আসসালামু আলাইকুম। নিচের হাদিসে বলা হয়েছে যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে তারা ঝাঁড়ফুক করে না বা করায় না এই বিষয়টা আমি বুঝতে পারছি না। আমি তো অসুস্থ হলে সুরা ফাতেহা পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে গায়ে হাত বুলিয়ে নিই। অথবা আমার মা যদি অসুস্থ হয় তাও সুরা পড়ে একি কাজ করি। আবার, অসুস্থ হলে আইয়ুব (আঃ) যে দুয়া পড়ছিলেন সেটাও পড়ি। মাঝে মাঝে বদনজরের রুকাইয়া করি। এইগুলো করা কি বিনা হিসাবে জান্নাতে যাওয়ার পথে বাঁধা হবে? দয়া করে বলবেন, এইগুলো করলে নিচের হাদিসের উল্লেখিত লোকগুলোর মাঝে কি থাকা যাবে না।
হাদিসটি নিম্নরুপ,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, “আমার কাছে সকল উম্মত পেশ করা হল। আমি দেখলাম, কোন নবীর সাথে কতিপয় (৩ থেকে ৭ জন অনুসারী) লোক রয়েছে। কোন নবীর সাথে এক অথবা দুইজন লোক রয়েছে। কোন নবীকে দেখলাম তার সাথে কেউ নেই। ইতিমধ্যে বিরাট একটি জামাআত আমার সামনে পেশ করা হল। আমি মনে করলাম, এটিই আমার উম্মত। কিন্তু আমাকে বলা হল যে, এটি হল মূসা ও তাঁর উম্মতের জামাআত। কিন্তু আপনি অন্য দিগন্তে তাকান। অতঃপর তাকাতেই আরও একটি বিরাট জামাআত দেখতে পেলাম। আমাকে বলা হল যে, এটি হল আপনার উম্মত। আর তাদের সঙ্গে রয়েছে এমন ৭০ হাজার লোক, যারা বিনা হিসাব ও আযাবে বেহেস্ত প্রবেশ করবে।”
এ কথা বলে তিনি উঠে নিজ বাসায় প্রবেশ করলেন। এদিকে লোকেরা ঐ বেহেস্তী লোকদের ব্যাপারে বিভিন্ন আলোচনা শুরু করে দিল, যারা বিনা হিসাব ও আযাবে বেহেস্ত প্রবেশ করবে। কেউ কেউ বলল, ‘সম্ভবতঃ ঐ লোকেরা হল তারা, যারা আল্লাহর রসুল (ﷺ)-এর সাহাবা। কিছু লোক বলল, বরং সম্ভবতঃ ওরা হল তারা, যারা ইসলামে জন্মগ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি। আরো অনেকে অনেক কিছু বলল। কিছু পরে আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাদের নিকট বের হয়ে এসে বললেন, “তোমরা কি ব্যাপারে আলোচনা করছ?” তারা ব্যাপার খুলে বললে তিনি বললেন, “ওরা হল তারা, যারা ঝাড়ফুঁক করে না, ঝাড়ফুঁক করায় না এবং কোন জিনিসকে অশুভ লক্ষণ মনে করে না, বরং তারা কেবল আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখে।”
এ কথা শুনে উক্কাশাহ ইবনে মিহসান উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন যে, (হে আল্লাহর রসূল!) আপনি আমার জন্য দুআ করুন, যেন আল্লাহ আমাকে তাদের দলভুক্ত করে দেন!” তিনি বললেন, “তুমি তাদের মধ্যে একজন।” অতঃপর আর এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আপনি আমার জন্যও দুআ করুন, যেন আল্লাহ আমাকেও তাদের দলভুক্ত করে দেন। তিনি বললেন, “উক্কাশাহ (এ ব্যাপারে) তোমার অগ্রগমন করেছে।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৭০৫, ৩৪১০; তিরমিজি, হাদিস : ২৪৪৬)