আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
480 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (61 points)
আমি সব সময় জানতাম যে দাড়ি রাখা সুন্নাহ+ওয়াজিব এবং গোফ রাখা হারাম। এক্ষেত্রে গোফ মুন্ডন করে কিংবা ছোট করে রাখা যেকোন একটি করলেই হয়ে যাবে। কিন্তু ইদানীং কোথাও কোথাও দেখলাম যে গোফ শুধু ছেটে ছোট করে রাখতে হবে কিন্তু একেবারে মুন্ডন করা যাবেনা। এ ব্যাপারে মাস'আলা টা জানতে চাচ্ছিলাম।

1 Answer

0 votes
by (574,860 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইবনে উমর  রাযি.-এর সূত্রে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন 
خالفوا المشركين اوفروا اللحي وأحفوا الشوارب 
তোমরা গোঁফ ছোট কর এবং দাড়ি লম্বা রাখো।
( বুখারী, ৫৮৯৩ , মুসলিম ৬০০)

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَحْفُوا الشَّوَارِبَ وَأَعْفُوا اللِّحَى " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা গোঁফ খাটো কর এবং দাঁড়ি লম্বা কর।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
(তিরমিযি ২৭৬৩)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ- الْمَعْنَى - قَالَا حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ أَبِي صَخْرَةَ، جَامِعِ بْنِ شَدَّادٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ ضِفْتُ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ فَأَمَرَ بِجَنْبٍ فَشُوِيَ وَأَخَذَ الشَّفْرَةَ فَجَعَلَ يَحُزُّ لِي بِهَا مِنْهُ - قَالَ - فَجَاءَ بِلَالٌ فَآذَنَهُ بِالصَّلَاةِ - قَالَ - فَأَلْقَى الشَّفْرَةَ وَقَالَ " مَا لَهُ تَرِبَتْ يَدَاهُ " . وَقَامَ يُصَلِّي . زَادَ الأَنْبَارِيُّ وَكَانَ شَارِبِي وَفَى فَقَصَّهُ لِي عَلَى سِوَاكٍ . أَوْ قَالَ أَقُصُّهُ لَكَ عَلَى سِوَاكٍ

মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মেহমান হলাম। তিনি আমার জন্য একটি বকরীর রান আনার নির্দেশ দিলেন। রান ভাজি করা হলে তিনি ছুরি নিয়ে আমার জন্য গোশত কাটতে লাগলেন। বর্ণনাকারী বলেনঃ এমতাবস্থায় বিলাল (রাঃ) এসে তাঁকে সলাতের কথা অবহিত করেন। ফলে তিনি ছুরি ফেলে দিয়ে বললেনঃ তার কি হয়েছে! তার হাত ধুলায় ধুসরিত হোক! অতঃপর সলাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন।

বর্ণনাকারী আনবারীর বর্ণনায় আরো আছেঃ আমার (মুগীরাহর) গোঁফ কিছুটা বড় হয়ে গিয়েছিল বিধায় তিনি আমার গোফের নীচে মিসওয়াক রেখে তা ছেঁটে ছোট করে দিলেন। অথবা বললেনঃ আমি তোমার গোঁফ মিসওয়াকের উপর রেখে ছোট করে কেটে দিব।
(আবু দাউদ ১৮৮.আহমাদ (৪/২৫২, ২৫৫), তিরমিযী ‘শামায়িলি মাহমুদিয়্যাহ (হাঃ ১৫৯), নাসায়ী, ‘সুনানুল কুবরা’ (৪/১৫৩))

★গোঁফ চেঁছে ফেলা,মুন্ডানো এবং ছোট করে রাখা উভয়ই জায়েজ। উভয় সুরতই সুন্নতে রাসূল বলে প্রমানিত। তাই একবার চেঁছে একবার ছোট করে উভয় সুন্নতের উপর আমল করা যায়। তবে কোনটি উত্তম এ ব্যপারে মতবিরোধ আছে।

 এক্ষেত্রে সঠিক ফায়সালা হলো-যে ব্যক্তির গোঁফ যেভাবে কেটে  রাখলে সুন্দর দেখায় সেভাবে কেটে রাখা উত্তম। তবে চল্লিশ দিনের বেশি সময় গোঁফ না কাটা মাকরুহ। 

