আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
477 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আস সালামু আলাইকুম।

আমার প্রশ্ন হল,

১. আমি একদিন বাইরে থেকে এসে মোবাইল দেখছি,এমন সময় আমার স্ত্রী আমাকে রান্নায় হেলপ করতে খুব পীড়াপীড়ি করছে।আমি তাও যাচ্ছি না।তখন সে অন্যদের কথা বলছে যে তারা তার স্ত্রীদের রান্না করে খাওয়ায়। তার ছোটবোনের স্বামী তার বোনকে রান্না করে খাওয়ায়,এটা সেটা।আমি তখন রেগে গিয়ে বললাম যাও ওর/ওদের কাছে চলে যাও।স্ত্রী বলল যাবনে।আমি বললাম একেবারে চলে যাও রান্না করে খাওয়াবে।
এখন আমার মনে শুধু সন্দেহ আসছে যে,এই যে আমি বললাম ওর কাছে একেবারে চলে যাও এতে কি কেনায়া হল কি না।

আমি কিন্তু তখন জানতামই না যে এসব কথায় তালাক হতে পারে,সেজন্য তালাকের নিয়ত করে পরিকল্পিতভাবে বলা হয় নি।কিন্তু মনে হচ্ছে যেহেতু একেবারে চলে যেতে বলেছি এতে কোন সমস্যা হল কি না।

আমি এমনিতেই সন্দেহের রুগী।এটা নিয়ে খুব উদ্ভিগ্ন।আপনারা অধিকাংশ প্রশ্নে উত্তর দেন যদি নিয়ত থাকে তবে কেনায়া হবে, তো আমার এখানে আমি ত বলেছি পরিকল্পিত ভাবে তালাকের উউদ্দেশ্যে বলা হয় নি এটা নিশ্চিত কিন্তু একেবারে চলে যাও বলার কারণে সন্দেহটা আসতেছে।

২.কেনায়া হলে নতুন করে বিবাহ পড়াব কিভাবে।কোন পরিচিত লোকের দ্বারা এটা করা সম্ভব না।যদি রাস্তায় বের হয়ে অপরিচিত দুইজন লোক বা ফকির দুই জনএর সামনে আমরা স্বামী স্ত্রী ইজাব কবুল করি নতুন মোহর ধার্য্য করে তাহলে কি বিয়ে নবায়ন হবে?


৩.আপনাদের অফিসের কোন ঠিকানা দিতে পারবেন আমার মেইলে।*Emails are not allowed*.অথবা কোন ফোন নম্বর বা হটলাইন নম্বর যেখানে বিষয়টা নিয়ে কাউন্সিলিং করতে পারব।আর বিয়ে নবায়নের দরকার হলে আপনাদের এখানে ঢাকায় কোন মুফতি সাহেবের কাছে এসে করার ব্যবস্থা থাকলে খুব উপকৃত হতাম।বিষয়টি নিয়ে আমি খুব হতাশায় আছি।কাজকর্ম কিছুই করতে পারছি না।একজন মুসলিম ভাই হিসেবে আমাকে এই সন্দেহ থেকে উদ্ধার করবেন।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় ইঙ্গিত সূচক শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

আরো জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এতে তালাক হবেনা।

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তালাক হয়নি।
,
(কোনো ব্যাক্তি যদি কেনায়া বাক্যের মাধ্যমে স্ত্রীকে তালাক দেয়,সেক্ষেত্রে বায়েন তালাক পতিত হবে। উক্ত স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে নিতে চাইলে প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি অবলম্বন করে বিবাহ নবায়ন হবে। তবে উল্লেখিত দুইজন ফকির বা দুইজন লোক অবশ্যই বালেগ হতে হবে ও পুরুষ হতে হবে।)

(০৩)
আপনার তো তালাক হয়নি,সুতরাং বিবাহ নবায়নের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।

