আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (26 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম।
হুজুর,

দয়া করে আরো একবার ভালোভাবে পড়ার অনুরোধ করছি।

কিছু মনে করবেন না।
তালাকের ওয়াসওয়াসা নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
১★এক বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম। বন্ধু জিগ্গাসা করলো এই অফিস ঝাড়ু দেই কে?
আমি বললাম আমি নিজেই দিই, অন্য কারো প্রয়োজন নেই।
যখন "প্রয়োজন নেই"উচ্চারণ করি তখন হঠাৎ মনে হলো আমি আমার ওয়াইফ কে বলছি "তোমার প্রয়োজন নেই"।
তখন মনে চলে আসে তোমাকে তালাক দিলাম। প্রকৃতভাবে আমার ওয়াইফ কে তালাক দেবার কোন ইচ্ছা আমার নাই। মনের এসব চিন্তা আমি কন্টোল করতে পারছি না। একটার পর একটা আসতেই আছে। ওয়াইফ এর সাথে ও ঠিক মত কথা বলতে ভাল লাগে না। ভয় হচ্ছে যেনা হয়ে যাবে কিনা!
এজন্য কি তালাক হয়ে যাবে ?

২★যদি কেউ আনমনা হয়ে হাতের আংগুল দিয়ে লেখে
"এভাবে তালাক " পর্যন্ত লিখে থেমে যায়।
(কলম ছাড়া জাস্ট হাতের আংগুল ঘসে)। মনের ভিতর ছিল "এভাবে তালাক পতিত হয় না "। সেটায় নিজের অজান্তে লেখার মত করা হয়ে গেছে।

এজন্য কি তালাক হবে?
আশা করি এ থেকে মুক্তি পাবার কোন উপায় বলবেন।
আমি দুঃখিত দুইবার একই প্রশ্ন করার জন্য। দয়া করে রাগ করবেন না। নিজেকে খুব অসহায় ফিল করছি গত কয়েক মাস। আমার রিদয় তাদের সাথে থাকতে চাই কিন্তুু আমার মন সবসময় বলে তালাক দিলাম, তালাক দিলাম। এ কষ্ট আমার কুরে কুরে খাচ্ছে।প্রতিনিয়ত মনে হচ্ছে আমি মনে হয় গুনাহ করছি। তালাক মনে হয় হয়ে গেছে এমন ফিল করছি। উচ্চারণ না করেও মনে হয় তালাক উচ্চারণ করলাম। আশা করি আমাকে একটা সহজ সমাধান দিবেন। আল্লাহ আপনার ভাল করুক।
জাযাকাল্লাহু খইরান।

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ:  
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তি ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলাটের দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাক গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।
(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)
সর্বসম্মতিক্রমে তালাকের জন্য নিজের ইচ্ছা বা দৃঢ় মনোভাব থাকা শর্ত। অর্থাৎ এমন শব্দ উচ্ছারণ করা শর্ত যাতে নিজের ইচ্ছার কথা প্রতিফলিত হয়।যদি তালাকের নিয়ত না থাকে, তাহলে তালাক পতিত হবে না।
অন্তরের প্ররোচিকা বা অন্তরের প্ররোচিকা দ্বারা তালাক হবে না।কেননা এখানেতো তালাক শব্দের অর্থকে উদ্দেশ্য নেয়া হচ্ছে না।বরং শিক্ষা বা কাহিনি বর্ণনার উদ্দেশ্যে তালাক শব্দ উচ্ছারণ করা হয়েছে। (আল ফিকহুল ইসলামি ওয়া আদিল্লাতুহু-৭/৩৬৮)

لو كرر مسائل الطلاق بحضرة زوجته ويقول: أنت طالق ولا ينوى طلاقا لا تطلق، (فتح القدير، كتاب الطلاق، باب ايقاع الطلاق-4/4)
যদি স্ত্রীর উপস্থিতিতে তালাকের মাস'আলা মাসাঈলকে বারংবার বলা হয়, যেমন স্বামী বলল, তুমি তালাক,এবং এমতাবস্থায় স্ত্রীকের তালাকের উদ্দেশ্য নেই, তাহলে স্ত্রী তালাক হবে না।(ফাতহুল কাদির-৪/৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার প্রশ্নকে তিনবার পড়েছি, আপনার বিবরণ পড়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌছেছি, আপনি ওয়াসওয়াসার রোগী।সুতরাং আপনার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।তালাক পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...