আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
238 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
গতকাল আমিও আমার দুই বন্ধু কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে বের হই। তারপর আমার এক বন্ধু তার এক বান্ধবীকে কল করে নিয়ে আসে। তো এরপরে আমরা জানতে পারি যে, বন্ধু কল করো তার বান্ধবীকে নিয়ে এসেছে - সে তার সাথে সেক্স করব।। তো এই জন্য আমি ও আমার বন্ধু  সাড়ে বারোটা থেকে বিকাল সাড়ে ছটা পর্যন্ত তার সাথে থাকি, অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করি, শুধুমাত্র এই জন্য যাতে সেক্স করতে না পারে। এই সম্পূর্ণ সময়টা আমি তার সাথে থাকলেও সেই মেয়ের থেকে একবারও তাকাই নি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে যখনই দুই এক মিনিট এর জন্য আমাদের চোখের আড়াল হয়েছে তখনই তারা নিজেদের প্রাইভ পাঠ টাচ করেছে কিন্তু সম্পূর্ণরূপে তারা সহবাস করতে সক্ষম হয়নি আমাদের কারনে। এ সময়ের মধ্যে ৩ ওয়াক্ত নামাজ চলে গেছে যা আমি আদায় করতে পারিনি। আমি তখন নামাজের জন্য জায়গা খুঁজেছি কিন্তু জায়গা পাইনি এজন্য আদায় করতে পারিনি। কিন্তু আমার নিয়ত ছিল আদায় করার।  তারপর আমরা বাড়িতে এসে আমি আমার নামাজ আদায় করে নেই সবগুলো। এখন আমার প্রশ্ন হল যে,
১.আমার যে নামাজ মিস হলো এজন্য কি আমার গুনাহ হবে নাকি  আমি তাকে সেক্স থেকে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছি এর জন্য সোয়াব হবে।
২. তাদের সাথে জাওয়া টা কি আমার ঠিক হয়েসে.??

৩. ভবিষ্যতে এমন ঘটানো সম্মুখীন হলে কি করব.?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

اَلزَّانِیَۃُ وَ الزَّانِیۡ فَاجۡلِدُوۡا کُلَّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا مِائَۃَ جَلۡدَۃٍ ۪ وَّ لَا تَاۡخُذۡکُمۡ بِہِمَا رَاۡفَۃٌ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ۚ وَ لۡیَشۡہَدۡ عَذَابَہُمَا طَآئِفَۃٌ مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲

ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী তাদের প্ৰত্যেককে একশত বেত্ৰাঘাত করবে, আল্লাহর বিধান কার্যকরীকরণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ্ এবং আখেরাতের উপর ঈমানদার হও; আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্ৰত্যক্ষ করে।

(সুরা নুর ০২)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বরে উপবিষ্ট অবস্থায় বললেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্যসহ প্রেরণ করেন এবং তার প্রতি কিতাব নাযিল করেন। কিতাবে যেসব বিষয় নাযিল করা হয়, তন্মধ্যে প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধানও ছিল, যা আমরা পাঠ করেছি, স্মরণ রেখেছি এবং হৃদয়ঙ্গম করেছি। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও প্রস্তরাঘাতে হত্যা করেছেন এবং তার পরে আমরাও করেছি। এখন আমি আশংকা করছি যে, সময়ের চাকা আবর্তিত হওয়ার পর কেউ একথা বলতে না শুরু করে যে, আমরা প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধান আল্লাহর কিতাবে পাই না। ফলে সে একটি দ্বীনী কর্তব্য পরিত্যাগ করার কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে, যা আল্লাহ তা'আলা নাযিল করেছেন। মনে রেখো, প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধান আল্লাহর কিতাবে সত্য এবং বিবাহিত পুরুষ ও নারীর প্রতি প্রযোজ্য- যদি ব্যভিচারের শরীয়তসম্মত সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থিত হয় অথবা গর্ভ ও স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়৷ [বুখারীঃ ৬৮২৯, মুসলিমঃ ১৬৯১]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ امْرَأَةً، مِنْ جُهَيْنَةَ اعْتَرَفَتْ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالزِّنَا فَقَالَتْ إِنِّي حُبْلَى . فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَلِيَّهَا فَقَالَ " أَحْسِنْ إِلَيْهَا فَإِذَا وَضَعَتْ حَمْلَهَا فَأَخْبِرْنِي " . فَفَعَلَ فَأَمَرَ بِهَا فَشُدَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا ثُمَّ أَمَرَ بِرَجْمِهَا فَرُجِمَتْ ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا فَقَالَ لَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَا رَسُولَ اللَّهِ رَجَمْتَهَا ثُمَّ تُصَلِّي عَلَيْهَا . فَقَالَ " لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِمَتْ بَيْنَ سَبْعِينَ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَوَسِعَتْهُمْ وَهَلْ وَجَدْتَ شَيْئًا أَفْضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلَّهِ "

হাসান ইবনু আলী (রহঃ) ... ইমরান ইবনু হুসায়ন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, জুহায়না কবীলার জনৈক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যিনার কথা স্বীকার করল এবং বলল, আমি গর্ভবতী। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ মেয়েটির অভিভাবককে ডাকলেন এবং তাকে বললেন, তার সাথে ভাল ব্যবহার করবে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আমাকে তা অবহিত করবে। সে তাই করল, তখন তিনি মেয়েটির কাপড়-চোপড় ভাল করে শরীরে বাধতে বললেন এবং ‘রজম’-এর নির্দেশ দিলেন। তখন তাকে রজম করা হল। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালাতুল জানাযা আদায় করলেন। তখন উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! একে রজম করলেন আবার তার সালাতুল জানাযাও আদায় করলেন? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই মেয়েটি এমন তওবা করেছে যে, মদীনার সত্তর জনের মাঝেও যদি তা বণ্টন করে দেওয়া হয় তবু তা তাদের জন্য যথেষ্ট হবে। আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজের জান দিয়ে দিল, এর চেয়েও উত্তম কিছু তুমি পেয়েছ?(তিরমিজি ১৪৪১)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. আপনি আপনার বন্ধুকে গোনাহ থেকে বিরত রাখার নিয়তে তার সাথে ছিলেন যা অবশ্যই একটি সওয়াবের কাজ এবং প্রশংসনীয় কাজ। তবে নামাজ কাযা করার কারণে আপনি গোনহগার হবেন। বিধায় আপনাকে কাযা নামাজগুলি আদায় করতে হবে। এমতাবস্থায় আপনার জন্য উচিত ছিল নামাজের সময় আপনার বন্ধুকে সাথে নিয়ে মসজিদে যাওয়া ও নামাজ পড়া।

২,৩. গোনাহ থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে তার সাথে যাওয়া ঠিক হয়েছে। তবে আপনার জন্য করনীয় হলো আপনার বন্ধুকে বুঝানো যে, অবৈধ সম্পর্ক ও যেনার শাস্তি কত ভয়াবহ! স্থানীয় কোন আল্লাহওয়ালা আলেমের নিকট তাকে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন নছীহাত শুনাবেন। তাকে হারাম সম্পর্ক ত্যাগ করার জন্য বুঝাতে থাকবেন। আশা করি তার মাঝে পরিবর্তন আসবে ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...