আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। এই এক বিষয়ে অন্তরে ভয় ও সংকোচতা কাজ করছে। আমি দ্বীনের বুঝ পাই অনার্স ফোর্থ ইয়ারে।  সব বিষয়ে সঠিক জ্ঞান ছিলো না তাই ধীরে ধীরে নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি। যাইহোক, আমি বর্তমানে মাস্টার্সে ভর্তি আছি। ভর্তির সময় মাথায় ছিলো না যে, ভর্তি না হই বা কেনো হবো বা গুনাহ হচ্ছে কি না? ভর্তির পর মাথায় চিন্তাগুলো ভর করেছে আর তা অতিরিক্ত মাত্রায়। কারণ সহশিক্ষা হারাম এই বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান ছিল না। আমার এই পড়াটা তো তেমন প্রয়োজনীয় না। আর আমি কোনো রিজন খুঁজে পাচ্ছি না যে আমি কেনো পড়ছি?  আমি দ্বীনের কোনো নিয়ত বা উদ্দ্যেশ্য খুঁঁজে পাচ্ছি না যে, আমি কেনো পড়ছি? অনেক বোন তাদের প্রতিকূল অবস্থার কারণে বাধ্য হয়ে পড়ছে বা অনেকে অনেক হিম্মতওয়ালা, তাদের ঈমানের লেভেল অনেক হাই যে তারা সহশিক্ষা  ছেড়ে দিচ্ছে।
আমার অবস্থা তো প্রতিকূল না বা কেউ আমাকে বাধ্য করছে না পড়তে আর মাস্টার্স পড়ার প্রয়োজন আমি খুঁজে পাচ্ছি না। আমার মনে হচ্ছে আমি পড়া কনটিনিউ করবো এই নিয়তের কারণে আমি আল্লাহকে নারাজ করে ফেলছি, গুনাহগার হচ্ছি এমনকি কিছু আমল থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি। এসব চিন্তায় আমি বেশ মানসিক অশান্তিতে ভুগছি।

দ্বিতীয়ত,  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স কোর্সে 'টার্ম পেপার' নামে একটা এসাইনমেন্ট থাকে এটার জন্য আমাকে  বেশ কিছু পেপার প্রিন্ট করতে হবে যার জন্য কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে করতে হবে।  শুধু এই কাজ না যেকেউ তো যেকোনো ভর্তির আবেদন বা ফর্ম ফিল আপ বা যেকোনো কাজের জন্য কম্পিউটারের দোকানে যায় আর সেই লোক তো পুরুষই হয় যে কাজ গুলো করে দেয়। উনার সাথে তো  বলতে হবে,  নরম কন্ঠে না বললেও কন্ঠ কর্কশ তো হয় না। এইধরণের কাজের জন্য কি গুনাহগার হবো?
আর আমাকে বলবেন প্লিজ,  আমার কি করা উচিত? আমি কি পড়া কনটিনিউ করবো না বাদ দিব?  তেমন রেগুলার ক্লাস বা  উপস্থিত হতে হয় না কলেজে।  জাস্ট এক্সামের সময় এক্সাম দিতে হয়। তাই, যদি কনটিনিউ করি তাহলে আমার নিয়ত কি হবে? আর যদি কনটিনিউ করাটা যদি আল্লাহর অবাধ্যতার মধ্যে পড়ে তাহলে বাদ দিব ইন শা আল্লাহ।  আমাকে সঠিক পরামর্শ দিন প্লিজ

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/30426/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;
,
সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এ শর্তাবলি পুরোপুরি ভাবে মেনে আপনি শুধু এক্সামের সময় এক্সাম দিবেন।
নিয়মিত ক্লাসে যাবেননা।
,
(তারপরেও এখানে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া নিজের পর্দার জন্য হুমকি মনে করেন,যথেষ্ট ফিতনার কারন মনে করে,তাহলে বাবা মার অনুমতি সাপেক্ষে পড়াশোনা বাদ দিতে পারেন।)

আপনি লেখাপড়ার নিয়ত সহীহ করবেন।
এই ভাবে নিয়ত করবেন যে আমি শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে লেখাপড়া করছি।
এটি ব্যাপক অর্থ বিশিষ্ট বাক্য। 
আপনি উক্ত নিয়ত মাথায় রেখে পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন,এতে পরবর্তীতে যদি দিকে দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমত না করতে পারে, তাতে সমস্যা হবেনা।

আপাতত এতটুকু খেদমত তো পরবর্তী জীবনে হবেই,তাহা হলো নিজের সন্তানদেরকে যথেষ্ট পরিমাণ শিক্ষা দেয়া।
এটিই যথেষ্ট, এতেও মুসলিমের খেদমত হলো।

কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে যেনো একাকিত্ব না হয়,সেটি খেয়াল রাখবেন।
প্রয়োজনে আরেকজন বান্ধবীর সাথে যাবেন।
সব চেয়ে ভালো হয়,কোনো মাহরাম পুরুষ এর মাধ্যমে কম্পিউটার দোকানের সব কাজ গুলো সম্পন্ন করা।

কিন্তু সেটি সম্ভব না হলে আপনি নিজেও যেতে পারবেন,কম কথা বলবেন।
অপ্রয়োজনীয় কথা বলবেননা।
আওয়াজ নরম না করে একটু উঁচু আওয়াজ দিবেন,যাতে তেমম নরম কন্ঠ না হয়ে খানিকটা শক্ত হয়।
চেষ্টা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...