আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আমার হাজবেন্ড ইউরোপীয় একটি দেশে থাকেন।সেখানে একটি রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ হিসেবে কর্মরত।রেস্টুরেন্টের মালিক মুসলিম হলেও তিনি এলকোহল ও শুকুরের মাংসের ডিশ বিক্রি করেন।এই কাজের জন্য আলাদা লোক থাকলেও অনেক সময় লোক কাজে না আসলে বা অন্যান্য ঝামেলায় অনিচ্ছায় এই রান্না করতে হয়।এতে কি তার পুরো ইনকাম ই হারাম হয়ে যাচ্ছে?আমি উমরাহর জন্য টাকা জমাচ্ছি,আমি কি এই টাকায় যেতে পারব?আমার হাজবেন্ড নতুন চাকরি খুজতেছেন।আমি কি এখন সম্পূর্ণ হালাল রেস্টুরেন্টে যাবার পর টাকা জমাবো?আগের ইনকাম যদি হারাম হয় তাহলে কি করনীয়?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


https://ifatwa.info/25032/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّه سَمِعَ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ يَقُولُ عَامَ الْفَتْحِ وَهُوَ بِمَكَّةَ : «إِنَّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَه حَرَّمَ بَيْعَ الْخَمْرِ وَالْمَيْتَةِ وَالْخِنْزِيرِ وَالْأَصْنَامِ». فَقِيلَ : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! أَرَأَيْتَ شُحُومَ الْمَيْتَةِ؟ فَإِنَّه تُطْلٰى بِهَا السُّفُنُ وَيُدْهَنُ بِهَا الْجُلُودُ وَيَسْتَصْبِحُ بِهَا النَّاسُ؟ فَقَالَ : «لَا هُوَ حَرَامٌ». ثُمَّ قَالَ عِنْدَ ذٰلِكَ : «قَاتَلَ اللّٰهُ الْيَهُودَ إِنَّ اللّٰهَ لَمَّا حَرَّمَ شُحُومَهَا أَجْمَلُوهُ ثُمَّ بَاعُوهُ فَأَكَلُوا ثَمَنَه». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন মক্কা বিজয়ের বৎসর, সেখানে অবস্থানকালে আল্লাহ ও তাঁর রসূল মদ বিক্রি, মৃতজীব বিক্রি, শূকর বিক্রি, কোনো প্রকার মূর্তি বিক্রি হারাম করে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! মৃত জীবের চর্বি নৌকায় (বিভিন্ন চামড়াজাত দ্রব্যে) লাগানো হয় এবং লোকেরা তা দিয়ে বাতি জ্বালিয়ে থাকে, তা বিক্রি করা সম্পর্কে আপনার সিদ্ধান্ত কি? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তা-ও বিক্রি করা যাবে না, এটাও হারাম। অতঃপর এর সাথে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথাও বললেন, আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদী জাতিকে ধ্বংস করুন। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য যখন (হালাল যাবাহকৃত জীবেরও) চর্বি হারাম করলেন, তখন তারা (অবাধ্য হয়ে কৌশল অবলম্বন করে) তা গলিয়ে বিক্রি করতে লাগলো ও এর মূল্য ভোগ করতে থাকলো। 
(সহীহ : বুখারী ২২৩৬, মুসলিম ১৫৮১, আবূ দাঊদ ৩৪৮৬, নাসায়ী ৪২৫৬, তিরমিযী ১২৯৭, ইবনু মাজাহ ২১৬৭, আহমাদ ১৪৪৯৫, ইরওয়া ১২৯০।)

যে কোন বিষয়ের ‘হারাম হওয়া’ সাব্যস্ত হলে সে বিষয়ে সহযোগিতা করাও হারাম। যেমন- কোন রেস্টুরেন্টে মদ, মৃতজন্তু, বন্য গাধার গোশত ইত্যাদি পরিবেশন করার কাজ করা।

সৌদি আরবের ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যে সকল হোটেলে শূকরের গোশত, মদ পরিবেশন করা হয় সে হোটেলে চাকুরি করা জায়েয কি না? তারা উত্তরে বলেছেন, এ সকল হোটেলে কাজ করা হারাম। সেখানে কাজ করে যা উপার্জন করা সেটাও হারাম। কেননা এটা অবৈধ বা হারাম কাজে সহযোগিতা। হারাম কাজে সহযোগিতা করা আল্লাহ নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, “মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না।”[সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ২]
তাই আমরা আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি- আপনি এ জাতীয় হোটেলে চাকুরি করা পরিহার করুন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যা হারাম ও অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন তা করতে কাউকে সাহায্য সহযোগিতা করবেন না।[ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (১৩/৪৯)]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যে সমস্ত বস্তু হারাম,যেমন 
এলকোহল ও শুকুরের মাংসের ডিশ, ইত্যাদি। 
সে সমস্ত পন্য রান্না করা, বিক্রয় করা হারামের সহযোগিতা হিসেবে হারাম হবে।
সেই পরিমান উপার্জিত অর্থও হারাম হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনার স্বামীর সম্পূর্ণ ইনকাম হারাম নয়।
তিনি হিসেব করবেন যে মাসের কয়দিন,কয় ঘন্টা এরকম হারাম খাদ্য রান্না করছেন,হিসেব করে সেই সময় পরিমান ইনকামকে হারাম হিসেবে ধরবে।
আর বাকি সম্পূর্ণ ইনকাম হালাল থাকবে।

যেহেতু এই কাজটি আপনার স্বামীর করার দায়িত্ব নয়,এর জন্য আলাদা কাজের লোক আছে।
সেই লোক কাজে না আসলে বা অন্যান্য ঝামেলায় অনিচ্ছায় এই রান্না করতে হয়।
সেক্ষেত্রে মনে হচ্ছে যে মাসে যদি এই কাজ আপনার স্বামীকে অধিকাংশ দিন করতে হয়না,সেই হিসেবে আপনি উক্ত টাকা হতে উমরাহ এর জন্য টাকা জমাতে পারবেন।

স্বামীকে বলে দিবেন,যতটুকু সময় সেই এসব হার খাবার রান্না করেছে,সেই সময় পরিমান বেতনের টাকা হার ধরে নিয়ে গরিব মিসকিনকে দিয়ে দিবে।
,
আর সম্পূর্ণ হালাল চাকুরী তালাশের চেষ্টা করতে থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...