আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
200 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (24 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম!

আমার কিছু প্রশ্ন আছে।

১. আমি একটি ব্যাবসা শুরু করতে চাচ্ছি। ব্যাবসা টা হলো আমি সফটওয়্যার দিয়ে ডিজাইন করবো, তারপর সেই ডিজাইন টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের উপর প্রিন্ট করে বিক্রি করবো। আমি যেই সফটওয়্যারটি দিয়ে ডিজাইন করবো সেই সফটওয়্যার টাকা দিয়ে কিনতে হয়। আমি যদি ১ মাসের জন্য সফটওয়্যারটি কিনি তাহলে আমাকে তারা ১ম ১৪ দিন ফ্রী ট্রায়াল ব্যাবহার করতে দিবে তারপর ১ মাস এর জন্য ডলার আমাকে ৩১.৪৯ ডলার দিতে হবে। আর যদি ১ বছরের জন্য কিনি তাহলে আমাকে প্রতি মাসে আমাকে ২০.৯৯ ডলার দিতে হবে। অথবা যদি এই সফটওয়ার এর মতো আরেকটা সফটওয়ার , যা থেকে এটার থেকে কম সুবিধা পাবো ওটার দাম মাসিক ৯.৯৯ ডলার। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমি ব্যাবসা করার জন্য আব্বুর কাছে ৯০০০০ হাজার টাকা নেই, আব্বু আমাকে এই টাকা ব্যাবসায়িক বা ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে খরচ করতে বলে। আমি ৩০০০০- ৪০০০০ টাকার মতো খরচ করে ফেলেছি কাজের জন্য + ব্যাবসার জন্য + নিজের জন্য। কিন্তু এখনও কোনো ব্যাবসা শুরু করতে পারি নাই। আব্বু জানে না আমি এত টাকা খরচ করে ফেলেছি। এখন আমি ডিজাইন করার জন্য যেই সফটওয়্যার কিনবো তা ৯.৯৯ ডলার বা ২০.৯৯ ডলার বা ৩৪ ডলার দিয়ে মাসিক সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। কিন্তু আমি আব্বু কে না জানিয়ে ৩০০০০- ৪০০০০ টাকার মতো ফেলেছি কিন্তু এখনও কোনো ব্যাবসা শুরু করতে পারি নাই, যা করতে যাই হালাল হারাম এর চিন্তা করতে আর করতে পারি না কারণ ১০০% হালাল ইনকাম করা অনেক কঠিন। তাই কাজ শিখসি টাকা দিয়ে কিন্তু হারাম এর জন্য কাজ করতে পারি নাই। এখন হালাল ভাবে এই ব্যাবসা টা করতে চাচ্ছি কিন্তু মাসিক সাবস্ক্রিপশন অনেক বেশি। আমি যদি এই সফটওয়্যার এর ক্র্যাক ভার্সন ব্যাবহার করে ডিজাইন করি তারপর সেই ডিজাইন বিক্রি করি বা সেই ডিজাইন টিশার্ট বা অন্য কোনো পণ্যের উপর বসিয়ে প্রিন্ট করে বিক্রি করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে?

 (১.২)এই কাজ টা কি আমার জন্য নাজায়েজ হবে?

(১.৩) আমি শুনেছি জেনুইন সফটওয়্যার কিনার সামর্থ না থাকলে ক্র্যাক ভার্সন ব্যাবহার করা যায়, কিন্তু আমার কাছে তো ৫০০০০-৬০০০০ এর মত টাকা আছে, এই জন্য কি আমি ওই সফটওয়্যার টি কিনার জন্য সামর্থবান?

 আমি অলরেডী অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছি আব্বু কে না জানিয়ে আর আমি মধ্যোবিত্ত পরিবারের সন্তান,  আর্থিকভাবে ধনী না যে অনেক টাকা খরচ করলে ও কোনো সমস্যা নাই।

২. আমি আমার ব্যাক্তিগত একটা মতামত জানাচ্ছি শায়েখ, যদি ১ , (১.২), (১.৩) এর উত্তর গুলো এমন হয় যে আমার ইনকাম হালাল হবে, না জায়েজ হবে না , ৪০০০- ৫০০০০ টাকা থাকার কারণে সামর্থবান হয়ে যাবো না তাহলে তো আমি ক্র্যাক ভার্সন ব্যাবহার করে ব্যাবসা করতে পারবো কিন্তু যদি এইভাবে ইনকাম করা আমার জন্য হারাম হয় তাহলে আমি প্রথমে ফ্রী ১৪ দিনের ট্রায়াল নিবো যদি ওরা দেয় তারপর ১৩ দিনের মধ্যে ইনকাম করার চেষ্টা করবো, যদি পারি আলহামদুলিল্লাহ, তাহলে ওই ইনকাম এর টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশন কিনবো তারপর ব্যাবসা চালিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। আর যদি ওরা ১৪ দিনের ফ্রী ট্রায়াল না দেয় তাহলে ক্র্যাক ভার্সন ব্যাবহার করবো তারপর তা দিয়ে ইনকাম হলে সাবস্ক্রিপশন নিবো ইনশাআল্লাহ। আর ইনকাম না হলে সাবস্ক্রিপশন নিবো না। বা আমি একাধিক ইমেইল আইডি ব্যাবহার করে কয়েক বার ফ্রী ট্রায়াল নিবো( যদি নেয়া যায় তাহলে)। তারপর যদি ইনকাম করতে পারি তাহলে আমি সাবস্ক্রিপশন নিবো ইনশাআল্লাহ। আর একাধিক ইমেইল আইডি দিয়ে ফ্রী ট্রায়াল না নেয়া গেলে তো কিছু করার নাই। আবার ওদের পলিসি তে একাধিক ইমেইল আইডি দিয়ে বারবার ফ্রী ট্রায়াল নেয়া নিষেধ ও থাকতে পারে। ওরা যদি বুঝতে পারে আমি একাধিক আইডি দিয়ে ফ্রী ট্রায়াল নিচ্ছি তাহলে হয়তো আমাকে ওরা আর ফ্রী ট্রায়াল দিবে না  এটা আমার ব্যাক্তিগত মতামত, আমার এই মতামত এর উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার মতামত আমাকে জানাইয়েন শায়েখ!

