আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

–1 vote
142 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (87 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
১/ নবজাতক এর নাম রাখার ক্ষেত্রে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ নাম এর অর্থ নাকি সল্ফে সলেহীন দের সাথে নাম মিলিয়ে রাখা?

২/ আমার পিতা মাতা আমার নাম সামিন ইয়াসার রেখেছেন। কিমতু নবিজি ইয়াসার রাখতে নিষেধ করেছেন আমার বয়স ২০।আমি কি করব?

৩/ কারো নাম উমর, আলি, উসমান, মুহাম্মাদ, খালিদ, হুরায়রা রাখলে কি সেই নাম এর শেষে "বিন" যুক্ত করে তার পিতার নাম রাখতে হবে. নাকি শুধু উমর, আলি বা খালিদ রাখা যাবে?

৪/ সুন্দর নাম এর অর্থ হলে কি কোনো বিশেষ ফজিলত পাওয়া যায়? নাকি পূর্ববর্তী দের সাথে মিলিয়ে রাখলে পাওয়া যায়?

জাজাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ح وحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي زَكَرِيَّا، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ

আবূ দারদা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন তোমাদেরকে, তোমাদের ও তোমাদের পিতাদের নাম ধরে ডাকা হবে। তাই তোমরা তোমাদের সুন্দর নামকরণ করো।
আহমাদ ২১৬৯৩, আবূ দাঊদ ৪৯৪৮, য‘ঈফ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ১২২৭, য‘ঈফুল জামি‘ ২০৩৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫৮১৮, শু‘আবুল ঈমান ৮৬৩৩, সুনানুদ্ দারিমী ২৬৯৪, হিলইয়াতুল আওলিয়া ৫/১৫২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৭৮৬।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হাদীসে নবীগনের নামে নামকরন করতে রাসুলুল্লাহ সাঃ নির্দেশ করেছেন।  
নেককার ও ঈমানদার মনীষীদের নামে নাম রাখা উত্তম। সাহাবি, তাবেইন ও তাবে তাবেইনসহ মুসলিম মনীষী, বুযুর্গানেদ্বীন দের নামে নাম রাখা যায়।
এক্ষেত্রে ফজিলত পাওয়া যাবে,ইনশাআল্লাহ। 

 এক হাদীসে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعِيدٍ الطَّالْقَانِيُّ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُهَاجِرِ الْأَنْصَارِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَقِيلُ ابْنُ شَبِيبٍ، عَنْ أَبِي وَهْبٍ الْجُشَمِيِّ، وَكَانَتْ لَهُ صُحْبَةٌ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: تَسَمَّوْا بِأَسْمَاءِ الْأَنْبِيَاءِ، وَأَحَبُّ الْأَسْمَاءِ إِلَى اللَّهِ عَبْدُ اللَّهِ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ، وَأَصْدَقُهَا حَارِثٌ، وَهَمَّامٌ، وَأَقْبَحُهَا حَرْبٌ وَمُرَّةُ صحيح،

আবূ ওয়াহব আল-জিশামী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা নবী-রাসূলগণের নামে নামকরণ করো। আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম হলো আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রাহমান। নামের মাঝে হারিস ও হাম্মাম হলো বিশ্বস্ত নাম এবং হারব ও মুররাহ হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট নাম।
(বুখারী,আবু দাউদ ৪৯৫০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নবজাতক এর নাম রাখার ক্ষেত্রে নবি রাসুলদের নামে নামকরন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। 
যদি সাহাবা,তাবেয়ী,তাবে তাবেয়ীন, সালফে সালেহিনদের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রাখা হয়, তাহলে তাদের অধিকাংশ দের নামের অর্থই যেহেতু ভালো।
তাই এক্ষেত্রে দুটি বিষয়ই পাওয়া যায়।
এক, ভালো ব্যাক্তিদের নামের সাথে মিলিয়ে নাম।
দুই, ভালো অর্থ বিশিষ্ট নাম।

এক্ষেত্রে নামের অর্থই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। 

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " «لَا تُسَمِّيَنَّ غُلَامَكَ يَسَارًا، وَلَا رَبَاحًا، وَلَا نَجِيحًا، وَلَا أَفْلَحَ، فَإِنَّكَ تَقُولُ: أَثَمَّ هُوَ؟ فَلَا يَكُونُ، فَيَقُولُ لَا» ". رَوَاهُ مُسْلِمٌ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُ، قَالَ: " «لَا تُسَمِّ غُلَامَكَ رَبَاحًا، وَلَا يَسَارًا وَلَا أَفْلَحَ وَلَا نَافِعًا» ".

সামুরাহ্ ইবনু জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি কখনো তোমাদের ‘‘গোলাম’’ (সন্তান)-এর নাম ‘ইয়াসার’, ‘রবাহ’, ‘নাজীহ’ ও ‘আফলাহ’ রেখ না। কেননা যখন তুমি তার নাম ধরে ডাকবে, আর সে উপস্থিত থাকবে না, তখন কেউ বলবে ‘‘নেই’’

মুসলিম-এর অপর বর্ণনায় রয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তুমি তোমার গোলামের নাম ‘রবাহ’, ‘ইয়াসার’, ‘আফলাহ’ কিংবা নাফি‘ নাম রেখ না।সহীহ : মুসলিম ১১-(২১৩৬), আহমাদ ২০২৪৪,

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি আপনার বয়স যতোই হোক,আপনি ইয়াসার নামটি পরিবর্তন করে অন্য কোনো ভালো নাম রেখে দিবেন।
সকলকে এই নতুন নামেই ডাকতে বলবেন।
পরিবারের লোকদের হাদীসটি দেখাবেন।

প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রেও যথাসম্ভব নতুন নামটি দেয়ার চেষ্টা করবেন।
নাম পরিবর্তন এর জন্য কোনো আকীকার প্রয়োজনীয়তা নেই।

(০৩)
শুধু উমর, আলি বা খালিদ রাখা যাবে।
"বিন" যুক্ত করতে হবেনা।

(০৪)
উভয় ক্ষেত্রেই ফজিলত পাওয়া যাবে,ইনশাআল্লাহ। 
তবে সুন্দর অর্থের পাশাপাশি নামটি যদি কোনো সাহাবির হয়,তাহলে অনেক ভালো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...