আপনি নিশ্চিত থাকুন।
,
অফিসের ঠিকানা জানার জন্য ইনবক্স চেক করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (5 points)
reshown by
আস সালামু আলাইকুম। 
আপনার উত্তর পেয়েছি।কিন্তু এরপরও বিষয়টি নিয়ে মাঝে মধ্যে চিন্তা হয় যে কোন সমস্যা হল কিনা,কারণ আমি যে বলেছি তাকে একেবারে চলে যেতে।যার দরুন আমি মানসিক প্রশান্তির জন্য বাসায় আমার দুই শ্যালক যাদের বয়স ১৮ এর উর্ধ্বে, তাদের সামনে খাওয়ার টেবিলে বিষয়টি এভাবে উপস্থাপন করলাম, আমি বললাম আমি তোমাদের বোনের মোহর বাড়িয়ে দিতে চাই।ও শুধু অভিযোগ করে আমি নাকি মোহর কম দিয়েছি।তাই আজকে দুইজন স্বাক্ষীর সামনে বিয়েটা নবায়ন করে নিচ্ছি।
এভাবে আলোচনা তুলে আমার স্ত্রীকে তাদের সামনে বললাম, শুন আমি ২ লক্ষ টাকা নতুন মোহরে, স্ত্রী বলল আরো বাড়িয়ে দিতে হবে,আমি বললাম আচ্ছা যাও নতুন ৩ লক্ষ টাকা মোহরে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছি রাযি থাকলে বল কবুল,সে হাসতে হাসতে বলল কবুল,আলহামদুলিল্লাহ। আমি এভাবে তিনবার বলেছি।সেও অনেকটা হাসিচ্ছলে বলল কবুল।
এখন প্রশ্ন হল এভাবে ইজাব কবুল কি হয়েছে? এ নিয়ে কি আর কোন সমস্যা থাকল? বিয়ে নবায়ন হয়েছে ত?
by (559,140 points)
জী,এভাবে ইজাব কবুল হয়েছে।
এ নিয়ে আর কোন সমস্যা থাকলোনা।
বিয়ে নবায়ন হয়েছে।
by (5 points)
reshown by
আলহামদুলিল্লাহ। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 
by (5 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,হুজুর আরেকটু বিরক্ত করি।আমি কেনায়া সন্দেহ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম।আপনি উত্তর দিয়েছিলেন যে হয় নি।তবু আমার সন্দেহ হচ্ছিল।মনের সন্দেহ দূর করার জন্য আমার দুই শ্যালকের সামনে ইজাব কবুল করেছিলাম।এর পর আপনি বলেছিলেন যে বিয়ে নবায়ন হয়ে গিয়েছে।কোন সমস্যা থাকল না।
কিন্তু তাও মন মানতে ছিল না,কারণ তারা ত বিষয়টা জানত না যে আমি কেনায়ার জন্য এটি করেছি।পরবর্তীতে দুইজন আলেম তাদেরকে বিষয়টি বলে তাদের সামনে ইজাব কবুল করেছি।তাও মনে হচ্ছিল আমার ওয়াইফ একটু মন খারাপ করে বলেছে মনে হয়।আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তুমি কি মন খারাপ করে কবুল বলেছ? সে বলল মন খারাপ করে বলেনি।
যাক পরবর্তীতে এটা নিয়েও সন্দেহ আর চিন্তা হচ্ছিল যে আসলে হল কি না,আবার মনে হচ্ছিল কেনায়াই ত হয় নি,তাহলে বিয়ে নবায়ন করতে গেলাম কেন? যেহেতু গিয়েছি মানে এটা মেনে নেয়া যে হয়েছে।ইত্যাদি।
এগুলো চিন্তা করে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি।শরীর জ্বালাপোড়া করত।প্রায় দুই মাস এই অবস্থা চলে।কিছুই ভাল লাগত না।অস্থির হয়ে যাই।এক পর্যায়ে এমন চিন্তা আসতে লাগল যে সংসারে মনে হয় কোন ঝামেলা বা অকল্যাণ আছে।ভেংগে দেয়া দরকার তাহলে মনে হয় কল্যাণ আছে.
এক বার মনে হল এটা শয়তানের ওয়াসোয়াসা, তাও নিজেকে অশান্তি আর অস্থির করে তুললাম।কোনভাবেই সৈহ্য করতে পারছিলাম না।ঘুম ভাংলেই এই চিন্তা।কাউকে বলতেও পারছিলাম না।
এক পর্যায়ে আমার ওয়াইফকে বিষয়টা এভাবে শেয়ার করলাম যে,আমার ত আরো ভয়নকর চিন্তা আসতেছে।শয়তান এখন এরকম চিন্তা দিচ্ছে যে, "আমি যেন সংসার ভেংগে দিই,বিচ্ছিন্ন থাকি,ইত্যাদি।আবার চিন্তা করি বাচ্ছা কাচ্ছার কি হবে।আমি কোথায় থাকব,তখন মনে হয় মেসে থাকব" এরকম আমার চিন্তার অবস্থাটা আমার ওয়াইফকে বললাম।
এটা বলার সময় তখনই আমার স্ত্রীকে আবার বললাম,দেখ এই যে তোমাকে আমার এই অবস্থার কথা জানালাম দেখ এটা নিয়ে আবার কি সন্দেহ তৈরি হয়।
ঠিকই এখন এটা নিয়ে আবার সন্দেহ হচ্ছে যে আমার ওয়াইফকে যে এগুলো বললাম এতে আবার নতুন করে কেনায়া হয়ে গেল কি না? আমি বুঝতেছি যে পুরা বিষয়টাই আসলে শয়তানের কুমন্ত্রণা। আগেরটাও ছিল কুমন্ত্রণা। এখন আবার পরেরটা আরো ভয়নকর কুমন্ত্রণা, কারণ এখন আবার শয়তান যুক্তি দেখাচ্ছে যে আমি যে সংসার ভেংগে দেয়া বা বিচ্ছিন্ন হওয়ার চিন্তা আসছে এটা বলেছি এতে ত কেনায়া হয়ে গেল।কিন্তু আমি ত কেবল আমার অবস্থাটার বর্ননা দিয়েছি।তাকে ত কিছু বলি নাই।
হুজুর এ ব্যাপারে আপনার মতামত জানিয়ে আমার মনে যেন আর সন্দেহমুক্ত হয়,এবং এটা যে আসলেই অয়াসওয়াসা এটা নিশ্চিত হতে পারি এজন্য আপনি জানাবেন।
আমার ওয়াইফকে আমার চিন্তার এই বিষয়টা বলাতে কি আসলেই কোন সমস্যা হয়েছে নতুন করে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...