৩. আমি ফেসবুক মার্কেটিং এর কোর্স করেছি, আমি যার থেকে কোর্স করেছি সে আমাকে ভিডিও এডিট করার জন্য পেইড সফটওয়্যার দিয়েছে। সে ওই পেইড সফটওয়্যার কিনেছে নিজের কাজের জন্য, সে সফটওয়্যার কোম্পানির থেকে সফটওয়্যার কিনেছে  বা কোম্পানিকে মাসে মাসে বা বছরে বছরে পেমেন্ট করে। আর তার থেকে যারা কোর্স করে তাদের কে সে ওই সফটওয়্যার ফ্রী তে দেয়। এখন যদি আমি ওই সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিট করে আমার ব্যাবসায়িক কাজে ব্যাবহার করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? যেহেতু আমি সফটওয়্যার কিনছি না, কোর্স এর সাথে ফ্রী তে আমাকে দেয়া হইছে। আর আমি ওই সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিট করে আমার ব্যাবসায়িক যেই পেজ থাকবে তাতে ওই ভিডিও আপলোড করবো বা ওই সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও বানিয়ে তা দিয়ে ফেসবুক অ্যাডস দিবো আমার প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য। আমার এই ইনকাম কি হারাম হবে?
বি:দ্রঃ আমি এডোবি কোম্পানির সফটওয়্যার এর কথা বলছি, যেমন: এডোবি ইলাস্ট্রেটর, এডোবি ফটোশপ ইত্যাদি।

বি:দ্রঃ আমার  ইনকাম করা আমার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে অনেক জরুরি, যদি ও বাসায় থেকে আরো ২ বছর পড়াশুনা করে তারপর পড়াশুনার পাশাপাশি ব্যাবসা বা কোনো জব করতে বলছে। কিন্তু আমার নিজের জন্য ইনকাম অনেক জরুরি হয়ে পড়েছে। বাসা থেকে আমাকে পড়াশুনার খরচ দেয় কিন্তু আমার ব্যাক্তিগত অন্য প্রয়োজনে ইনকাম জরুরি হয়ে পড়েছে।

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
অন্যায় ভাবে কোনো কিছু ব্যবহার করা শরীয়তে জায়েজ নেই।
  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজতাবা)
সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)

★সকল প্রকার ক্র্যাক বা নকল ভার্সন হারাম নয়। হ্যা, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো সফটওয়্যার নকল করে তৈরী করা জায়েয হবে না। এবং ক্রয় বিক্রয়ও জায়েয হবে না। এমন সফটওয়্যার দ্বারা ইনকাম করাও জায়েয হবে না।

তবে যদি সফটওয়্যারের মূল্য এত বেশী হয়, যা জনসাধারণের নাগালের বাইরে, যেমন মাইক্রোসফট ইত্যাদি, তাহলে এমন সফটওয়্যার সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরাম শীতিলতার বিধান প্রয়োগ করে থাকেন।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/8014

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত সফটওয়্যার এর ক্র্যাক ভার্সন ব্যবহার করতে যেহেতু কর্তৃপক্ষ নিষেধ করে,আর এর মূল্য যেহেতু নাগালের ভিতরে, তাই এমন সফটওয়্যার এর ক্র্যাক ভার্সন এর সাহায্য নিয়ে কোনো কিছু বিক্রয় করা যাবেনা।
এটি কর্তৃপক্ষকে ধোকা দেওয়া হবে। 
তাই এতে ইনকামও হালাল হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}


(১.২)
হ্যাঁ নাজায়েজ হবে।

(১.৩)
হ্যাঁ আপনি আপনি ঐ সফটওয়্যার টি ক্রয়ের জন্য সামর্থবান।
আপনি নিজের সুবিধার্তে বছরের জন্য কিনবেন।

(০২)
আপনি প্রথমে ফ্রী ১৪ দিনের ট্রায়াল নিবেন, যদি ওরা দেয় তারপর ১৩ দিনের মধ্যে ইনকাম করার চেষ্টা করবেন, ঐ ইনকাম এর টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশন কিনবেন, তারপর ব্যাবসা চালিয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

এই পদ্ধতি অবলম্বন করা যাবে।

প্রশ্নে  উল্লেখিত অন্যান্য পদ্ধতি গুলো সঠিক হবেনা।

(০৩)
এতে আপনার ইনকাম হারাম হবেনা।

তবে এভাবে অন্যের পেইড সফটওয়্যার দিয়ে আরেকজনের এভাবে ইনকামকে যদি কর্তৃপক্ষ নিষেধ করে,তাহলে এভাবে অন্যের পেইড সফটওয়্যার দিয়ে আপনার জন্য ইনকাম জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...