাতে কি গর্ভপাত জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (564,690 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যদি বাচ্চার শরীরে রুহ চলে আসে, তাহলে তা নষ্ট করা যাবে না। নষ্ট করা জায়েজ হবে না।

পেটের বাচ্চার শরীরে রূহ আসে চার মাস পর। অর্থাৎ ১২০ দিন পর। পেটের বাচ্চার এতদিন হয়ে গেলে তাকে নষ্ট করা সর্বসম্মত মতানুসারে হারাম।

কিন্তু রূহ আসার আগে নষ্ট করার বিষয়ে ফুক্বাহায়ে কেরামের মত হলো, যদি শারিরীক মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। কিংবা আগত  স্বাস্থ্যগত মারাত্মক সমস্যার শংকা হয়, তাহলে গর্ভজাত সন্তানের শরীরে রূহ আসার পূর্ব হলে গর্ভ নষ্ট করতে পারে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ الصَّادِقُ المَصْدُوقُ، قَالَ: ” إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَبْعَثُ اللَّهُ مَلَكًا فَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ، وَيُقَالُ لَهُ: اكْتُبْ عَمَلَهُ، وَرِزْقَهُ، وَأَجَلَهُ، وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ، ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ الرُّوحُ،

 ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, সত্যবাদী হিসেবে গৃহীত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, নিশ্চয় তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান নিজ নিজ মায়ের পেটে চল্লিশ দিন পর্যন্ত বীর্যরূপে অবস্থান করে, অতঃপর তা জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়। ঐভাবে চল্লিশ দিন অবস্থান করে। অতঃপর তা গোশতপিন্ডে পরিণত হয়ে (আগের মত চল্লিশ দিন) থাকে। অতঃপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। আর তাঁকে চারটি বিষয়ে আদেশ দেয়া হয়। তাঁকে লিপিবদ্ধ করতে বলা হয়, তার ‘আমল, তার রিয্ক, তার আয়ু এবং সে কি পাপী হবে না নেককার হবে। অতঃপর তার মধ্যে আত্মা ফুঁকে দেয়া হয়। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩২০৮]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গর্ভপাত করা রুহ হত্যার শামিল,বিধায় তাহা জায়েজ নেই।

চার মাস অতিক্রম হওয়ার আগেই নষ্ট করলে তাহা জায়েজ হতো,এখন আর জায়েই হবেনা।
এখন রুহ চলে এসেছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
মা বাবার জন্য সন্তানটি খুবই আকাংখিত ছিল কিন্তু পরিস্হিতির কারনে যদি ৪ মাস পর নষ্ট করে ফেলে তাহলে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে ইস্তেগফার করলে,সাদাকা করলে,কাফফারা আদায় করলে আল্লাহ মাফ করবেন না?
by (564,690 points)
মাফ করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মহান আল্লাহর ইচ্ছাধীন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...