আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
কুরআনে সূরা বানী ইসরাইলের ২৩ নাম্বার আয়াতেবলা হয়েছে---

 এক জন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে (বিরক্তিসূচক শব্দ) ‘উঃ’ বলো না

এখানে বার্ধক্য বলতে কেমন বয়স বুঝায়? বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে?

1 Answer

0 votes
by (57,180 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

আল্লাহ তাআলা সন্তানকে আদেশ করেছেন সে যেন মা-বাবার সাথে ভাল ব্যবহার করে।

সুরায়ে আনকাবূতে এসেছ,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا

অর্থ: আমি মানুষকে মাতা-পিতার সাথে উত্তম ব্যবহার করার আদেশ করেছি। (২৯ : ৮)

অন্য এক আয়াতে এসেছে,

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (বনী ইসরাঈল: ২৩)

এক. তোমরা একমাত্র তারই ইবাদত করবে, দুই. মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে।

এ আয়াতে এক আল্লাহর ইবাদত তথা তাওহীদের পরই বাবা-মা’র সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ করা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ পাকের কাছে বাবা-মা’র সাথে সদ্ব্যবহারের গুরুত্ব কত বেশি।

ফাওয়ায়েদে উসমানীতে শাইখুল হিন্দ রাহ. ‘সদ্ব্যবহার’-এর ব্যাখ্যায় লিখেছেন ‘মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহারের অর্থ হল, তাঁরা যতদিন বেঁচে থাকেন ততদিন নিজের জান-মাল দিয়ে তাদের সেবা ও খেদমত করা এবং অন্তরে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা পোষণ করা। আর তাঁদের মৃত্যুর পর তাদের জানাযা পড়া। দুআ করা, ইস্তেগফার করা, তাঁরা কোনো ওসিয়ত করে গেলে তা সামর্থ্যানুযায়ী পুরা করা। তাদের বন্ধু-বান্ধবকে সম্মান করা, তাদের সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখা। তাদের নিকটাত্মীয়দের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা ইত্যাদি’ -পৃ. ৩৭৭

বিখ্যাত তাবেয়ী সায়ীদ ইবনুল মুসায়্যিব রাহ. বলেন, ‘মাতা-পিতার সাথে এমনভাবে কথা বল, যেমন অপরাধী গোলাম তারা বদ মেযাজী মনিবের সাথে বলে’।

সুতরাং বাবা-মা’র সাথে কখনো রেগে কথা বলা যাবে না, ধমক দিয়ে কথা বলা যাবে না। তাদের সাথে কথা বলতে হবে নম্রভাবে, কোমল ভাষায়। আর তাদের জন্য দুআ করতে হবে-

رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّیٰنِیْ صَغِیْرًا

এ দুআর অর্থ এই যে, আমি যখন দুর্বল শিশু ছিলাম তখন তারা আমার জন্য কত কষ্ট করেছেন। আমার একটু আরামের জন্য, আমার ভালোভাবে বড় হওয়ার জন্য কত ব্যবস্থা করেছেন। সব ধরনের অসুখ-বিসুখ বিপদাপদ থেকে আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন, নিজেদের আরাম-আয়েশের কোনো পরোয়া করেননি। আজ যখন তারা বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে পড়েছেন আমি-আমার সামর্থ্যানুযায়ী তাদের খেদমত করলেও তাদের পুরো হক আদায় হবে না।

কাজেই হে আল্লাহ! আমি আপনার আদেশ অনুসারে সাধ্যমত তাদের সেবা করছি, এরপর আপনার কাছে আবেদন করছি, আমার বাবা-মা যতদিন বেঁচে থাকেন এবং যখন তাঁরা দুনিয়া থেকে বিদায় নেন তখনও তাঁদের উপর আপনার রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করুন। -ফাতওয়ায়ে উসমানী পৃ. ৩৭৭

কুরআন আমাদেরকে কত সুন্দরভাবে বাবা-মা’র হক আদায়ের শিক্ষা দিয়েছে। কুরআনের শিক্ষাই শ্রেষ্ঠ শিক্ষা। সুতরাং আমরা কুরআনের শিক্ষা অনুসরণ করব এবং বাবা-মা’র সুসন্তান হব।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

মা বাবার সর্বদা খেতমত করার সর্বাত্নক চেষ্টা করতে হবে বিশেষ করে তাদের বার্ধক্যের সময়। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণত ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেই অনেকে বার্ধক্যে পৌছানোর কথা বলে থাকেন। আবার কেউ কেউ বলেন যে, ৫৫/৬০ বছর হলো বার্ধক্যের সময়।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...