بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
আল্লাহ তাআলা সন্তানকে আদেশ করেছেন
সে যেন মা-বাবার সাথে ভাল ব্যবহার করে।
সুরায়ে আনকাবূতে
এসেছ,
وَوَصَّيْنَا
الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا
অর্থ: আমি মানুষকে মাতা-পিতার সাথে উত্তম ব্যবহার করার আদেশ করেছি। (২৯ : ৮)
অন্য এক আয়াতে
এসেছে,
وَقَضَىٰ
رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ
إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل
لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা
আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো
না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায়
বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে
ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (বনী ইসরাঈল:
২৩)
এক. তোমরা একমাত্র
তারই ইবাদত করবে, দুই. মাতা-পিতার সাথে
সদ্ব্যবহার করবে।
এ আয়াতে এক
আল্লাহর ইবাদত তথা তাওহীদের পরই বাবা-মা’র সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ করা হয়েছে। এ থেকে
বোঝা যায়, আল্লাহ পাকের কাছে বাবা-মা’র সাথে সদ্ব্যবহারের
গুরুত্ব কত বেশি।
ফাওয়ায়েদে
উসমানীতে শাইখুল হিন্দ রাহ. ‘সদ্ব্যবহার’-এর ব্যাখ্যায় লিখেছেন ‘মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহারের
অর্থ হল,
তাঁরা যতদিন বেঁচে থাকেন ততদিন নিজের জান-মাল দিয়ে তাদের সেবা
ও খেদমত করা এবং অন্তরে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা পোষণ করা। আর তাঁদের মৃত্যুর পর
তাদের জানাযা পড়া। দুআ করা, ইস্তেগফার করা, তাঁরা কোনো ওসিয়ত করে গেলে তা সামর্থ্যানুযায়ী পুরা করা। তাদের
বন্ধু-বান্ধবকে সম্মান করা, তাদের সাথেও সুসম্পর্ক
বজায় রাখা। তাদের নিকটাত্মীয়দের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা ইত্যাদি’ -পৃ.
৩৭৭
বিখ্যাত তাবেয়ী
সায়ীদ ইবনুল মুসায়্যিব রাহ. বলেন, ‘মাতা-পিতার সাথে এমনভাবে কথা বল, যেমন অপরাধী গোলাম তারা বদ মেযাজী মনিবের সাথে বলে’।
সুতরাং বাবা-মা’র
সাথে কখনো রেগে কথা বলা যাবে না, ধমক দিয়ে কথা বলা
যাবে না। তাদের সাথে কথা বলতে হবে নম্রভাবে, কোমল ভাষায়। আর তাদের জন্য দুআ করতে হবে-
رَّبِّ
ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّیٰنِیْ صَغِیْرًا
এ দুআর অর্থ
এই যে,
আমি যখন দুর্বল শিশু ছিলাম তখন তারা আমার জন্য কত কষ্ট করেছেন।
আমার একটু আরামের জন্য, আমার ভালোভাবে বড়
হওয়ার জন্য কত ব্যবস্থা করেছেন। সব ধরনের অসুখ-বিসুখ বিপদাপদ থেকে আমাকে রক্ষা করার
চেষ্টা করেছেন, নিজেদের আরাম-আয়েশের কোনো পরোয়া করেননি।
আজ যখন তারা বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে পড়েছেন আমি-আমার সামর্থ্যানুযায়ী তাদের খেদমত করলেও
তাদের পুরো হক আদায় হবে না।
কাজেই হে আল্লাহ!
আমি আপনার আদেশ অনুসারে সাধ্যমত তাদের সেবা করছি, এরপর আপনার কাছে আবেদন করছি, আমার বাবা-মা যতদিন
বেঁচে থাকেন এবং যখন তাঁরা দুনিয়া থেকে বিদায় নেন তখনও তাঁদের উপর আপনার রহমতের বৃষ্টি
বর্ষণ করুন। -ফাতওয়ায়ে উসমানী পৃ. ৩৭৭
কুরআন আমাদেরকে
কত সুন্দরভাবে বাবা-মা’র হক আদায়ের শিক্ষা দিয়েছে। কুরআনের শিক্ষাই শ্রেষ্ঠ শিক্ষা।
সুতরাং আমরা কুরআনের শিক্ষা অনুসরণ করব এবং বাবা-মা’র সুসন্তান হব।
★প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনি ভাই/বোন!
মা বাবার সর্বদা খেতমত করার
সর্বাত্নক চেষ্টা করতে হবে বিশেষ করে তাদের বার্ধক্যের সময়। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে
সাধারণত ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেই অনেকে বার্ধক্যে পৌছানোর কথা বলে থাকেন। আবার কেউ কেউ
বলেন যে, ৫৫/৬০ বছর হলো বার্ধক্যের সময়।