আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
252 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (106 points)
১।কোনো মৃত ব্যক্তির কবর জিয়ারতের সময় তার জন্য ১০০০ বার দরূদ পড়ে দিতে চাইলে শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তির জন্য নিয়ত করে পড়তে হবে নাকি করবস্থানের সকল কবরবাসীর জন্য নিয়ত করে পড়তে হবে?


২। মৃত ব্যক্তির সওয়াবের জন্য কী কী করা যায়?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

ঈসালে সওয়াব’ ফারসী শব্দ। আরবীতে হবে ‘ঈসালুস সাওয়াব’ (তবে এ ক্ষেত্রে আরবীতে অন্য শব্দ বেশি ব্যবহৃত হয় যেমন ‘ইহদাউস সাওয়াব’) এর আভিধানিক অর্থ হল সওয়াব পৌঁছানো। পরিভাষায় ঈসালে সওয়াব হল কোনো নেক আমল করে এর সওয়াব মৃত ব্যক্তিকে দান করা।

 

ঈসালে সওয়াবের কিছু পদ্ধতি

 

এক. হজ্বহজ্বের ঈসালে সওয়াব করা জায়েয। এটা একাধিক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কিছু হাদীস এই-

 

১. বুরায়দা রা. থেকে বর্ণিতআমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এক মহিলা এসে জিজ্ঞেস করল, ...আমার মা হজ্ব না করে ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্ব করতে পারবতিনি বললেন, (হাঁ)তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব কর। -সহীহ মুসলিমহাদীস ১১৪৯

بينا أنا جالس عند رسول الله صلى الله عليه وسلم، إذ أتته امرأة، فقالت: إني تصدقت على أمي بجارية، وإنها ماتت إنها لم تحج قط، أفأحج عنها؟ قال: حجي عنها.

 

দুই. উমরাউমরা করেও ঈসালে সওয়াব করা জায়েয।

আবু রাযীন উকায়লী রা. থেকে বর্ণিততিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেনআল্লাহর রাসূল! আমার পিতা খুবই বৃদ্ধ। তিনি হজ্বউমরা এমনকি সফর করতেও সক্ষম নন। নবীজী বললেনতুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব ও উমরা করো। -সুনানে তিরমিযীহাদীস ৯৩০

عن أبي رزين العقيلي أنه أتى النبي صلى الله عليه وسلم، فقال : يا رسول الله، إن أبي شيخ كبير، لا يستطيع الحج والعمرة، ولا الظعن، قال : حج عن أبيك واعتمر.

এ হাদীস থেকে স্পষ্ট যেমাযূরের পক্ষ থেকে নায়েব হিসেবে উমরা করা জায়েয। সুতরাং নিজে উমরা করে মাইয়িতকে সওয়াব পৌঁছানোও জায়েয হবে। কারণ ‘নিয়াবতে’র চেয়ে ঈসালে সওয়াব হালকা।

 

তিন. কুরবানীবিভিন্ন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যেকুরবানীর ঈসালে সওয়াব করা জায়েয।

 

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিতরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর জন্য কালো পাকালো পেট ও কালো ভ্রু বিশিষ্ট দুম্বা আনার নির্দেশ দিলেন। আনা হলে তিনি আয়েশা রা.-কে বললেনএকটি ছুরি এনে পাথরে ঘষে ধারালো কর। তিনি তা-ই করলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছুরি হাতে নিয়ে দুম্বাকে শুইয়ে যবাহ করার জন্য প্রস্তুত হলেন এবং বললেন,

باسم الله، اللهم تقبل من محمد وآل محمد، ومن أمة محمد.

‘আল্লাহর নামে যবাহ করছি। হে আল্লাহ! আপনি তা কবুল করুন মুহাম্মদ ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে এবং তার উম্মতের পক্ষ থেকে।’ তারপর কুরবানী করলেন। -সহীহ মুসলিমহাদীস ১৯৬৭                                                                                     

 

চার. রোযারোযার সওয়াবরেসানি করা বৈধ।

 

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিতরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনকেউ রোযা জিম্মায় রেখে মারা গেলে তার অভিভাবক যেন তার পক্ষ থেকে রোযা রাখে। -সহীহ বুখারীহাদীস ১৯৫২

 

পাঁচ. নামাযইবনে কুদামা রাহ. (৬২০হি.) দুআইস্তিগফারহজ্ব ও রোযার ঈসালে সওয়াব সংক্রান্ত কিছু হাদীস উল্লেখ করে বলেন,

وهذه أحاديث صحاح، وفيها دلالة على انتفاع الميت بسائر القرب؛ لأن الصوم والحج والدعاء والاستغفار عبادات بدنية، وقد أوصل الله نفعها إلى الميت، فكذلك ما سواها.

 

এগুলো সহীহ হাদীস এবং এ থেকে বোঝা যায় যেসকল নেক আমল মাইয়িতের উপকারে আসবে। কারণ রোযাহজ্বদুআ ও ইস্তিগফার ইবাদাতে বাদানিয়া হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ এর কল্যাণ মৃত ব্যক্তিকে পৌঁছান। সুতরাং অন্যান্য নেক আমলের হুকুমও একই হবে। -আলমুগনী ৩/৫২১

 

ছয়. কুরআন তিলাওয়াত

মাকিল ইবনে ইয়াসার রা. থেকে বর্ণিতনবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতোমরা তোমাদের মাইয়িতের জন্য সূরা ইয়াসীন পাঠ কর। -সুনানে আবু দাউদহাদীস ৩১২১

 

সাত. যে কোনো নেক আমল

নেক আমলের জগৎ অনেক বিস্তৃত। এগুলো কোথাও ‘আলআমালুস সালিহ’র শিরোনামে বর্ণিত হয়েছেকোথাও ‘আলবির’র শিরোনামেকোথাও ‘আলহাসানা’র শিরোনামেকোথাও ‘আলখাইর’র শিরোনামে। কখনো বা বিশেষ শিরোনাম ছাড়া বর্ণিত হয়েছে। কুরআন-সুন্নাহয় যেসব নেক কাজ সুস্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর তালিকাও বেশ লম্বা।

(আংশিক কপি)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মৃত ব্যক্তির ঈসালে সওয়াবের নিয়ত করে পড়লেই হবে। আর যদি সকল কবরবাসীর ঈসালে সওয়াবের নিয়ত করে পড়েন তাহলে তাও হবে। তখন তারাও সওয়াব পেয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
ইসালুস সাওয়াব যিনি পাঠাবেন,তিনিও কি সাওয়াব পাবেন? দুয়া,সূরা,যিকির,দুরুদ সবকিছু কি পাঠানো যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...