আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
234 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (14 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম

আমি ইদানিং খুব সমস্যায় আছি অতিতের কিছু ঘটনা নিয়ে ।গত এক বছর যাবত এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে করতে আরো বেশি ওয়াস ওয়াসায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছি ২/৩ মাস । বার বার প্রশ্ন না করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি একবারে প্রশ্ন করবো তাই একটু বড় হয়ে যাবে প্রশ্ন গুলো তাই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

(১)

আনুমানিক ২ বছর আগে একদিন তুমুল ঝগড়া হয় স্ত্রীর সাথে ,ঝগড়া বলতে খুব মারাত্মক আকারে । ঝগড়ার এক পর্যায়ে তারকাছে কাবিন নামা চাইতে লাগলাম সেটা তার কাছেই ছিলো । সে  বলে কাবিনা নামা তার কাছে নাই , এমতাবস্থায় ফ্যামিলির অন্য সদস্যরা আমাকে বলে  বের হয়ে যেতে। আমি বাসা থেকে বের হয়ে  তাকে আবার  ফোন দিয়ে কাবিননামা চাইতে থাকি ,কেন কাবিননামা চাইছি জিজ্ঞেস করলে বলি "ছেড়ে দেবো তোকে তাই কাবিননামা লাগবো"। আমার বাবার সাথে এই বিষয়ে কথা হলে জিজ্ঞেস করে, কি করবি ? তখনো উত্তরে  বলি খুব সম্ভবত স্পষ্ট মনে নেই "ছেড়েই দিবো ""।উত্তরে আমার বাবা রাগ করে বলে কাবিনের টাকা শোধ করতে পারলে ছেড়ে দিস। তখন আমি বলি"ছেড়ে দিলে কাবিনের টাকাও দিয়ে দিবো "। উনারা ও কেউ চাইতো না এরকম হউক।মুখে তা---  বা ছেড়ে দিলাম বা অন্য কিছু বলা হয় নাই এটা অনেকটা নিশ্চিত কারন এমন কিছু বললে তারোও মনে থাকতো কিন্তু সেও সিউর না মনে করতে পারছেনা ।ঘটনার পর ফ্যামিলিগত ভাবে সমাধান করা হয় আর আমরাও ভুলে যাই এইসব বিষয়। কিন্তু এখন চিন্তা করলে কোন কথাই সিউর হয়ে ঊঠতে পারিনা তখন কি বলেছি কি বলিনি ।এখানে অনেক উত্তর দেখলাম  "ছেড়ে দেবো তোকে " এটা ভবিষ্যতের দিকে ইংগিত করে এটা  বললে কোন সমস্যা হবে না ।  কিন্তু এখন স্পষ্ট ভাবে কিছুই মনে করতে পারছিনা তখন কি বলেছিলাম , এর সাথে অন্যকিছু বলেছি কিনা,একেক সময় একেকটা মনে হচ্ছে । মানসিক যন্ত্রনা দিচ্ছে। সব কথাই গুলিয়ে ফেলছি । অনেক আলোচনা জিজ্ঞাসা করেছি এইসমস্ত বিষয়ে , বারবার একই কথা জিজ্ঞেস করাতে প্রচন্ড বিরক্ত আমার উপর। জিজ্ঞাসা করলে ঝগড়ার আশংকা আছে তাই জিজ্ঞেস ও করতে পারছিনা।এই সমস্যার সমাধান কি ?

(২)

অতিতে অনেক ঝগড়া,কলহ-বিবাদ ,গালাগালি হয়েছে আমাদের মাঝে। কিন্তু কোন কিছু স্পস্ট আকারে মনে পরছে না। ২/৩ বছর আগের কথা একেক সময় একেকটা মনে হয়,এটা বলেছি কিনা সেটা বলেছি কিনা অথবা বললে কোন নিয়তে বলেছি। স্পষ্ট মনে নেই। এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে করতে নতুন করে ওয়াস ওয়াসায় আক্রান্ত হচ্ছি। একজন মুফতি কে জিজ্ঞেস করেছিলাম উনি বলেছে , আগের কথা বাদ দিয়ে ভবিষ্যতের দিকে সতর্ক হউন, শরিয়তে সন্দেহের কারনে কোন কিছু পতিত হয় না। কিন্তু তারপরও এসব চিন্তা থেকে কিছুতেই বের হতে পারছিনা । বারবার একই চিন্তা এসে পরে । অতিতের বিষয়ে এখন করনিয় কি, এটা স্পষ্ট ভাবে মনে করা তো আমার সাধ্যের বাইরে। আবার চিন্তা হয় কোন ভুলের কারনে আল্লাহ পাকড়াও করে কিনা এই টেনশনে শেষ হয়ে যাচ্ছি। সমাধান জানাবেন এখন করনিয় কি?

