ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কোনো বাবা যদি তার মৃত্যুর পূর্বে পূর্ণ সম্পত্তি তার মেয়ের নামে দিয়ে যায়, তাহলে মেয়ে যদিও মালিক হয়ে যাবে, তবে তার অন্যান্য ওয়ারিছদের বঞ্চিত করার কারণে তার অবশ্যই গোনাহ হবে।
(২)
নিতে তো পারবেন।তবে এটা কখনো উচিৎ হবে না।মনকে বড় করুন।তাকে ক্ষমা করে দিন।এটাই নববী সুন্নাহ।
(৩)
জরুরতের মুহূর্তে রিয়ার অজুহাতে আওয়াজ না তুলা, এটা শয়তানের ওয়াসওয়াসা।সুতরাং আপনি আওয়াজ তুলবেন।উচ্ছস্বরে নামাযের কথা বলবেন। দেখবেন,বাস থামানোর দরুণ আরো অনেকেই নামায পড়ছেন।তখন আপনি নিজের নামাযেরও সওয়াব পাবেন।এবং অন্যদের নামাযেরও সওয়াব পাবেন।
যানবাহনে নামায পড়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/573
(৪)
জ্বী, হজ্বে মুখ খোলা রাখতে হয়। তবে পরপুরুষ সামনে চলে আসলে পর্দা করতে হবে। মুখকে কিছু দ্বারা ঢেকে রাখতে হবে।
হযরত আয়েশা রা. বলেন, ইহরামের হালতে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তো আমরা আমাদের চাদর মাথার সামনে ঝুলিয়ে দিতাম। চলে যাওয়ার পর সরিয়ে ফেলতাম। (সুনানে আবু দাউদ)
এরপর মুখে কাপড় না লাগানোর বিধান তো শুধু ইহরামের হালতে প্রযোজ্য। উমরায় খুব বেশি হলে এক দুই দিন এবং হজ্বে তিন চার দিন। (তবে যদি কেউ ইফরাদ বা কিরানের নিয়তে ইহরাম বাঁধে তার বিষয় ভিন্ন) এই দিনগুলো ছাড়া যারা বেপর্দা ঘুরাফেরা করে তাদের তো ইহরামেরও অজুহাত নেই।
তাছাড়া মদীনা মুনাওয়ারার সফরে তো ইহরামের প্রশ্ন নেই। এই সফরে এবং মদীনা মুনাওয়ারায় অবস্থানের দিনগুলোতে মুখ খুলে রাখা এবং সকল গায়রে মাহরামকে মাহরাম মনে করা অবশ্যই অজ্ঞতার পরিচায়ক এবং অযথা গুনাহগার হওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। এই মোবারক সফরের পূর্ণ বরকত লাভের জন্য সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। (কিতাবুল হজ্ব, মাওলানা আশেকে ইলাহী বুলন্দশহরী পৃ. ২৮-২৯)
(৫)
হজ বা ওমরাহ পালনকালীন মাথা মুন্ডনকে ওয়াজিব করে দেয়া হয়েছে। পুরুষের জন্য মাথা মুণ্ডন বা ছাঁটান উভয়টি জায়েজ, আর নারীর ক্ষেত্রে শুধু ছাঁটান জায়েজ। আর যার মাথায় চুল নেই সে শুধু ব্লেড বা চুল কাটার মেশিন পুরো মাথায় ঘুরিয়ে নেওয়াই যথেষ্ট এবং তা ওয়াজিব। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/১৪৯)
(৬)
ঢিলেঢালা পোষাক দ্বারা সতরকে ঢেকে রাখাই নববী সুন্নাহ। যেই কাপড় শারিরিক গঠনকে ঢেকে রাখতে পারে না, তা দ্বারা সতর ঢেকে রাখা যথেষ্ট হবে না।পুরুষের বেলায় হোক বা নারীর বেলায়।
(৭)
দেয়া জায়েয হলেও ক্ষমা করে দেয়া সর্বোত্তম।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/19877