তহাবী শরীফে এসেছে 
1/8 وفى شرح معانى الاثار– قال ابو جعفر- فذهب قوم من اهل المدينة الى هذه الاثار واختاروا لها قص الشارب على احفائه، وخالفهم فى ذلك اخرون فقالوا- بل يستحب إحفاء الشوارب، ونراه افضل من قصها، واحتجوا فى ذلك ما حدثنا محمد ……………… عن ابن عباس رضٍ قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يجز شاربه …………………ابن عمر رضٍ كلاهما عن النبى صلى الله عليه وسلم قال- احفوا الشوارب…………………………………. حدثنا صالح بن عبد الرحمن قال ثنا سعيد بن منصور قال ثنا هشيم عن عمر بن أبي سلمة عن أبيه عن أبي هريرة عن رسول الله صلى الله عليه و سلم أنه قال : أحفوا الشوارب وأعفوا اللحى فهذا رسول الله صلى الله عليه و سلم وقد أمر بإحفاء الشوارب فثبت بذلك الإحفاء على ما ذكرنا في حديث بن عمر وفي حديث بن عباس وأبي هريرة جزوا الشوارب فذاك يحتمل أن يكون جزا معه الإحفاء ويحتمل أن يكون على ما دون ذلك فقد ثبت معارضة حديث بن عمر بحديث أبي هريرة وعمار وعائشة الذي ذكرنا في أول هذا الباب باب وأما حديث المغيرة فليس فيه دليل على شيء لأنه يجوز أن يكون النبي صلى الله عليه و سلم فعل ذاك ولم يكن بحضرته مقراض يقدر على إحفاء الشارب ويحتمل أيضا حديث عمار وعائشة وأبي هريرة في ذلك معنى آخر يحتمل أن تكون الفطرة هي التي لا بد منها وهي قص الشارب وما سوى ذلك فضل حسن فثبتت الآثار كلها التي رويناها في هذا الباب باب ولا تضاد ويجب بثبوتها أن الإحفاء أفضل من القص وهذا معنى هذا الباب من طريق الآثار وأما من طريق النظر فإنا رأينا الحلق قد أمر به في الإحرام ورخص في التقصير فكان الحلق أفضل من التقصير وكان التقصير من شاء فعله ومن شاء زاد عليه إلا أنه يكون بزيادته عليه أعظم أجرا ممن قص فالنظر على ذلك أن يكون كذلك حكم الشارب قصه حسن وإحفاؤه أحسن وأفضل وهذا مذهب أبي حنيفة وأبي يوسف ومحمد رحمهم الله وقد روى عن جماعة من المتقدمين ما قد حدثنا………………..الخ (شرح معانى الأثار-2/332-333)
যার সারমর্ম হলো  গোঁফ চেঁছে ফেলা,মুন্ডানো এবং ছোট করে রাখা উভয়ই সুন্নতে রাসূল বলে প্রমানিত।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে এসেছেঃ   
    وفى رد المحتار– وَاخْتُلِفَ فِي الْمَسْنُونِ فِي الشَّارِبِ هَلْ هُوَ الْقَصُّ أَوْ الْحَلْقُ ؟ وَالْمَذْهَبُ عِنْدَ بَعْضِ الْمُتَأَخِّرِينَ مِنْ مَشَايِخِنَا أَنَّهُ الْقَصُّ .قَالَ فِي الْبَدَائِعِ : وَهُوَ الصَّحِيحُ .
وَقَالَ الطَّحَاوِيُّ : الْقَصُّ حَسَنٌ وَالْحَلْقُ أَحْسَنُ ، وَهُوَ قَوْلُ عُلَمَائِنَا الثَّلَاثَةِ نَهْرٌ (رد المحتار -كِتَابُ الْحَجِّ بَابُ الْجِنَايَاتِ الْجِنَايَةُ  ج 8 / ص 411)
যার সারমর্ম হলো এই ব্যাপারে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে, মুতায়াখখিরিন দের মত হলো কেটে ফেলতে হবে,তহাবী রহঃ বলেছেন কেটে ফেলা ভালো,মুন্ডানো আরো ভালো।      

         وفى الجامع الصغيرللسيوطى – الفطرة خمس : الختان و حلق العانة و نتف الإبط و تقليم الأظفار و حلق الشارب . تخريج السيوطي (ن ) عن أبي هريرة تحقيق
الألباني8458(صحيح وضعيف الجامع الصغير – (ج 18 / ص 105
যার সারমর্ম হলো মোছ হলক, ন্যেরে করে দেওয়া,মুন্ডানো  ফিতরতের মধ্য হতে,,,

       وفى رد المحتار ( قَوْلُهُ وَكُرِهَ تَرْكُهُ ) أَيْ تَحْرِيمًا لِقَوْلِ الْمُجْتَبَى وَلَا عُذْرَ فِيمَا وَرَاءَ الْأَرْبَعِينَ وَيَسْتَحِقُّ الْوَعِيدَ ا هـ وَفِي أَبِي السُّعُودِ عَنْ شَرْحِ الْمَشَارِقِ لِابْنِ مَلَكٍ رَوَى مُسْلِمٌ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ” { وُقِّتَ لَنَا فِي تَقْلِيمِ الْأَظْفَارِ وَقَصِّ الشَّارِبِ وَنَتْفِ الْإِبِطِ أَنْ لَا نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً } ” (رد المحتار – ج 9 / ص 583
তবে তবে চল্লিশ দিনের বেশি সময় গোঁফ না কাটা রাখা যাবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...