আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
208 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
মেয়েরা দুরে কোথাও মারহাম ছাড়া পড়া শুনার জন্য যেতে পারবে?হোস্টেলে থেকে পড়া শুনা করতে পারবে?

কোন প্রতিবেশি যদি খারাপ আচরন করে..এবং বার বার করতে থাকে। তার কাজে অতিষ্ঠ হয়ে যদি তাকে কিছু জিজ্ঞে করার পর সে উল্টা রাগারাগি করে ঝগড়া করে তখন তার সাথে যদি আমিও ঝগড়া করি তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?তার কাছে কি আমার ক্ষমা চাইতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/19148/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

*খাওয়াতিন কে লিয়ে জাদিদ মাসাঈল;৬৭

এখানে যেই কথা এসেছে, সেখানে উল্লেখ রয়েছে উচিত হবেনা, উচিত নয়, এমন বাক্য। নাজায়েজ বলা হয়নি।

মহিলা হোস্টেলে যদি পূর্ণ নিরাপত্তা থাকে, সেক্ষেত্রে কোন বাধা নেই (উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ১৮০/২৩)।

*মহিলার সামনে মহিলার পর্দা নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। মহিলা কাফের হলে তার সামনে হাত ও চেহারা ছাড়া অন্যান্য অঙ্গ খোলা বৈধ নয়। যেমন, কোন নোংরা ব্যভিচারী মেয়ের সামনেও নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করা উচিৎ নয়। অনুরূপ এমন কোন মহিলার সামনেও দেহসৌষ্ঠব খোলা নিষিদ্ধ; যে তার কোন বন্ধু বা স্বামীর নিকট অন্য মহিলার রূপচর্চা করে বলে জানা যায় বা আশঙ্কা হয়। এমন মহিলার সাথে মুসলিম মহিলার সখীত্ব বা বন্ধুত্বও বৈধ নয়। (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৮৪১)

لا یحل للمسلمۃ أن تنکشف بین یدي یہودیۃ أو نصرانیۃ أو مشرکۃ إلا أن تکون أمۃ لہا۔ (شامي ۹؍۵۳۴ زکریا)

কোনো মুসলিমা মহিলার জন্য অমুসলিম মহিলার সামনে বেপর্দা হওয়া জায়েয নেই।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!

১. সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  পর্দা ও শরীয়তের যাবতীয় বিধান মেনে ফিতনার আশংকা না থাকার শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলে থেকে (মাহরাম ছাড়া, বান্ধবীদের সাথে) মহিলাদের জন্য  দ্বীনী/ দুনিয়াবি শিক্ষা গ্রহণ করা জায়েজ হবে। তাদের ইজ্জত আব্রুর হেফাজতের ক্ষেত্রে যেনো কোনো সমস্যা না হয়। সেদিকে কর্তৃপক্ষ সহ সকলের পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে। 

২. মন্দ কথা বা কাউকে গালি দেওয়া গোনাহের কাজ। যদি কেউ একান্তই ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় কাউকে গালি দেয় বা মন্দ কথার দ্বারা কষ্ট দেয়; তবে তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই ব্যক্তির জন্য এভাবে দোয়া করতে বলেছেন- ‘হে আল্লাহ! আমি যাকে কষ্ট দিয়েছি, সে কষ্ট তার আত্মশুদ্ধির উপায় এবং তার জন্য রহমতে পরিণত করুন।’ হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-

اللَّهُمَّ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَيُّ الْمُسْلِمِينَ لَعَنْتُهُ أَوْ سَبَبْتُهُ فَاجْعَلْهُ لَهُ زَكَاةً وَأَجْرًا

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তো একজন মানুষ মাত্র। সুতরাং আমি কোনো মুসলিমকে গালি বা অভিশাপ দিয়ে থাকলে সেটাকে তুমি তার জন্য (গোনাহ থেকে) পবিত্র করার মাধ্যম বানিয়ে দাও এবং তাকে তার (উত্তম) বিনিময় দান কর।’ (বুখারী-৬৩৬১)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ দোয়া করতে শুনেছেন-

اللَّهُمَّ فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ سَبَبْتُهُ فَاجْعَلْ ذَلِكَ لَهُ قُرْبَةً إِلَيْكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! যদি আমি কোনো মুমিন ব্যক্তিকে খারাপ (মন্দ কথা) বলে থাকি, তবে আপনি সেটাকে কেয়ামাতের দিন তার জন্য আপনার নৈকট্য অর্জনের উপায় বানিয়ে দিন।’ (মুসলিম-২৬০১)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সব সময় এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়া। কেননা ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেকেই মানুষকে মন্দ বা খারাপ কথা বলে থাকেন। আর এ কথাগুলোর বিনিময় যেন ওই ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য পেয়ে যান। পাশাপাশি নিজের মন্দ কথার গোনাহ থেকেও মুক্তি পান।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...