(৩)

এইসব  নিয়ে চিন্তা করতে করতে নতুন নতুন ওয়াস ওয়াসা হয়েই যাচ্ছে। সারাক্ষন শুধু এইসব থাকে মাথায়। গোসল করতে , খাবার খাওয়ার সময়, ব্রাশ করা অবস্থায় , নামাজে , দোয়া পরতে এমন কি ঢোক গিলতে ,কাশি দিলে মনে হয় মুখ দিয়ে তা**** কথাটা বের হয়ে গেলো। কানে শুনতে পাইনা মনে হয় জিহবা টা নড়লো কিছুটা কিন্তু ঠোট বন্ধ থাকে।পরে আবার চেক করি ঠোট নড়লো কিনা।স্ত্রীর সাথে কথা বলতে ভয় পাই । পাগল হয়ে যাচ্ছি একদম। মুখ খোলা রাখতে ভয় হয়। আমি তো আমার স্ত্রীকে এখন ছাড়তে চাইনা। আমরা এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছি আল্লাহ আমাদের ভালো রাখছে।এভাবে ও কি অইটা হয়ে যায় ? এগুলো কি ওয়াস ওয়াসা? করনিয় নি

(৪)

মাথায় সারাদিন শুধু এইগুলোই ঘুরে। মনে হয় মুখ দিয়ে বের হয়ে যাবে কথাটা। যদি বের হয়ে যায় অনিচ্ছাকৃত ভাবে তাহলেও কি তা***** হিয়ে যাবে। সাধারণ অবস্থায় এইটা আমি স্ত্রীকে বলতেই চাইনা। কিন্তু ওয়াস ওয়াসায় যদি বাধ্য হয়ে মুখ থেকে বের হয়ে যায় সেই টেনশনে পাগল হয়ে যাচ্ছি।

(৫)

আমরা কি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবো ?সারাক্ষণ সন্দেহ হয় আমাদের সম্পর্ক কি ঠিক আছে ।  অতিতের কথা নিয়ে খুব চিন্তিত। আল্লাহ যদি আমাদেরকে সুযোগ দেন তাহলে আমার কি উচিৎ হবে অতিতের কথা নিয়ে আর চিন্তা করা? হঠাৎ করে যদি অতীত এর বিষয়ে নতুন কোন প্রশ্ন বা সন্দেহ মনে হলে কি করনিয়?

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক শব্দ। এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

শরীয়তের বিধান হলো সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো তালাক পতিত হয়না।  

قال العلامۃ الحموی: فحلفہ باطل ای فلا شییٔ علیہ قیل اما الطلاق والعتاق فانہما لا یقعان بالشک۔ (غمز عیون البصائر علی الاشباہ ۱:۱۹۸ القاعدۃ الثالثۃ)
সারমর্মঃ  
তালাক এবং গোলাম আযাদ,এ দুটি বিষয় সন্দেহের ভিত্তিতে পতিত হয়না।  

বিস্তারিত জানুনঃ- 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
আপনি ভবিষ্যতের দিকে ইঙ্গিত করে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন বা সন্দেহে থাকেন,প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা।

আপনি নিশ্চিত থাকুন।

(০২)
আপনি টেনশন করবেননা,আল্লাহ তায়ালা আপনাকে পাকড়াও করবেননা।

আপনি হতাশ না হয়ে নিশ্চিন্তে সংসার চালিয়ে যান।

(০৩)
হ্যাঁ, এগুলো ওয়াসওয়াসা।
আপনার জন্য এগুলোকে পাত্তা না দেয়া আবশ্যক। 
যখনই মাথায় এগুলো আসবে,তখনই বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন 

(০৪)
স্ত্রীকে তালাক দেয়ার উদ্দেশ্য না করে এমনিতেই মুখ দিয়ে উচ্চারণ হলেই তালাক হবেনা।

(০৫)
আপনারা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।

অতীত এর বিষয়ে নতুন কোন প্রশ্ন বা সন্দেহ মনে হলে করনীয় হলো,সেগুলোকে পাত্তা দিবেননা। 

অন্য কোনো কথা বা কাজে মনোযোগী হয়ে যাবেন।
যখনই মাথায় এগুলো আসবে,তখনই বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন। 

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (14 points)
জাযাকাল্লাহ খায়ের। আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুক।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...